১৬ বছর পরে বাবা-মায়ের খোঁজ পেলেন ছেলে মিঠু
এক ভিক্ষুক দম্পতির দেওয়া খবরের সূত্র ধরে দীর্ঘ ১৬ বছর পরে বাবা-মাকে ফিরে পেলেন ডোমকলের শিবনগরের মিঠু বিশ্বাস।
নাহ্! সন্ধানের প্রক্রিয়াটা খুব সহজে হয়নি। ১৯৯৯ সালে হারিয়ে যান মিঠু। তখন সে আট বছরের বালক। মিঠু জানায়, হারিয়ে যাওয়ার পরে কলকাতার খিদিরপুরের এক নিঃসন্তান দম্পতির বাড়িতে সে বড় হয়। তিন বছর পরে ওই দম্পতির সন্তান হওয়ার পরেই তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও মিঠুর দাবি। পরে হাওড়া স্টেশনে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখে রায়গঞ্জের বাসিন্দা হাজি মকসেদ আলি নিজের বাড়িতে থাকতে দেন মিঠুকে। নিজের
একটা আস্তানা তো জুটল। কিন্তু, বাবা-মা কোথায়?
ষোলো বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনার পুরোটাই বিস্মৃতির অতলে মিলিয়ে গিয়েছিল মিঠুর। শুধু মনে ছিল তাঁর বাড়ি শিবনগর এলাকায়। কিন্তু, ওই নামে তো হাজারটা জায়গা রয়েছে। কোন শিবনগর? কোথায় গিয়ে সে খুঁজবে? বাবা-মার নামটাও মনে না থাকায় সেই সন্ধান দূরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল মিঠুর কাছে। তবুও দমে যাননি তিনি। মিঠুর কথায়, ‘‘রায়গঞ্জ স্টেশনে বিভিন্ন এলাকার ভিখারিরা আসতেন। সেই মতো স্টেশনে গিয়ে ভিক্ষুকদের সঙ্গে আলাপ জমাতাম। নিজের হারিয়ে যাওয়ার কথা শুনিয়ে তাঁদের দোয়া করতে বলতাম।’’ সেই দোয়াই মিলিয়ে দিল একটি পরিবারকে।
মিঠু জানায়, শিবনগর এলাকা থেকে ওই ভিক্ষুকেরা আসছেন, তা জানতে পারলে সেই এলাকা কত দূর, কী ভাবে সেখানে যেতে হয় তা জেনে পৌঁছে যেতেন সেখানে। চলত খোঁজখবর। এ ভাবে অনেকের থেকে শিবনগর গ্রামের কথা জানতে পেরে বিভিন্ন জেলার শিবনগর গ্রাম ঘুরেছেন তিনি। মাস কয়েক আগে মুর্শিদাবাদেরই রানিতলা থানার শিবনগর গ্রামেও ঘুরে যান তিনি। কিন্তু কোথাও বাবা-মায়ের খোঁজ মেলেনি।
শেষ পর্যন্ত ডোমকলের এক ভিক্ষুক দম্পতির থেকে আবার এক শিবনগরের কথা শুনে মিঠু পঞ্চমীর সকালে এলাকায় পৌঁছন। হারিয়ে যাওয়ার কথা শুনে গ্রামবাসীরাই তাঁকে বিশ্বাস বাড়িতে নিয়ে যান। মা পিঞ্জুরা বিবি তখন বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়েই তিনি ছুটতে ছুটতে বাড়িতে আসেন। কিন্তু, হারানোর পরে কেটে গিয়েছে যোলোটা বছর! ছেলেও ততদিনে বালক থেকে যুবক হয়েছে। তবুও ছেলেবেলায় পড়ে গিয়ে কেটে যাওয়া গালের ক্ষতচিহ্ন দেখে মায়ের চিনে নিতে ভুল হয়নি আদরের মিঠুকে। আবছা হলেও মিঠুরও মনে ছিল মায়ের চেহারা অতএব সমাপতন!
মিঠু হারিয়ে গিয়েছিল কী ভাবে?
বাবা জইনুদ্দিন বিশ্বাস জানালেন, আট বছরের মিঠু বায়না ধরেছিল দিদির বাড়িতে বেড়াতে যাবে বলে। সেই মত তাকে মেয়ের বাড়িতে হরিহরপাড়ার স্বরূপপুরে রেখেও আসেন। পরে দিদির বাড়ি থেকে একা নিজের বাড়িতে ফেরার সময়ে হারিয়ে যায় মিঠু। ১৬ বছর আগে ডোমকল থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। ছেলে ভৈরব নদে ডুবে যায়নি তো, এই আশঙ্কায় নৌকা নিয়ে টানা তিন দিন তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু মিঠুর খোঁজ মেলেনি। এক সময়ে পরিজনেরা আশা ছেড়ে দেন।
আশা ছাড়েনি শুধু মিঠু। পঞ্চমীর সকালে, দেবীর বোধনের আগে আচমকা বাড়িতে হাজির হয় সে। বাপের বাড়িতে দেবীদুর্গার আগমনকে কেন্দ্র করে সর্বত্র যখন উৎসবের মেজাজ, তখন এক অন্য আনন্দের রেশ শিবনগরের বিশ্বাস পরিবারে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন