৩ মাসেও ছেলের লাশের সন্ধান পায়নি তার বাবা
টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে গত ৩১ জুলাই ওমানের সোহার এলাকায় নিহত হন পটুয়াখালীর বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান (পাসপোর্ট নং-বিএ০৩৯৬২১৬)। মারা যাওয়ার তিন মাস চলে গেলেও, এখনো নিহত হাসানের কোন প্রকার হদিস পায়নি ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস।
এদিকে ছেলের মৃত্যর খবর পাওয়া পর দূতাবাসের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও, লাশের ব্যাপারে কোন তথ্য না পাওয়ায় চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনানিপাত করছে তার পরিবার। যদিও দূতাবাসের পক্ষ বলা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে দেরিতে যোগাযোগ কারণে, এমনটি হয়েছে। তবে নিহত হাসানের লাশ দাফন করা হয়েছে কি-না বা তার লাশ কোথায় আছে, এসব নির্দিষ্ট কিছুই বলতে পারছেন না দূতাবাসের কর্মকর্তারা- বলে অভিযোগ পরিবারের।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৮ জুন ওমানে যায় পটুয়াখালী জেলার দুমকি থানার রাজখালী গ্রামের বাসিন্দা ক্বারী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ছেলে মাহমুদুল হাসান। সেখান রেস্টুরেন্টে কাজ করার কথা চুক্তি করে একই এলাকার ওহিদুল ইসলাম নামের দালালের মাধ্যমে যান তিনি। পরে সেই চাকরি না দিয়ে, সোহার থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে তাকে এক বাগানের কাজ করতে দেওয়া হয়। ওই একই মালিকের বাগানে কাজ করতেন ইসমাইল হোসেন ও মো. শফিক নামে অপর দুই বাংলাদেশি।
গত ৩১ জুলাই ৫০ ওমানি রিয়াল লেনদেন নিয়ে তাদের সঙ্গে মারামারি হয়। এক পর্যায়ে তখনই তারা হাসানকে মেরে ৫০ হাজার টাকা তারা নিয়ে পালিয়ে যান। পরে তাদেরকে ওমানের পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং তারা এখন ওমানের জেলহাজতে আছে। কিন্তু হাসানের লাশ কোথায়, সেখানে দাফন করা হয়েছে কি-না, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি ওমানস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসা।
তার পরিবারের পক্ষ অভিযোগ করা হচ্ছে যে, হাসানের মৃত্যর খবর পাওয়ার পরই আমরা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা দুই মাস পর জানায় যে, দূতাবাসের সঙ্গে কোন যোগাযোগ না থাকায়, হাসানের লাশ হয়তবা দাফন করা হয়েছে। কিন্তু কোথায়, কখন দাফন করা হয়েছে সে ব্যপারেও স্পষ্ট কোন কিছু বলতে পারছে না দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
নিহতের পিতা ক্বারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, নিহত হওয়ার খবর জানতে পেরে ৫ আগস্ট দূতাবাসে যোগাযোগ করি। এরপর দূতাবাস থেকে কামরুল ইসলামের নামের একজন আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দুই দিনপরই আমাদের লাশ অল্প দিনের ফেরত দেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। আমাদের লাশ ফেরত আনার আবেদন ফর্ম ওমানস্থ বাংলাদেশি দূতাবাসে পৌঁছেছে বলে জানান কামরুল। সেই পিয়ন কামরুলকে কর্মকর্তা ভেবে তার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখি।
তিনি আরো জানান, পরে বিএমইটিতে এসে দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (লেবার উইং) একেএম রবিউল ইসলামের যোগাযোগ করতে বলা হয়। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি দুই মাস পর অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখে বলেন, ‘আমরা আপনাদের কোন চিঠি পাইনি। তবে সেখানকার পুলিশ মৌখিকভাবে জানিয়েছেন যে, কোন ওয়ারিশ না থাকায় লাশটি দাফন করা হয়েছে।’
কোথায় কখন দাফন করা হয়েছে, এব্যাপারে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম তার বাবাকে বলেছেন, ‘আমরা এগুলো সব মৌখিকভাবে শুনেছি। কোনো কাগজপত্র পাইনি। আমরা কি পুলিশ যে এতো তারাতারি জানাতে পারবো! তবে আমাদের তদন্ত অব্যহত আছে।’
তবে যেভাবেই হোক খুব তারাতারি সেই লাশের সন্ধান করে, তার হাড়ও যদি থাকে তা বাংলাদেশে নিয়ে আসার আকুল আবেদন হাসানের বৃদ্ধ পিতার। আর এসব চেয়ে তৃতীয়বারের মত বিএমইটির মাধ্যমে গত ২৯ তারিখে দূতাবাস বরাবর চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বিএমইটির একজন পরিচালক বলেন, ‘আসলে ব্যাপারটি নিয়ে যোগাযোগের একটু ‘গ্যাপ’ পরেছিল। তাছাড়া আমরা আমাদের দিক থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এমনকি এ ব্যাপারে বিএমইটির পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রলণালয় যাওয়ারও পরিকল্পনা করেছি। যেন যেভাবেই হোক লাশটি বের করে খুব তারাতারি তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা যায় অথবা অন্যকোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন