১৪ জঙ্গির লাশও যাবে আঞ্জুমান মুফিদুলে

পুলিশের বিশেষ অভিযানে নিহত ১৪ জঙ্গির লাশ রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। এদের মধ্যে ১৩ জনের পরিচয় সনাক্ত হলেও তাদের পরিবারের কেউ এখনও লাশ নেওয়ার দাবি করেনি। ফলে আইনুযায়ী ওই লাশগুলোকে বেওয়ারিশ হিসেবেই আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে নিহত পাঁচ জঙ্গির লাশ ছিল সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) মর্গে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ছয়জনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় নিহত জঙ্গি আবিরের লাশও বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছিল শোলাকিয়ার একটি কবরস্থানে।
গত ২৬ জুলাই পুলিশের বিশেষ অভিযানে কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ে নিহত হয় নয়জন জঙ্গি। এরা হলেন- দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের আবদুল্লাহ, টাঙ্গাইলের মধুপুরের আবু হাকিম নাইম, ঢাকার প্রকৌশলী তাজ-উল-হক রাশিক, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ওমরপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান, স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগ নেতা মোনায়েম খানের নাতি আকিফুজ্জামান খান, যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী সাজাদ রউফ অর্ক, নোয়াখালীর শিবির কর্মী জোবায়ের হোসেন এবং রংপুরের পীরগাছা উপজেলার রায়হান কবির।
পুলিশ বলছে, আট জঙ্গির পরিচয় যেভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পরিচয় একইভাবে নবম জনের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তার আঙ্গুলের ছাপে কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি। তার ছবি দেখেও পুলিশের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি।
পরের দিন ২৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের অভিযানে নিহত হয় গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর হামলায় মূল পরিকল্পনকারী ও পুলিশের পুরস্কার ঘোষিত আসামি তামিম আহমেদ চৌধুরী যশোরের এমএম কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র রাব্বি, অন্যজন ঢাকার ধানমন্ডির তাওসীফ হোসেন।
ধানমন্ডির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ডা. মো. আজমলের ছেলে তাওসীফ গত মার্চে ঘর ছাড়েন। গুলশানের ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে নিহত নিবরাজ ইসলাম, শোলাকিয়ায় হামলার পর পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত আবীর রহমান এবং কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে নিহত শেহজাদ রউফ অর্কও একই সময়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন বলে তাদের পরিবারের ভাষ্য।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুরের রুপনগর এলাকার একটি বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ। তিনি তামিম চৌধুরীর ডান ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। সবশেষে পুরান ঢাকার আজিমপুরে ২০৯/৫ নম্বর বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা তানভীর কাদেরী।
পুলিশের অভিযানে নিহত ১৪ জঙ্গির লাশ ময়না তদন্ত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ। ময়না তদন্ত শেষে তিনি নিহতদের লাশের প্রয়োজনীয় ভিসেরা ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছেন ভবিষ্যতে প্রয়োজনমত যে কোন সংস্থাকে সরবরাহ করার জন্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ফ্রিজে ২০ জনের লাশ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে । সেখানে ১৪ জন জঙ্গির লাশ দীর্ঘদিন পরে থাকায় মর্গের সমস্যা হচ্ছে একথা জানিয়ে অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি চিঠি দিয়েছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কোন ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বস দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মুহাম্মদ শফিউজ্জামান বলেন, এদের লাশের ব্যাপারে সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আজকে দেখলাম হলি আর্টিজানে নিহত ছয়জনের লাশ আঞ্জুমান মুফিদুল জুরাইন কবরস্থানে দাফন করেছে। এখন দেখি এদের ব্যাপারে সরকার কি সদ্ধান্ত নেয়।
এই ১৪ জন জঙ্গির লাশের কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপাতত কিছু বলা যাচ্ছেনা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার ইউসুফ আলী বলেন, জঙ্গিদের লাশের ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কেউ যদি লাশের দাবি না করে তাহলে নিয়মানুযায়ী এসব লাশও আঞ্জুমানেই যাবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদবিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকবির ম্যুরাল থেকে কালি মুছে দিল উপজেলা প্রশাসন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ম্যুরালে কালি দিয়ে মুখবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: ইউনূস–মোদির বৈঠক আশার আলো দেখাচ্ছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন