২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস: নরেন্দ্র মোদির সম্মতি
সম্প্রতি সংসদ থেকে পাস হওয়া ২৫শে মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমর্থন দিয়েছেন। ফলে আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসটি পালন করতে একধাপ এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে ভারত সফর করেছেন। ২৫শে মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মতি জানিয়ে পাশে থাকবেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি বাহিনীর সামরিক অভিযানে নির্মম ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের স্মরণে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব গত ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী গণহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সংসদে বলেন, ‘জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ৯ ডিসেম্বর ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ গ্রহণ করে। ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বরকে ‘জেনোসাইড ডে’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। কাজেই আমাদের কাছে সেই সুযোগ রয়েছে, জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।’
সংসদ কার্যপ্রণালী-বিধির ১৪৭ বিধিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শিরীন আখতারের আনা প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শেষে সংসদে তা সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করলে সংসদ তা পাস করে। পরে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালনের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবসে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করা হয়।
আর এ বছরই প্রথমবারের মত দেশে ছোট পরিসরে পালিত হয় গণহত্যা দিবস। গত ২৫ শে মার্চ দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘শহীদস্মৃতি বৃক্ষরোপণ’ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। দিবসটি ঘিরে অন্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল জনসভা, আলোচনা সভা, র্যালি, দেশের বিভিন্ন স্থানের বদ্ধভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি, সুন্দর হাতের লেখা, গণসংগীত অনুষ্ঠান, দেশাত্মবোধক গান, দোয়া মাহফিল, পুরস্কার বিতরণ, রক্তদান কর্মসূচি, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদিকে দিবসটি যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে পাকিস্তানসহ বাংলাদেশের অন্য দূতাবাসগুলোতেও পালিত হয়।
এর আগে গত ২৩ মার্চ সচিবালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রি আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক ‘গণহত্যা স্মরণ দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য জাতিসংঘ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা পরিবর্তন করে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের জন্য আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির কাছে আবেদন করা হবে।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘৯ ডিসেম্বরকে ২৫ শে মার্চে পরিবর্তন করে আনার জন্য সমস্ত যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ডকুমেন্ট তৈরি করেছেন। এবং বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের কাছে তা পাঠাতে যাচ্ছি। সেইসাথে তাদের সাথে মতবিনিময় করার প্রক্রিয়া আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে যে কেন ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ শে মার্চ হওয়া উচিৎ।’
ওইদিন তিনি আরও বলেন, ‘আবেদনের আগে সমর্থনের বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। কারণ আবেদনের আগে আমরা যদি সমর্থন আদায় করতে না পারি এবং ব্যর্থ হলে এটা আবার ওঠানো কঠিন হবে। আমরা আবেদন করব। কিন্তু সেইসাথে এটা জাতিসংঘে ওঠানোর আগে কূটনৈতিকভাবে যেন অধিক দেশের সমর্থন আদায় করতে পারি, সে তৎপরতা চলবে।’
দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য এরই মধ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পাওয়া গেল। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য এগিয়ে থাকল বাংলাদেশ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন