৬৮ বছর পর ভোট দেবেন সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া বিলুপ্ত ছিটের মানুষ
কুড়িগ্রামে ৬৮ বছর পর ভোট দেবেন সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া বিলুপ্ত ছিটের মানুষজন। তাই জমে উঠেছে বিলুপ্ত ছিট লাগোয়া ৬ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।
৬৮ বছরের বন্দীদশা থেকে মুক্ত সদ্য বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পাওয়া বিলুপ্ত ছিটের মানুষজন এ নির্বাচনে ভোটার হওয়ায় ভোট উৎসবে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত প্রচার-প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দাদের জীবন-মান উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন ও বিলুপ্ত ছিটমহল সংযুক্ত হওয়ায় এ নির্বাচন মর্যাদার লড়াইয়ে পরিনত হয়েছে প্রার্থী ও সমর্থকদের কাছে।
আগামী ৩১ অক্টোবর ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়া লাগোয়া ফুলবাড়ী, কাশিপুর ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল লাগোয়া পাথরডুবি, শিলকুড়ি ও ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। প্রচার প্রচারনায় জমে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। দুই উপজেলার ১২টি বিলুপ্ত ছিটের ২ হাজার ৯শ ৯২ জন ভোটার বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে এই প্রথম ভোট দেবেন। প্রার্থী ও সমর্থকরা ভোটারদের কাছে টানতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। ভোটাররাও হিসেব কষছেন আগামী ৫ বছর সুখে দুখে তাদের পাশে থাকবেন এরকম প্রার্থী নির্বাচন করার।
ফুলবাড়ী উপজেলার ৩ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ১৬, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৫১ এবং সাধারন সদস্য পদে ১০৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এ ৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৭১ হাজার ৭শ ৫২ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৪৬টি। এর মধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ার ছড়ার ভোটার সংখ্যা ২৭০০ জন।
অন্যদিকে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ৩ ইউনিয়নে চেয়াম্যান পদে ১৫, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩৩ এবং সাধারন সদস্য পদে ৯৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। এ ৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার ৬৩ হাজার ৩শ ৫৯। মোট ভোট কেন্দ্র ৩৮টি। এর মধ্যে সেউতি কুরশা, বড় গাঁওচুলকা, সাহেবগঞ্জসহ ১০টি বিলুপ্ত ছিটমহলের ভোটার সংখ্যা ২৯২ জন।
দাসিয়ার ছড়া বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা জানান, বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এরপর প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে পছন্দমত প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবেন এ খুশি যেন তাদের ঈদের খুশির মত।
বিলুপ্ত ছিট দাসিয়ার ছড়ার কামালপুর গ্রামের ১শ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল হাকিম জানান, আমার বয়স বর্তমানে একশো বছর। আর কতদিন বাঁচবো জানি না। মৃত্যুর আগে ভোট দিতে পারবো এটাই আমার কাছে সবচেয়ে খুশির বিষয়।
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ অংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, প্রথম ভোট দিতে পারবে বলে ছিটের বাসিন্দারা অত্যন্ত খুশি। বিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় ছিট দাসিয়ার ছড়ায় সরকারী হিসেব মতে ৭ হাজার মানুষের বসবাস। আর এর মধ্যে ভোটার হয়েছে ২৭০০ মানুষ। আরো ৪ শতাধিক মানুষ ভোটার হতে পারেনি। এই দীর্ঘ আন্দোলনের পর মুক্তি পাওয়া সকল মানুষ একসাথে ভোট দিতে পারলে আরো বেশি ভালো হতো। নৌকা, ধানের শীষ এবং লাঙ্গল প্রতীকে প্রার্থীরা শতভাগ বিজয়ী হওয়ার আশা করলেও স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরাও প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার জন্য মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার দেলোয়ার হোসেন বলেন, সীমান্তবর্তী ২ উপজেলা ও সদ্য বিলুপ্ত ৬ টি ইউনিয়নের ছিটের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। তাদের এ ভোট উৎসব যেনো কোনো কারণে বিষাদে রুপ না নেয় সে দিকে কঠোর দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন