একজন স্বাভাবিক মানুষের হাত ও পা মিলিয়ে মোট আঙ্গুলের সংখ্যা ২০ টি। ব্যতিক্রম দুই একজনের হয়তো একটি আঙ্গুল বেশি থাকে। কিন্তু ভারতের মধ্য প্রদেশের বেটুল জেলার কাওলা গ্রামে এক পরিবারের ১৪জন সদস্যের প্রত্যেকের রয়েছে ২০-এর অধিক আঙ্গুল।

৬৫ বছর বয়সি থাকো বাই ও তার স্ত্রী তাতুজিসহ তাদের সন্তানদের আশ্চর্যজনকভাবে প্রত্যেকেরই রয়েছে অসংগতিপূর্ণ বিশের অধিক আঙ্গুল।

তাদের ছেলে বলদেব (৪৬), বলরাজ (৪৩), পান্দারি (৪০) এবং তাদের পাঁচ সন্তান পাশাপাশি থাকো বাইয়ের কন্যা গেওরা, সাকু এবং তাদের তিন সন্তান সব মিলিয়ে পরিবারের ১৪জন সদস্যের প্রত্যেকের অসংগতিপূর্ণভাবে ২২-২৭ টি করে আঙ্গুল রয়েছে। এই বাড়তি আঙ্গুলগুলো মূলত হালকা টিস্যু এবং সার্জারির মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা সম্ভব বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে বরকতউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ডিপার্টমেন্টের সাবেক হেড এনসি শর্মা বলেন, ‘এই জেনেটিক অসংগতিটি কয়েক জেনারেশন ধরে চলে আসছে। এ পরিবার এখন অবশ্যই একটি গবেষণার বিষয়বস্তু।’

এ সম্পর্কে পরিবারের কর্তা থাকো বাই বলেন, ‘আমার কয়েক ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র আমি বিশের অধিক আঙ্গুল নিয়ে জন্ম নিয়েছিলাম। বিষয়টি আমার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছিল। কিন্তু আমার বিয়ের সময় কোনো সমস্যা হয়নি।’

‘এই ঘটনা ঘটে গেওরা এবং সাকুর ক্ষেত্রেও। তারা এখন খারওয়া জেলায় তাদের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছে’ বলেন তাতুজি।

তবে তাদের তিন ছেলের বিয়ের ব্যাপারে একটু ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তাদের তিনজনের জন্য মেয়ে খুঁজতে প্রায় পাঁচ বছর লেগেছিল। আঙ্গুল থেকে একাধিক আঙ্গুল দেখে তাদের কেউ বিয়ে করতে চাইত না।’

১৭ বছর বয়সি কবিতা হচ্ছেন বলদেবের মেয়ে তার রয়েছে চব্বিশটি আঙ্গুল। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা লোকচক্ষু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি কারণ মানুষ আমাদের অনুসরণ করে বাড়ি পর্যন্ত চলে আসে। বাড়তি আঙ্গুল আমাদের জীবনে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না। আমরা এটিকে বাড়তি বোঝা হিসেবেও মনে করি না।’

কাওলা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জয় প্রকাশ মৌসিক বলেন, ‘এই পরিবার আমাদের গ্রামকে প্রসিদ্ধ করেছে। মধ্য প্রদেশের হোসাঙ্গাবাদ, হার্দা এবং কান্দওয়া ছাড়াও নাগপুর এবং মহারাষ্ট্র থেকে মানুষ তাদের দেখতে আসে।’
https://youtu.be/qfhmIfWC7P0