৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’
দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তেমনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান প্রজন্মের তরুণ প্রতিনিধিরা। প্রবীণ ও তারুণ্যের মিলিত শক্তি নিয়েই স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। আর এই ক্ষণে ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখা ৫৩ তরুণকে দেওয়া হয়েছে ব্যতিক্রমী সম্মাননা।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শনিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে সমতাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’ প্রথম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় পতাকা ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন তরুণ প্রতিনিধিরা।
অন্যদিকে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বাণী সম্বলিত সম্মাননা ক্রেস্ট ও জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন। পারস্পারিক এই সম্মাননা বিনিময়ের সময় অনুষ্ঠানস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে। শপথের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তরুণ প্রজন্মের হাজারও প্রতিনিধি।
একাত্তরের প্রেরণায় জাগো, জাগাও’– এ স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা একাত্তর সকালে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে দুই পর্বে সম্মেলন শুরু করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ‘আমরা একাত্তর’ এর প্রধান সমন্বয়কারী বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী। সংগঠনের চেয়ারপারসন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তরুণ প্রজন্মের উজ্জ্বল প্রতিনিধি শহীদ সন্তান জাহীদ রেজা নূর, অনুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা, এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার, অ্যান্টার্কটিকা বিজয়ী মহুয়া রউফ, আয়রনম্যান ইমতিয়াজ এলাহী ও নৃত্যশিল্পী পূজা সেন গুপ্ত। তারা তাদের কর্মময় জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃণাল সরকার। সংগঠনের কার্যপরিধি তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সাংবাদিক মাহফুজা জেসমিন ও তামজীদ সিদ্দিকী স্পন্দন।
হিলাল ফয়েজী বলেন, গৌরবজ্জল অতীতের পথ ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক, ন্যায় ও সমতাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন জাগরণ সৃষ্টির প্রয়াসে আমরা একাত্তরের যাত্রা শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মের হাতে দেশের দায়িত্ব তুলে দিতে চাই। তারাই হবে আগামীর বাংলাদেশ। আমরা এমন প্রজন্ম চাই যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি।
মাহবুব জামান বলেন, ‘আমরা একাত্তর’ মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক সংগঠন। ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের উত্থানের সময় আমরা বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ‘আমরা একাত্তর’ ব্যানারে একত্র হলেও এর কার্যক্রম তেমন অগ্রসর হয়নি। তবে করোনাকালসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নানা ধরনের মানবিক সহায়তা নিয়ে আমরা মানুষের পাশে থেকেছি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা এবং নানা সংকটেও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে থেকে শক্তি ও বিশ্বাস জুগিয়েছি। সাংগঠনিকভাবে এই প্রেষ্ঠা অব্যাহত থাকবে।
সম্মাননা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর উত্তম), নাসির উদ্দিন ইউসুফ, জিল্লুর রহমান দুলাল, খায়রুল আহসান খাঁন, আনোয়ার হোসেন, মোহাম্মদ শাহ আলম, মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, পরিমল চন্দ্র শীল, মো. নূর আলী, প্রদীপ চক্রবর্তী, কার্তিক চ্যাটার্জি, অজয় দাস গুপ্ত, ডাঃ আমজাদ হোসেন, ডাঃ দিপা ইসলাম, মিজানুর রহমান খাঁন (বীর প্রতীক), এনামুল হক চৌধুরী খসরু, দিল আফরোজ দিলু, রোকেয়া কবির, লক্ষ্মী চ্যাটার্জি, আনোয়ার জাহিদ, এ,এস,এম সবুর, মাহমুদ সেলিম প্রমুখ।
অন্যদিকে তরুণের প্রতিনিধিদের মধ্যে সন্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন–শহীদসন্তান জাহীদ রেজা নূর, অনুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা, এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার, অ্যান্টার্কটিকা বিজয়ী মহুয়া রউফ, আয়রনম্যান ইমতিয়াজ এলাহীল, নৃত্যশিল্পী পূজা সেন গুপ্ত, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও সাংবাদিক আবু সালেহ রনি, তামান্না মিনহাজ, আজিজুল পারভেজ প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে সাংগঠনিক অধিবেশনে সংগঠনের কমিটি গঠন করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন