হিলারিতে ‘খুশি’ বাংলাদেশ, ট্রাম্প হলেও সমস্যা নেই

কে হচ্ছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী নেতা- হিলারি ক্লিনটন নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প? বাংলাদেশেও এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা মনে করেন আমিরেকার এ নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতি, দু’দিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি সংরক্ষণবাদী। তিনি প্রেসিডেন্ট হলে উন্মুক্ত বাণিজ্য নীতি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসবে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। তাই পরিচিত হিলারি ক্লিনটন হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হলেই সবচেয়ে বেশি খুশি হবে বাঙালিরা।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন। তার মতে, প্রেসিডেন্ট যিনিই হোন না কেন বাংলাদেশ-আমেরিকার সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কূনীতিক বলেন, ‘আমেরিকানরা নিজেদের স্বার্থে সব কাজ করে। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। কারণ, তাদের স্বার্থ আমরা পরিপূর্ণ করছি! সে কারণেই আমার মনে হয় না, ব্যক্তিবিশেষ কোনো সম্পর্ক আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে ধস নিয়ে আসবে।’
আমেরিকার এবারের নির্বাচন প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমেরিকার অনেক ইলেকশন দেখেছি। অনেক ইলেকশনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত থেকেছি। এমন কী ইলেকশন সেন্টারও পরিচালনা করেছি। তবে এবারের ইলেকশনটা খুব ইন্টারেস্টিং ও ঐতিহাসিক।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বললেন, ‘এবারের ইলেকশনে যথেষ্ট কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি ও ব্লেম-গেম হচ্ছে। কখনো পাওয়ারফুল কোনো প্রার্থীকে বলতে শুনিনি যে, আমি না জিতলে এই ইলেকশন মানবো না। বর্ণবাদ নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতেও দেখিনি। কিন্তু এবার হয়েছে।’
‘ট্রাম্পের কথাবার্তা হিটলারের মতো’ মন্তব্য করে আবদুল মোমেন বললেন, ‘হিটলার যেমন মনে করতেন- জার্মানির সব অনিষ্টের মূলে ইহুদিরা, তেমনি ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করছেন আমেরিকার সব অনিষ্টের মূলে অভিবাসীরা। হিটলার মনে করতেন, তিনি জার্মানিকে গ্রেট করবেন। তার মতো ট্রাম্পও মনে করছেন, তিনি আমেরিকাকে গ্রেট করবেন।’
এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, ‘হিটলার বলেছিলেন- তিনি ইহুদিদের আইডেন্টিফাই করে কার্ড দেবেন। তেমনি ট্রাম্প বলছেন- তিনি মুসলমানদের আইডেন্টিফাই করে কার্ড দেবেন। এমন কথা হিটলারের পরে আর শুনিনি। ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি মেক্সিকো সীমান্তে ওয়াল তৈরি করবেন, অভিবাসীদের বাণিজ্য বন্ধ করে দেবেন। এ ধরনের কথাও আগে শুনিনি।’
আবদুল মোমেন বলেন, ‘এই প্রথম দেখা গেলো, আমেরিকার একটা বড় পার্টি একজন নারীকে প্রেসিডেন্টশিয়াল প্রার্থী বানিয়েছে- এটাই একটা ইতিহাস। যদি হিলারি জেতেন তবে একাধিক ইতিহাস গড়ে ওঠবে। প্রথমত, তিনিই হবেন প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। দ্বিতীয়ত, স্বামী-স্ত্রী দু’জনই প্রেসিডেন্ট। বাপ-ছেলে প্রেসিডেন্ট হয়েছে তবে স্বামী-স্ত্রী এখনো হয়নি।’
হিলারি ও ট্রাম্প সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একদিকে হিলারি সবসময় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পৃক্তা ছিল না। ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। সারাজীবন নিজের জন্যই কাজ করেছেন।’
আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করে আসা আবদুল মোমেন বলেন, ‘সাধারণত, আমেরিকানরা মনে করে তাদের প্রেসিডেন্টশিয়াল প্রার্থী হবেন অত্যন্ত সৎ ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে তার উল্টোটিই। আমেরিকার লোকজন এবারের ইলেকশন নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধাবিভক্ত। হয়তো ইলেকশন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ট্রাম্প যে হিংসা-বিদ্বেষ তৈরি করে গেলেন তা অনেকদিন চলবে। ফলে আমেরিকার অভিবাসীদের অনেক দুর্গতি-ভোগান্তি আছে। তাছাড়া আমেরিকায় ফেয়ার ও ফ্রি ইলেকশনের যে সুনামটা ছিল তাও ক্ষুণ্ণ হলো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি আমেরিকার এবারের প্রেসিডেন্ট হবেন সৎ। জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন, শরণার্থী সমস্যা, ব্রেক্সিট, মধ্যপ্রচ্যের যুদ্ধ- এসব বিষয় হ্যান্ডেল করার মতো অভিজ্ঞ, পরিপক্ক লোকের দরকার। তাই এ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ববাসী।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে স্বৈরাচারী শাসক বললেন ট্রাম্প
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি ছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন