৯৬ ভাগ বেতন বাড়ছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীদের
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের বেতন ৯৬ ভাগ এবং ভাতা প্রায় ৩ গুণ বাড়িয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে জাতীয় সংসদে।
দশম সংসদের নবম অধিবেশনে সোমবার সংসদ কার্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ সংক্রান্ত আলাদা তিনটি বিল উত্থাপন করেন।
বিল তিনটি হলো— দ্য প্রেসিডেন্টস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৬, দ্য প্রাইমমিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৬, দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব স্ট্যাট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেম্যুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) (এমেন্ডমেন্ট) বিল ২০১৬।
সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিল তিনটি সংসদে উত্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়া গেছে।
সংশোধিত বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৪৭ হাজার ৮০০ থেকে ৯২ হাজার টাকা এবং উপমন্ত্রীর বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হওয়ায় এবং দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা সামঞ্জস্য রক্ষা করে পুনঃনির্ধারণের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনের অধিকতর সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিল উপস্থাপন করা হলো।
গত বছরের ১৯ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। আইনের প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নতুন হারের এই বেতন কার্যকর হয় গত বছরের ১ জুলাই থেকে। তবে ভাতা কার্যকর হবে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে। এর আগে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের বেতন বাড়ানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় ৩১ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও দু’জন উপমন্ত্রী রয়েছেন। আর মন্ত্রী মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা রয়েছেন পাঁচজন।
সংশোধনী আইনের প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি বিমানে ভ্রমণ করলে তার বীমার জন্য আগের ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে আইন সংশোধনের পর ২৭ লাখ টাকা হারে তা পাবেন। তবে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন তহবিলে আগের মতোই দুই কোটি টাকা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। সুবিধা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি বাড়িতে থাকলে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ পাবেন ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আইন সংশোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর বিমান ভ্রমণের বীমার সীমা ১৪ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা হারে পাবেন। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর দৈনিক ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ১ কোটি থেকে বাড়িয়ে দেড় কোটি টাকা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে পূর্ণমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। মন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৬ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মন্ত্রীরা বেসরকারি বাড়িতে বসবাস করলে বাসা ভাড়া পাবেন ৮০ হাজার টাকা। আগে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার টাকা। মন্ত্রীরা স্বেচ্ছায় বেসরকারি বাড়িতে বসবাস করলে এখন ২৫ হাজার টাকা ভাতা পান। এ ছাড়া মন্ত্রীদের বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৮ লাখ, দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৪৭ হাজার ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ৯২ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৪ হাজার থেকে বেড়ে সাড়ে সাত হাজার টাকা, বেসরকারি বাড়িতে বসবাসের ক্ষেত্রে ভাতা ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার, বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখ থেকে ৮ লাখ, দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের আকার ৩ লাখ বাড়িয়ে সাড়ে ৭ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
উপমন্ত্রীর বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া উপমন্ত্রীদের ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা, বেসরকারি বাড়িতে বসবাসের ভাতা ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার টাকা, বিমান ভ্রমণে বীমার সীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৮ লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা এবং স্বেচ্ছাধীন তহবিলের পরিমাণ ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
কোস্টগার্ড বিল উত্থাপিত
কোস্টগার্ড বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আইনের বিধানের প্রস্তাব করে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বিল, ২০১৬ সংসদে উত্থাপিত হয়।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিলটি উত্থাপন করেন। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন