২৭ বছর আগে! রেলের কামরায় এই যুবতীর সম্মানরক্ষা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
সালটা ছিল ১৯৯০। রেলের পরীক্ষা দিতে লখনউ থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন দুই যুবতী। ট্রেনের কামরায় জনা ১২ ছেলে তাদের দিকে অস্বস্তিকর দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিল। ওইসব ছেলেদের কাছে কোনও রিজার্ভেশন ছিল না। তারা এই যুবতীদের সরিয়ে সেই জায়গায় ব্যাগ-পত্র রাখতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, তাদের লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষাও ছুঁড়ে দিতে থাকে, যাতে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে যান ওই দুই যুবতী। রাতটা কিভাবে কাটাবেন বুঝতে পারছিলেন না। অন্যান্য যাত্রীদেরও বিশেষ কোনও হেলদোল ছিল না। উধাও হয়ে যান টিটিও।
কোনও ভাবে রাতটা পার করেন তাঁরা। পরের দিন আরও একটা ট্রেন সফর। এবার দিল্লি থেকে গুজরাত। একজন ভয়ে দিল্লিতেই রয়ে গেলেন। অপর যুবতী ট্রেনে উঠলেন, তবে ছিল না কোনও রিজার্ভেশন। ওই যুবতীর সঙ্গে যোগ দেন আরও এক জন। টিকিট ওয়েটিং লিস্ট থাকার কারণে ভীষণ ভয় পাচ্ছিল তাঁরা। স্টেশনে পৌঁছে তারা ছুটল চার্ট দেখতে কিন্তু কিছুই লাভ হল না কারণ টিকিট কনফার্ম হয়নি। কর্মরত টিটিকে জানাল তাদের অসুবিধার কথা, টিটি বলল ট্রেনে উঠে বসতে পরে যদি কিছু করা যায়।
রাতের সফর। তার উপরে আগের ট্রেনে তাদের ভীষণ খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাই ভয়ে ভয়ে একটা কামরায় উঠে বসল তারা,তাদের সামনের সিটে দুজন ব্যক্তি বসেছিল ওদের উপর চোখ পড়তে আরও ভয় করতে লাগল কে জানে এরাও সেই আগের ট্রেনের লোকেদের মত কিনা? ওই দুই ব্যক্তির চোখে ওদের অস্বস্তি ধরা পড়ল। অবশেষে টিটি এসে জানাল কোন সিট খালি নেই এই সিট দুটো ও পরের স্টেশনে ভরে যাবে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মত অবস্থা তাঁদের তখন। কিন্তু কিছু করার কোন উপায় নেই।
এমন সময় ওই দুই ভদ্রলোক উঠেপড়ে সিট ছেড়ে দেন। কিছুক্ষণ পর তারা ফিরে এসে কামরার মেঝেতে একটা চাদর পেতে শুয়ে পড়ে। সকাল বেলা হকারদের শব্দে ওদের ঘুম ভাঙে। সেই সময় তাদের মধ্যে এক যুবক বলে ওঠেন, ‘বোন আপনাদের কোন অসুবিধা হয় নি তো? আর গুজরাতে কোন দরকার পড়লেও নির্দ্ধিধায় জানাবেন।’ এই কথা শোনার পর ওই দুই যুবতী আশ্বস্ত হন। এরপর একজন যুবতী তাঁর পেন ও ডাইরি দিয়ে সেই দুই সহযাত্রীকে বলে ওঁদের নাম ও ঠিকানা লিখে দিতে। ওই দুই যুবক ট্রেন থেকে নেমে যাওয়ার পর তাঁরা দেখেন দুই যুবকের নাম নরেন্দ্র মোদীজি ও শঙ্কর সিং বাঘেলা।
সেই যুবতী আজ ভারতীয় রেলের ইনফরমেশন সিস্টেমের জেনারেল ম্যানেজার। লীনা শর্মা। ঘটনার বছর পাঁচেক বাদে অসমের এক সংবাদপত্রে এই গল্পটি লিখেছিলেন তিনি। লীনার কাছে তখন মোদী কিংবা বাঘেলা, দুজনেই অপরিচিত মুখ। এরপর বাঘেলা গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হন, পরে নরেন্দ্র মোদীও মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে একদিন যে সেই নরেন্দ্র মোদীরই দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন সেকথা ভাবেননি রেলের এই অফিসার। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ‘The Hindu’ পত্রিকায় এই গল্পটি লেখেন তিনি। শিরোনাম ছিল A train journey and two names to remember. আজও যতবার টিভি-তে দেখেন মোদীকে সেদিন রাতের সেই ব্যবহারের কথা ভুলতে পারেন না তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন