৭১ এর ধাঁচে নারী নির্যাতন এবার বেলুচিস্তানে?
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নারীদের অপহরণ করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছে বলে দাবি করে করিমা বালোচ নামের এক নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইট করেছেন। সম্প্রতি নোবেলজয়ী পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী মালালা ইউসুফজাইকে উদ্দেশ্য করে লেখা ওই টুইটে তিনি বলেন,‘প্রিয় মালালা, তুমি কি একবার পাকিস্তান অধিকৃত বেলুচিস্তানে এই অমানবিকতার বিরুদ্ধে কথা বলবে?
বালোচ স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের (BSO) নেত্রী করিমা বালোচ তার টুইটের পাশাপাশি ছবিও পোস্ট করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি গাড়িতে করে নারীদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
টুইটে করিমা বালোচ লিখেছেন, এই মহিলাদের অপহরণ করে কোহিস্তানের মারি সেনা ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
সোশাল সাইটে এই ছবি প্রকাশ হতেই একের পর মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যের লড়াই চলছে।
এ প্রসঙ্গে করিমা অন্য একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানিরা বালোচ শিশুদেরকে সন্ত্রাসীর চোখে দেখে। অথচ তারা লাদেন আর মোল্লা মানসুরের মতো লোকদেরকে আশ্রয় দেয়।’
৭ সেপ্টেম্বরের এক টুইটে করিমা লিখেছেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কুকর্মের ইতিহাস বাংলাদেশের জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। পাক সেনারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মোকাবেলা করতে পারে না, কিন্তু বেলুচিস্তানের নারী-শিশুদের ওপর সাহস দেখাতে পারে।’
আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে যুদ্ধপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেমের ফাঁসি হয়েছে। বেলুচিস্তানে যারা যুদ্ধাপরাধ করছে তাদের ভাগ্যও মীর কাসেমের মতো।
গত কয়েক দিনের করা টুইটে করিমা বালোচ নারী ও শিশুদের বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী টুরবাত এলাকার মানুষজনকে অবরোধ করে রেখেছে। তারা নারী ও শিশুদের অপহরণ করছে। প্রতিবেশিরা শিশুদের কান্নাও শুনেছে। অবরোধের কারণে নারী ও শিশুরা খাদের অভাবে রয়েছে।
বালোচিস্তানের স্বাধিকারের দাবিতে সরব বিভিন্ন সংগঠন৷ বেলুচিন্তান শত নিপীড়ন সত্ত্বেও তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন জারি রেখেছে। আর কেন্দ্রীয় পাক শাসন তাদের প্রতি চরম দমননীতি বহাল রেখেছে হত্যা ও পীড়নের মাধ্যমে।
৪৫ বছর আগে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জিত হয়। জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধের সময় পাক সেনারা
এ দেশে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুঠতরাজ ও নারী ধর্ষণের উল্লাসে মেতে উঠেছিল। ওই সময় নারীদের সেনা ক্যাম্পে তুলে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হতো। অভিযোগ রয়েছে সাড়ে তিন লাখ নারীকে পাকিস্তানি সেনারা ধর্ষণ করেছিল।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৪১ বছর পর পাকিস্তানের আরেকটি অংশ বেলুচিস্তান আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় একই ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে।
পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ বেলুচিস্তান দেশটির ৪৪ শতাংশ ভূভাগ দখল করে আছে। তেল, গ্যাস, তামা, সোনাসহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ সম্পদে প্রদেশটি সমৃদ্ধ। ইরান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত এই প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত। আফগানিস্তানের তালেবান নেতারা বেলুচিস্তান ঘাঁটি গেড়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগে থেকে অভিযোগ করে আসছে। সরকার বলেছে, আফগান তালেবানের পাশাপাশি স্থানীয় উগ্রপন্থী জাতীয়তাবাদী আদিবাসীরাও বেলুচিস্তানে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।
১৯৪৮ সালের ২৭ মার্চ বেলুচিস্তানে সামরিক আগ্রাসন ও জবরদখলের মধ্য দিয়ে দেশটার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন শুরু হয়। আবার পাকিস্তানিদের এ বেআইনি দখলদারির বিরুদ্ধে প্রথম দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় বালুচ জাতির লড়াই। বাঙালির স্বাধীনতা-সংগ্রাম শুরু ১৯৭১ সালে এবং ৯ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। বালুচদের সংগ্রাম আজও পরিণতি পায়নি। বালুচদের স্বাধীনতা-সংগ্রাম পরিণতি না পাওয়ার অন্যতম কারণ, তারা বিভিন্ন উপজাতি জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত। একসঙ্গে সব উপজাতি জনগোষ্ঠী লড়াই-সংগ্রাম চালাতে পারেনি। কোনো না কোনো উপজাতি জনগোষ্ঠী পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আপস করেছে। সরকারও তাদের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে বশে আনতে সচেষ্ট থেকেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন