শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

এশিয়ার সেই সর্ববৃহৎ যৌনপল্লীর অজানা গল্প

যৌনপেশা পৃথিবীর অনেক পুরাতন পেশার মধ্যে একটি। ইতিহাস এমনও কয়েকটি শহরের সাক্ষ্য দেয় যে সেই শহরগুলো পুরোটিই ছিল যৌনপল্লী। বিভিন্ন স্থান থেকে সৈনিক ও সাধারণ মানুষেরা তাদের যৌনক্ষুধা মেটানোর জন্য ওই শহরগুলোতে যেত। এরমধ্যে অন্যতম ছিল বর্তমান ইতালির পম্পেই শহর। বিষুভিয়াসের লাভায় ওই গোটা শহরটিই ধ্বংস হয়ে গেলেও কিন্তু এই পেশা থেমে থাকেনি। পৃথিবীর হাতে গোনা একটি দুটি দেশ ছাড়া প্রত্যেকটি দেশেই রয়েছে যৌনপল্লী। এশিয়ার সবচেয়ে বড় যৌনপল্লীটি অবস্থিত ভারতের একসময়কার রাজধানী কলাকাতায়। শহরটির চারশ বছরের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে সোনাগাছি নামে এই যৌনপল্লীর নাম। শুধু তাই নয়, বাংলা সাহিত্যের আনাচে কানাঁচে বিভিন্নভাবে উঠে এসেছে এর নাম। ব্রিটিশ সরকারের আমলেই মূলত সোনাগাছি বৃহৎ রূপ পায়। এরপর স্বাধীন ভারতে ক্রমশ এই এলাকার ব্যাপ্তি বাড়তে থাকে। যে কারণে একটা সময় পুরো অঞ্চলটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে রেডলাইট জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সোনাগাছিতে যৌনপেশায় দীর্ঘদিন ধরে আছেন ৩৯ বছর বয়সী গীতা দাস। নিজেকে তিনি এখন আর এই এলাকার বাইরের কেউ ভাবেন না। উল্টো তিনি বলেন, ‘আমি একজন যৌনকর্মী। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং বৈমানিকদের মতো আমার পেশা হলো যৌন তৃপ্তি দেয়া।’ গীতার যখন মাত্র ১৬ বছর বয়স তখন প্রথমবারের মতো তিনি এই অঞ্চলে আসেন এবং এরপর থেকে তার ভাগ্য এখোনেই বাঁধা পরে যায়। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে সোনাগাছিতে প্রায় সাত হাজার যৌনকর্মী রয়েছে, যারা ভারত ও পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন। গীতার যখন মাত্র ১২ বছর বয়স তখন ৩৭ বছর বয়সী এক পুরুষের সঙ্গে তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়। স্বামীর হাতে ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুই সন্তানের হাত ধরে অল্প বয়সেই বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু বাপের বাড়ির আর্থিক অস্বচ্ছলতা তাকে ঠেলে দেয় কলকাতার দিকে জীবিকার সন্ধানে। কলকাতায় কিছুদিন থাকার পর এক বন্ধু তাকে নিয়ে আসেন সোনাগাছিতে। ‘এখানে আসার ফলে আমার জীবন নিরাপদ ও নিশ্চিত হয়। আমার দুই সন্তানই এখন তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন এবং তারা কাজ করছে। আমি যদি বাড়িতে থাকতাম তাহলে কি তাদের পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারতাম? সমাজের উচিত আগে তাদের নিজেদের দিকে তাকানো, আমাদের দিকে আঙ্গুল তোলার আগে। কেউ কি আমাদের চাকরি দিয়েছিল?’ গীতা দাসের কণ্ঠে আরও উঠে আসে, ‘আমরা যারা সোনাগছিতে আছি তাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের স্বামীরা যদি আমাদের ছেড়ে চলে যায় তাহলে আমরা কি করতে পারি। আমাদের অধিকাংশেরই কোনো শিক্ষা নেই এবং দুটো অথবা তিনটে সন্তান আছে। হ্যা, আমরা বাসা বাড়িতে কাজ করতে পারতাম সত্যি, কিন্তু সেখানেও পুরুষেরা আমাদের উপর অত্যাচার করতে ছাড়েনি। সমাজে আত্মমর্যাদা নিয়ে টিকতে গেলে অর্থ অনেক জরুরী।’ CHILDRENসোনাগাছিতে অধিকাংশ যৌনকর্মীই নিজের পরিচয় হিসেবে ভিন্ন নাম ব্যবহার করে পিতা-মাতার দেয়া নামের পরিবর্তে। কারণ তারা নিজেরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও তাদের পরিবারতো আর সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। তাই তাদের কারণে সমাজ যেন পরিবারের কোনো ক্ষতি বা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ না করতে পারে সেজন্যই তারা ভিন্ন নাম ব্যবহার করেন। আবার অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র যৌনতৃপ্তির জন্যই এই পেশা বেছে নেন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে। এরকমই একজন নারী বলেন, ‘বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যৌনতা আমার কাছে অনেক উত্তেজনাকর। ওরা আমাকে ভাসমান যৌনকর্মী বলে কারণে আমি কাজ শেষে বাসায় চলে যাই, সোনাগাছিতে থাকি না। আমার একমাত্র ভয় হলো আমার সন্তান যদি কখনও আমার কাজ সম্পর্কে জেনে যায়। আমার এক বন্ধুর সন্তান তার মায়ের এই কাজ সম্পর্কে জেনে গিয়েছিল। আর এটাই আমার অনেক ভয়ের কারণে। আমি দুটো জীবন যাপন করি এবং এটা আমাকে করতেই হবে।’ তবে কিছুক্ষণ কথা বলার পর জানা যায় তিনিও মূলত তার রোগাক্রান্ত বাবা-মার চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্যই এই কাজ করেন। ‘এই কাজ আমাকে অর্থ এবং আনন্দ দেয়। পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন শ্রেনিতে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। যতদিন পর্যন্ত খদ্দেররা আমাকে চাইকে ততদিন আমি এই কাজ চালিয়ে যাবো।’ এই পেশায় যারা বয়স্ক হয়ে যায় তাদের অধিকাংশেরই আর সোনাগাছিতে জায়গা হয় না। এমনই একজন ৫৫ বছর বয়সী পূর্ণিমা চ্যাটার্জি। পূর্ণিমার জন্ম হয়েছিল একটি বৃহৎ পরিবারে এবং তার নিজ বাবা তাকে এই পেশায় ঢুকিয়ে দেয়। ‘আমি কারও স্ত্রী হতে পারতাম, কারও পুত্রবধূ হতে পারতাম। কিন্তু তারপরেও আমি আমার বাবাকে দোষারোপ করি না। এটা আমার ভাগ্য। ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল এভাবেই আমাকে আমার পাঁচ সন্তান ও বাবা-মার দেখাশুনা করতে হবে। আমি শুধু ঈশ্বরের ইচ্ছেয় আমার দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু এখন আমার কেউ নেই, অর্থ উপার্জনেরও সক্ষমতা নেই আর। আর কয়েক বছর পরে আমার ভাগ্যে কি ঘটবে আমি জানি না।’ নিজের ভাগ্য নিয়ে এভাবেই বললেন পূর্ণিমা। ভারতে যৌনপেশা অবৈধ হলেও সোনাগাছি নিয়ে কোনো টানাহেচড়া করে না সরকার। কলকাতার সরকার এই মানুষগুলোর জীবন এবং তাদের জীবিকাকে মেনে নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনো সরকারই সোনাগাছিকে উচ্ছেদ করতে চায়নি। হয়তোবা এটা কতকটা সংস্কৃতিগত কারণে, কতকটা রাজনৈতিক কারণে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘবছর কমিউনিস্ট শাসন থাকার পরেও যেহেতু সোনাগাছির মতো স্বীকৃত যৌনপল্লীর কিছু হয়নি, তাই এর শেকড় যে অনেক গভীরে পুতে রাখা আছে সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

হত্যাকাণ্ডসহ সব অনভিপ্রেত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল।বিস্তারিত পড়ুন

রাজধানীর শনির আখড়া ও ধনিয়ায় গুলিবিদ্ধ ৬

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিআখড়া ও ধনিয়া এলাকায় ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন

বিমানের লাগেজ থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার

 ৪ কেজি ৪২০ গ্রাম স্বর্ণের বার হযরত শাহজালাল আন্তর্জা‌তিক বিমানবন্দরবিস্তারিত পড়ুন

  • মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি তোলায় শিক্ষকের কারাদণ্ড
  • বেনজীরের ঢাবি’র পিএইচডি ডিগ্রি বাতিলের প্রস্তাব
  • মতিউর গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে দেশেই আছেন 
  • কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালানোর সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ কয়েদি গ্রেফতার
  • রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীর আত্মহত্যা
  • চাঁদা তুলে পরিবার চালানোর অধিকার রাজনীতিবিদদের নেই: ওবায়দুল কাদের
  • চাঁদপুরে যৌথ অভিযানে ১১ মণ জেলিযুক্ত চিংড়ি জব্দ
  • কুড়িগ্রামে অবৈধ জাল বিক্রি ও মজুদের দায়ে তিনজনকে কারাদণ্ড
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • নান্দাইলে চাচাতো ভাইয়ের হাতে চাচাতো ভাই খুন
  • আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তেমন অভিযোগ আসেনি, হলে বিচার হবে: ওবায়দুল কাদেরের
  • সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা