১ কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার অপবাদে প্রাণ গেল ২ গৃহবধূর
রংপুরের মিঠাপুকুরে কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার অপবাদ সইতে না পেরে দুই গৃহবধূ হামিদা বেগম (২৫) ও সাবিনা আক্তার (৩০) আত্মহত্যা করেছেন।
মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহিনুল ইসলাম জানান, উপজেলার চেংমারী ইউনিয়নের লোহাকুচি গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে আনারুল ইসলামের সঙ্গে ৮ বছর আগে বিয়ে হয় চিলাখাল গ্রামের বালা মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগমের।
তাদের দাম্পত্য জীবনে আন্নিকা খাতুন নামের ৫ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর ছেলে সন্তান আশা করতে থাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বছর খানেক আগে হামিদা আবারও অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়েন।
এবার ছেলে সন্তান না হলে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু ৪০ দিন আগে আরও একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন হামিদা। এতে চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তাকে প্রচণ্ড গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।
স্বামী আনারুল সপ্তাহ খানেক আগে অভিমান করে ঢাকায় চলে যায়। এ নিয়ে গৃহবধূ হামিদা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির অপমান সইতে না পেরে এক পর্যায়ে রোববার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই গৃহবধূ।
এলাকাবাসী ঘরে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। বিকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ঘটনার পর পরই শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
মিঠাপুকুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, গৃহবধূ হামিদাকে আত্মহত্যার প্ররোচণায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। মামলাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেফতারে জোর অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দুই কন্যা সন্তান জন্মের পর একই অপবাদের কারণে সাবিনা আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার বিকালে উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের জাগিনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, লতিবপুর ইউনিয়নের জাগিনাথপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের মেয়ে সঙ্গে বিয়ে হয় কাফ্রিখাল ইউনিয়নের কুমরগঞ্জ গ্রামের আব্দুর রশীদের।
প্রায় ৭ বছর আগে সাবিনাকে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতেই ঘরজামাই থেকে যান রহিম। এরই মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।
পুত্র সন্তান না হয়ে পরপর দুই কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য গৃহবধূ সাবিনা আক্তারকে দায়ী করেন শ্বশুর বাড়ির লোকিজন।
এ নিয়ে রোববার সকালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে বলা হলে মনের দুঃখে সাবিনা আক্তার রোববার বিকালে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
পরে এলাকাবাসী সাবিনার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাবিনার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আরতদাড়ের সাথে বিরোধ, রহনপুর বাজারে আম বিক্রি বন্ধ
আম চাষিরা আমের মণ সর্বোচ্চ ৪৮ কেজি করার দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু
লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া ৩টি বগি উদ্ধারবিস্তারিত পড়ুন
পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অণুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় নাগরিকবিস্তারিত পড়ুন