‘জঙ্গি’ সাইফুরের ছবি দেখে চিনেছেন বাবা

গাজীপুরে পুলিশের অভিযানে নিহত সাত জঙ্গির একজন সাইফুর রহমান ওরফে বাবলু। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়নের মনিরগাতি গ্রামে।
পরিবারের লোকজন নিহত জঙ্গিদের ছবি দেখে প্রাথমিকভাবে সাইফুর রহমানের বলে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার রাতে সাইফুর রহমানের বাবা মতিউর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের ছবি দেখানো হলে তাদের মধ্যে লাল টি-শার্ট পরা তরুণই তাঁর একমাত্র ছেলে সাইফুর ইসলাম ওরফে বাবলুর ছবি। সাইফুর রহমান সিলেট ও সুনামগঞ্জে- দুই জায়গাতেই থাকতেন। প্রায় দুই মাস ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ২০১২ সালে তিনি ছাতক উপজেলার শুকুরুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে সিলেটের রায়নগর এলাকার সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজে ভর্তি হন। সিলেটে ফুপুর বাসা এবং মনিরগাতির বাড়ি- দুই জায়গাতেই থাকতেন সাইফুর রহমান।
২০১৪ সালে তিনি সেখান থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিয়েও ভর্তি হতে পারেননি। পরে সিলেটের এমসি কলেজে ভর্তি হয়েছেন বলে বাবাকে জানিয়েছিলেন সাইফুর রহমান।
মতিউর রহমান আরো জানান, প্রায় দুই-আড়াই মাস আগে হঠাৎ করেই সাইফুর রহমান নিখোঁজ হন। এর পর থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সন্ধান না পেয়ে তিনি বিষয়টি স্থানীয় খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে রাখেন। এই দুই মাস পরিবারের কারো সঙ্গে সাইফুরের কোনো যোগাযোগ হয়নি বলেও জানান তিনি।
খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মছব্বির জানান, গতকাল সোমবার গাজীপুর থানা থেকে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে সাইফুর রহমান সম্পর্কে তথ্য নেন। তাঁর কাছে নিহত জঙ্গিদের ছবি পাঠালে তিনি সাইফুরের বাবা ও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাবা-মা ছবি দেখে নিশ্চিত করেন পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গিই সাইফুর রহমান। মঙ্গলবার ছাতক থানার পুলিশও মনিরগাতি গ্রামে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে এসেছে।
জানা যায়, সাইফুর রহমানের বাবা মতিউর রহমান পেশায় গবাদি পশু বেনাবেচা করেন। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সাইফুর রহমান সবার বড়। এক মেয়ে কলেজে, অন্যজন স্কুলে পড়ে। তিনি বলেন, ‘ছবি দেখে মনে হয়েছে, সাইফুর রহমানই। আমি গরিব মানুষ। ছেলেমেয়েদের অনেক কষ্টে লেখাপড়া করাচ্ছি। সাইফুর সব সময় খুব শান্ত ছিল। কীভাবে কী হলো কিছুই বুঝতে পারছি না।’ ছেলের লাশ আনতে যাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ভাইদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেব। যেতে তো হবেই।’
এ ব্যাপারে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশেক সুজা মামুন বলেন, ‘আমরা ঢাকা থেকে যে নাম-ঠিকানা ও ছবি পেয়েছিলাম সে অনুযায়ী খোঁজখবর নিয়েছি। তবে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। সাইফুর রহমানের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি।’
গত ৮ অক্টোবর গাজীপুরের পাতারটেক এলাকায় একটি বাড়িতে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সাতজন এবং হাড়িনাল এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হন। একই দিন গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নয় মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। গুলিতে সবাই নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। পরে তাঁদের লাশ ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

দেশের কয়েকটি অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্কতা
দেশের সাতটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিবিস্তারিত পড়ুন

শিবির সভাপতি: অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে পারেনি
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকার পুরোপুরি ব্যর্থবিস্তারিত পড়ুন

মহাকাশে কতগুলো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, শীর্ষে কোন দেশ?
এখন পর্যন্ত পৃথিবীর কক্ষপথে মোট ৩০ হাজারের বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণবিস্তারিত পড়ুন