অয়নের পাইলট হওয়ার স্বপ্ন কেড়ে নিল ফড়িং!
পাখি, ফড়িং, মাছি কীভাবে উড়ে? ছোট বয়স থেকেই বাবা-মায়ের কাছে এই প্রশ্নে উত্তর খুঁজতো পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র অয়ন মণ্ডল (১১)। এই ভেবে ছোট থেকেই পাখি, ফড়িং আর মাছির উড়াউড়ির সঙ্গে সময় কেঁটেছে তার। উড়ন্ত জীবের সঙ্গে খেলতে খেলতে একদিন স্বপ্ন দেখেছে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানোর। বড় হয়ে পাইলট হবে সে। বাবা-মা’ও শিশুর এমন স্বপ্নের কাছে বাধা হননি কখনো। তাদের সকল প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শিশুটির লক্ষ্যপূরণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে চলেছেন। কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনা শিশুটির পাইলট হওয়ার স্বপ্নকে মিথ্যে করে দিল। দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও অধরা স্বপ্নের কথা চিন্তা করে তার সময় কাটে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে, জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়েই।
গত ১৩ আগস্ট সোমবারের ঘটনা। মুন্সিগঞ্জের সিরাজগঞ্জ থানার তাবিরপাড়া গ্রামের দু’তলা ভবনের ছাদে খেলছিল শিশু অয়ন। হঠাৎ উড়ে এলো একটি ফড়িং। আর সেটি ধরতে গিয়েই দু’হাত হারাতে হলো শিশু অয়ন মণ্ডলকে।
বার্ন ইউনিটে শিশুটির সঙ্গে কথা বলতে গেলে সে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লো। জানালো, ছাদে ফড়িং ধরতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে তার হাত লাগে। এরপর বিদ্যুতের তরঙ্গ টেনে নিয়ে নীচে ফেলে দেয় তাকে। জ্ঞান হারানোয় তার আর কিছুই মনে নেই।
লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে, সেখান থেকেই বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় ছোট্ট অয়নকে। জ্ঞান ফিরে সে দেখতে পায় তার হাত দু’টি কেটে ফেলা হয়েছে। তার কেটে ফেলা হাতগুলোর দিকে তাকিয়ে সে বলতে থাকে- ‘আচ্ছা বলো তো এখন আমি কীভাবে লেখাপড়া করবো, আর খাওয়া-দাওয়াই করবো কি করে? আমার তো আর হাত নেই।’
চোখের পানি মুছতে মুছতে শিশুটির মা শোভা মণ্ডল বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে অয়নের বাবা স্বপন মণ্ডল ধারদেনা করে বিদেশে গেছে। এরই মধ্যে আবার ছেলের এই অবস্থা। ছেলেটির খুব সখ ছিল বড় হয়ে পাইলট হবে। সেই ধ্যান থেকেই সে পড়াশুনা করতো। পড়াশুনায় সে খুব ভালো। কিন্তু তার পাইলট হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো। আর হয়তো কোনোদিন আমার ছেলে পাইলট হতে পারবে না।’ আবার কেঁদে দিলেন শোভা।
এক ভাই এক বোনের মধ্যে অয়ন মণ্ডল পরিবারের বড় সন্তান। তার ছোট বোনের নাম পূজা মণ্ডল। সে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। শোভা বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে চিকিৎসা খরচ চালাচ্ছি। এ পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। জমি বন্ধক রেখে খরচ চালাচ্ছি। এখনো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।’
অসুস্থ্যতার কারণে শিশুটি হাসপাতালের বাইরে বের হতে পারছে না অনেকদিন। তাই বার্ন ইউনিটের চতুর্থ তলার জানালার পাশটা তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে বসেই হয়তো তার পাইলট হওয়ার স্বপ্ন আকাশে উড়ে যেতে দেখতে পায়। তবুও নিষ্পলক চোখে শিশুটি জানালা দিয়েই তাকিয়ে রয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
হঠাৎ বাস বন্ধ, বিপাকে যাত্রীরা
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট এলাকার বাসস্ট্যান্ড থেকে আজ সববিস্তারিত পড়ুন
স্বামীকে ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার গার্মেন্টস কর্মী
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মার চরে এক গার্মেন্টস কর্মীকেবিস্তারিত পড়ুন
ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে ভাই খুন
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের খাসের হাট এলাকার চাচাতো ভাইয়েরবিস্তারিত পড়ুন