১৪৬ জনের মৃত্যুঃ কানপুরের ট্রেন দুর্ঘটনা কি পাকিস্তানের নাশকতা? এবার জবাব দেবে ভারত?
গত নভেম্বরের ২০ তারিখে দুর্ঘটনায় পড়েছিল ইনদৌর-পটনা এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৪৬ জনের। জখমের সংখ্যা শ’খানেক ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু, এই ঘটনায় এবার নাম জড়াল পাকিস্তান সরকারের।
পিছন থেকে ছুরি মারাটা পাকিস্তানের নীতি। অতীতেও ভারতকে এমনভাবে রক্তাক্ত করেছে ইসলামাবাদ। কিন্তু, ভারত সরকার সবসময়ই সামনে থেকে ঢুকে পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছে। তারপরও যে পাকিস্তানের কোনও শিক্ষা হয়নি তা ‘কানপুর ট্রেন ট্রাজেডি’ প্রমাণ করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত নভেম্বরের ২০ তারিখে কানপুরের কাছে ইনদৌর-পটনা এক্সপ্রেস লাইনচ্যূত হয়। দীপাবলির উৎসবের মুখে সেই ভয়বাহ রেল দুর্ঘটনা দেশজুড়ে শোকের আবহ তৈরি করেছিল। কিন্তু, এই ‘ট্রেন ট্র্যাজেডি’-র এক চাঞ্চল্যকর তথ্য তাদের হাতে এসেছে বলে দাবি করছে বিহার পুলিশ। তাদের দাবি, কানপুরের ‘ট্রেন ট্র্যাজেডি’ কোনও দুর্ঘটনা নয়, এটা আসলে একটা জঙ্গি নাশকতা।
যার মাস্টারমাইন্ড আইএসআই বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে দুবাই থেকে নেপাল হয়ে ভারতে বিস্তৃত থাকা মাফিয়া ডন দাউদের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগানো হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। বিহার পুলিশের এই তথ্য পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে। এরপরই এখন এই ‘ট্রেন ট্র্যাজেডি’-র তদন্তে নেমেছে এটিএস, এনআই এবং ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা।
বিহার পুলিশ সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে পূর্ব চম্পারণ থেকে ৩ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। ১ অক্টোবর পূর্ব চম্পারণের কাছে ঘোরাসান রেল স্টেশন লাগোয়া জাগিরাহা গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া রেল ট্র্যাক থেকে আইইডি উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। রেলপুলিশের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড গিয়ে সেই আইইডি নিষ্ক্রিয় করে।
এই ঘটনার পিছনে প্রথমে মাওবাদীদের সন্দেহ করা হয়েছিল। মোতিহারির পুলিশ সুপার জীতেন্দ্র রানা জানিয়েছেন, তাদের জেলার আদাপুর থানা মোতি পাসওয়ান, উমা শঙ্কর পটেল এবং মুকেশ যাদব নামে তিন কুখ্যাত স্থানীয় দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। জেরায় মোতি পাসওয়ান নাকি জানায় রেল লাইনে আইইডি রাখার জন্য নেপালের ব্রজেশ গিরি নামে
এক ব্যক্তি নির্দেশ দিয়েছিল। এর জন্য ৩ লক্ষ টাকাও পেয়েছিল মোতিরা। ব্রিজেশ নাকি মোতিদের নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের সমস্ত জনপ্রিয় রেলরুটে নাশকতা চালাতে। পুলিশের দাবি, গত ২০ নভেম্বর কানপুর ‘ট্রেন ট্র্যাজেডি’-ও এই নাশকতার জের বলে নাকি স্বীকারও করেছে মোতি পাসওয়ানরা। কানপুরের এই রেল ট্র্যাকের ফিসফ্লেট খুলে নেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশের কাছে মোতিরা স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে।
এদিকে, মোতি পাসওয়ানদের বয়ানের ভিত্তিতে বিহার পুলিশ নেপাল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ব্রিজেশ গিরি-সহ ৩সন্দেহভাজনকে নেপাল পুলিশ তাইলায়াতে গ্রেফতার করে। জেরায় নাকি ব্রিজেশ, বিহারে থাকা আরও ২ দুষ্কৃতীর নাম জানিয়েছে। এরা হল গজেন্দ্র শর্মা এবং রাকেশ শর্মা। এরা পূর্ব চম্পারণে আত্মগোপন করে আছে বলে বিহার পুলিশ জানতে পেরেছে।
নেপাল পুলিশের জেরায় ব্রিজেশ গিরি আরও জানিয়েছে, দুবাই থেকে শামসুল হুড়া নামে এক ব্যক্তি ভারতের রেল রুটে এবং ট্রেনগুলিতে নাশকতার জন্য অর্থ পাঠিয়েছিল। বিহার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে এই শামসুল হুড়া, মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্কের। সেইসঙ্গে আরও দাবি করা হচ্ছে নেপালে আইএসআই-এর স্লিপার সেল হিসাবেও কাজ করে ব্রিজেশ। সুতরাং আইএসআই-এর নির্দেশ ছাড়া ব্রিজেশ কোনওভাবেই দাউদ নেটওয়ার্কের সঙ্গে কাজ করবে না বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
‘কানপুর ট্রেন ট্র্যাজেডি’-কে যে আর কোনওভাবেই দুর্ঘটনা বলা যাবে না তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সর্বসমক্ষে প্রমাণগুলো পেশ করা এখন সময়ের অপেক্ষা। আপাতত এই টেরর নেটওয়ার্কের পুঙ্খনাপুঙ্খ তদন্তে একযোগে হাত মিলিয়েছে বিহার পুলিশ, আইবি, র, এটিএস, এনআইএ এবং নেপাল পুলিশ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন