১০০০ টাকায় সুযোগ করে দেয় স্কুলের দারোয়ান
এক হাজার টাকার বিনিময়ে জুরাইন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৫ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের সুযোগ করে দিয়েছিল দারোয়ান স্বপন।
আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে স্বপন এসব কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে কদমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজু মিয়া। তবে মামলার ৯ দিন পার হলেও বাকি ৭ আসামির কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাজু মিয়া বলেন, মামলার পর পর ওই বিদ্যালয়ের দারোয়ান স্বপন গ্রেপ্তার হয়। গত শুক্রবার সে দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানার কাছে দোষ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনাও দেয়। আমি নিজে ওই জবানবন্দি পড়েছি এবং তদন্তের প্রয়োজনে নোটও নিয়েছি।
জবানবন্দিতে সে জানায় যে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় স্থানীয় পরিচিত শাওন ও তার কয়েক বন্ধু বিদ্যালয়ে আসে। সঙ্গে ওই মেয়েটি। আগে পড়াশুনা করতো, এখন বেকার বলে মেয়েটির পরিচয় দেয়। তারা আমাকে এক হাজার টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের একটা কক্ষের চাবি চায়। আমি টাকা নিই। তাদের কথামতো দ্বিতীয় তলার ৩ নম্বর কক্ষটি খুলে দেই। সেখানে মেয়েটিকে বসিয়ে রাখে। দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে আটকে রাখে। রাতে তারা বেশ কয়েকজন সে কক্ষে ঢুকে। মেয়েটিকে হয়তো ধর্ষণ করেছে। সকালে মেয়েটিকে নিয়ে তারা বের হয়ে যায়।
মামলার এজাহারসহ ভিকটিম ও পুলিশ জানায়, পুরান ঢাকার ওই কিশোরী মাঝে মধ্যে জুরাইনে তার মামার বাসায় আসতো। একদিন জুরাইনের একটি মার্কেটে জুতা কিনতে গেলে সেখানে কৌশলে মোবাইল নম্বরটি নেয় স্থানীয় শাওন। নিজেকে চামড়ার ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে মাদক বিক্রেতা শাওন তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর থেকে প্রায় সময় তাকে ঘুরতে যেতে বলে। না গেলে হুমকিও দেয়া হয়।
এরই মধ্যে গত ২৮শে এপ্রিল সকালে ওই কিশোরী তার মামার বাসায় যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে শাওন তাকে আটকায়। রিকশা থেকে নামিয়ে আরও কয়েকজন বন্ধুসহ মেয়েটিকে নিয়ে ওই স্কুলে যায়। সেখানে দারোয়ান স্বপনকে টাকা দিয়ে রাজি করিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। রাতে ওই কিশোরীকে খাবারও দেয়া হয়। শাওন ও তার ৭ বন্ধু মধ্যরাতে স্কুলের ওই কক্ষে ঢুকে। নিজেদের নাম বলে একে একে সবাই পরিচিতও হয়। তারা হলো-মুন্না, জলিল, মো. মিশাল, মো. মাসুদ, মো. সজীব ও তানজিল ওরফে তাঞ্জু। এরপর বলে যে, তারা তার সঙ্গে খারাপ কাজ করবে। তখন ওই কিশোরী চিৎকার করে উঠলে তারা তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে।
ঘটনার পরদিন স্থানীয় ক্লাব ও আওয়ামী লীগ অফিসে গিয়ে বিচার চায় ওই কিশোরী। কোনো সুরাহা না পেয়ে পরদিন থানায় মামলা করতে যায়। সমাধানের কথা বলে সেখান থেকে শাওনের এক আত্মীয় তাকে নিয়ে এক যুবলীগ নেত্রীর বাসায় দু’দিন রেখে সমাধানের চেষ্টা চালায়। অবশেষে গত ১লা মে কদমতলী থানায় কিশোরীটি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে।
এজাহারের এই বর্ণনার প্রথম ও শেষ দিকের বেশকিছু তথ্যের সঙ্গে মিলে গেছে স্বপনের কথা। কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার হয়নি বাকি ৭ আসামি। গ্রেপ্তারে একাধিক স্থানে বেশ কয়েকটি অভিযান চালানো হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও অধরাই রয়ে গেছে তারা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাজু মিয়া বলেন, আমরা অভিযান চালানোর আগেই সাংবাদিকরা আসামিদের বাড়িতে গিয়ে হাজির হচ্ছে। এতে তো তারা সতর্ক হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
-মানবজমিন
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন