শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

২০% বিবাহিত নারী স্বামীর লাঠি পেটার শিকার

বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের অর্ধেকই কখনো না কখনো স্বামীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। উপার্জনকারী নারীদের মধ্যে এ হার বেশি।

দেশে নারী নির্যাতনের ওপর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দ্বিতীয় খানাভিত্তিক জরিপ ‘ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন সার্ভে ২০১৫’ এমনটাই বলছে। এতে দেখা গেছে, নির্যাতনের মধ্যে চড়, কিল, ঘুষি দেওয়া আর গায়ে শক্ত কিছু ছুড়ে মারার হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি পাঁচজনে একজনকে অর্থাৎ ২০ শতাংশ বিবাহিত নারীকে স্বামী লাঠি বা অন্য কিছু দিয়ে পিটিয়েছেন। অনেক বিবাহিত নারী স্বামী ছাড়া অন্যদের হাতেও মার খান।

জরিপ-পূর্ববর্তী ১২ মাসে নির্যাতিত নারীদের ৫৩ শতাংশ দুই থেকে পাঁচবার কোনো না কোনো শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কয়েকবার করে লাঠিপেটা হওয়ার হারও অনেক বেশি।

জরিপটির দায়িত্বে ছিলেন বিবিএসের পরিচালক মো. জাহিদুল হক সরদার। তিনি বলেছেন, সচরাচর যাঁরা স্বামীর হাতে মার খান, তাঁরা অন্যদের হাতেও মার খান; বিশেষত স্বামীর আত্মীয়স্বজনের হাতে। মারধর বেশি করা হচ্ছে যৌতুকের কারণে। জাহিদুল বলেন, উচ্চ অবস্থানের ব্যক্তিদের মধ্যেও স্ত্রীকে মারধর করার নজির আছে।

জরিপটি নারীর ওপর শারীরিক, যৌন, অর্থনৈতিক ও মানসিক নির্যাতন এবং নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ খতিয়ে দেখেছে। দেখা যায়, বর্তমানে বিবাহিত, বিধবা ও বিবাহবিচ্ছিন্ন মোট নারীর প্রায় ৭৩ শতাংশ জীবনকালে স্বামীর হাতে কোনো না কোনো নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণের পরই বেশি হারে হয়েছে শারীরিক নির্যাতন।

রাহেলা বেগম (২৬) রাজধানীতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তাঁর দুই ছেলেমেয়ে। বিয়ের পর থেকেই তিনি স্বামীর হাতে মার খান। প্রতিবাদ করলে মারের হার আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘মাইয়া মানুষ। পড়ালেহা জানি না। একলার আয়ে পোলাপান নিয়া খামু কী? হ্যার লেইগ্যা মাইর খাই।’ বিয়ের আগে বাবা ও ভাইয়ের হাতেও তিনি নানা কারণে মার খেয়েছেন, বলেন রাহেলা।

জাতিসংঘের মানদণ্ডে শারীরিক নির্যাতন বলতে জরিপে চড়, কিল, ঘুষি, গায়ে শক্ত কিছু ছুড়ে মারা; ঠেলা বা ধাক্কা মারা বা চুল ধরে টানা; লাথি মারা, মাটিতে ফেলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া; উদ্দেশ্যমূলকভাবে গলা টিপে ধরা বা শ্বাসরোধ করা; উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুড়িয়ে দেওয়া; বন্দুক, ছুরি বা অন্য কোনো অস্ত্র ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া বা আঘাত করা বোঝায়। জরিপে দেশীয় মাপকাঠি হিসেবে এর সঙ্গে গরম বস্তু দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া, উদ্দেশ্যমূলকভাবে অ্যাসিড অথবা অন্য কোনো গরম তরল পদার্থ ছুড়ে মারা এবং লাঠি বা ভারী বস্তু দিয়ে আঘাতকে যুক্ত করা হয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, কখনো বিয়ে করেছেন, এমন মেয়েদের ৫০ শতাংশই জীবনে কখনো না কখনো স্বামীর হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এঁদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের আঘাত ছিল মাঝারি তীব্রতার। আর ২১ শতাংশ বিবাহিত নারীর এ অভিজ্ঞতা হয়েছে জরিপ-পূর্ববর্তী এক বছরে।

নরসিংদীর গৃহবধূ আকলিমা বেগমের বিয়ে হয়েছে ২৩ বছর আগে। বিয়ের দুই বছর না যেতেই যেকোনো অজুহাতে স্বামী তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন। কেবল কিল, ঘুষি, চড় নয়; হাতের কাছে যা পান তাই দিয়েই তিনি স্ত্রীকে মারেন। একদিন বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছিলেন, বলেন আকলিমা।

শহরের তুলনায় গ্রামে বিবাহিত নারীরা এমন নির্যাতনের শিকার হন বেশি। কম শিক্ষিত ও দরিদ্র পরিবারের নারীদের মধ্যে এর হার বেশি। জীবনকালের হিসাবে সবচেয়ে বেশি মার খাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী নারীদের। তবে জরিপ-পূর্ববর্তী ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়েছেন অল্পবয়সী নারীরা।

বিবাহিত নারীদের প্রায় ৫ শতাংশ গর্ভবতী থাকাকালে স্বামীর হাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। রাজধানীর ২৭ বছর বয়সী চাকরিজীবী এক নারী এখন সাড়ে ছয় মাসের গর্ভবতী। এ অবস্থাতেও স্বামী তাঁকে মারধর করেন। বিয়ের পর থেকেই তাঁর উচ্চশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত স্বামী তাঁকে মারধর করে আসছেন।
বউকে মারধর করেন এমন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, কোনো কারণে রাগ হলে যেকোনো ছুতোয় স্ত্রীকে মেরে মাথা ঠান্ডা করেন। আবার অনেক সময়, স্ত্রী তাঁর সব কথা শুনতে চান না। নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করতে চান, চলতে চান। তিনি অবশ্য বললেন, বউকে নির্যাতন করা ভালো নয়। তবে তাঁর শেষ কথা, ‘যা করি সংসারের ভালোর জন্যই করি।’

সরকারি চাকরিজীবী একজন নারী (৩৩) বলছেন, তিনি প্রায়ই স্বামীর হাতে মার খান। বেশির ভাগ সময় রাতের খাবার নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। চাকরি না করলে রান্না ভালো হতো, শাশুড়ি সেবা পেতেন—এসব স্বামীর অভিযোগ। কিছু হলেই শ্বশুরবাড়ির সবাই তাঁকে ‘চাকরিজীবী বউ’ বলে কটাক্ষ করেন।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের গবেষক রুচিরা তাবাসসুম নভেদ্ দীর্ঘদিন ধরে নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর গবেষণায় তিনি পুরুষদের মতামত আর পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখেছেন। রুচিরা বলছেন, বিদ্যমান সমাজে পুরুষের ক্ষমতা ও আধিপত্য বেশি। নারীরা পুরুষের অধীন। এ জন্য নারীর প্রতি সহিংসতা সমাজে একটি গ্রহণযোগ্য বিষয়। মূলত নারীকে নিয়ন্ত্রণ ও শোধরানোর দায়িত্বের অংশ হিসেবেই পুরুষ নারীকে নির্যাতন করে থাকেন।

রুচিরা বলেন, নারীর উপার্জনকে পুরুষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেন। সাধারণত বেশির ভাগ পরিবারে পুরুষই আয় করে স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপোষণ করেন। ফলে তিনি নিজেকে সংসারের একমাত্র ক্ষমতাবান ব্যক্তি মনে করেন।

বিবিএসের পরিচালক জাহিদুল দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের পাশাপাশি বিদ্যমান আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁদের জরিপটি বলছে, নির্যাতনের শিকার বিবাহিত নারীরা স্বামীর বিরুদ্ধে কদাচিৎ আইনি সহায়তা নেন। তাঁদের অধিকাংশ নির্যাতনের কথা প্রকাশই করেন না, এমনকি আহত হলেও চিকিৎসকের কাছে যান না।প্রথম আলো

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন

রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন

যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • ধর্ম উপদেষ্টা: মসজিদে নববীর আদলে গড়ে তোলা হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ
  • রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য ভাঙারির দোকানে
  • ২ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-যশোর-বেনাপোল রুটে ট্রেন চলবে
  • ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
  • সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
  • রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
  • ড. ইউনূস: খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত
  • দেশের নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন
  • ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে শাটল বাস সার্ভিস
  • পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুকধারীর গুলি, নিহত ৩৮
  • সায়েন্সল্যাব এলাকা থেকে সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের
  • ড. ইউনূস: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা চাকরিপ্রার্থী তৈরি করে, এটি ত্রুটিপূর্ণ