জিয়াসহ সব ক’টি কবর সংসদ এলাকা থেকে সরছে
জাতীয় সংসদ ভবনের সীমানা থেকে জিয়ার কবরসহ সব ক’টি কবর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে । সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর তাগাদার মুখে এসব কবর সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহের একনেক বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রী এসব কবর সরিয়ে নেওয়ার তাগাদা দিয়েছেন। তার তাগাদার পর নড়েচড়ে বসেছে পূর্ত অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ।
এখান থেকে সরিয়ে কোথায় এসব কবর নিয়ে যাওয়া হবে তা এখনো ঠিক করা না হলেও সরকার মহলে এ নিয়ে ভালোই তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে সামনে রাখা হচ্ছে সংসদ ভবন সীমানার পূর্ব প্রান্তে আসাদ এভিনিউর উল্টোদিকের প্রেট্রোল পাম্পটি সরিয়ে নেওয়ার নজির।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংসদ ভবনের দক্ষিণে ৭৪ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত চন্দ্রিমা উদ্যানের মধ্যিখানে এরশাদের শাসনামলে বিশাল এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠে জিয়ার মাজার কমপ্লেক্স। আর জিয়া ও এরশাদের শাসনামল মিলিয়ে সংসদ ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণে মানিক মিয়া এভিনিউ এর পূর্ব প্রান্ত লাগোয়া স্থানে পাঁচ বিঘারও বেশি জায়গায় ‘জাতীয় কবরস্থান’ নাম দিয়ে আরো অন্তত সাতজনকে সমাধিস্থ করা হয়।
এদের মধ্যে ১৯৭৯ সালে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ ও রাজনীতিক মসিউর রহমান যাদু মিয়া, ১৯৮০ সালে তমীজ উদ্দিন খান, ১৯৮২ সালে খান এ সবুর, এবং ১৯৯১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খানকে কবর দেওয়া হয়। প্রত্যেকের কবরে তোলা হয় পাকা সমাধিসৌধ। এছাড়া নাম-পরিচয়ের সাইনবোর্ডহীন আরো দু’টি কবর দেখা যায় এই ‘জাতীয় কবরস্থানে’। এর একটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজ এর।
তবে বর্তমানে এসব স্থাপনার আশপাশে ভাসমান পতিতাদের আড্ডা, প্রেমিক যুগলের মুখরিত পদচারণা ও চলে সীমানা প্রাচীরে শুয়ে দর্শনার্থীদের ছবি তোলার উৎসব। আর রাতে মাদকসেবীদের জমজমাট আসর বসে। সংসদ ভবন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৬১ সালে শুরু হয়ে ১৯৮২ সালে নির্মাণ শেষ হওয়া সংসদ ভবনের সীমানায় প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানে দেবাবশেষ আনা হয় সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। তবে তখনো এখানকার নাম ছিলো চন্দ্রিমা উদ্যান। অর্ধচন্দ্রাকৃতি ক্রিসেন্ট লেকের সাথে মিল রেখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এই চন্দ্রিমা উদ্যান নামটি দেন।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে চন্দ্রিমা উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে জিয়া উদ্যান নামকরণ করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জিয়া উদ্যানের নাম পরিবর্তন করে আবার চন্দ্রিমা উদ্যান করে। পরে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটার নাম পরিবর্তন করে ফের জিয়া উদ্যান নাম দেয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার আবার নাম পরিবর্তন করে চন্দ্রিমা উদ্যান রেখেছে।
জিয়াউর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্স নির্মাণ শুরু হয় ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। সমাধির পূর্ব ও পশ্চিমে রয়েছে ক্যান্টিন, দক্ষিণে ঝুলন্ত সেতু, উত্তরে মেমোরিয়াল হল ও মসজিদ। জিয়ার সমাধিতে যাওয়ার জন্য ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রিসেন্ট লেকের ওপর নির্মাণ করা হয় ঝুলন্ত সেতু।
মাজার-কবর সরানোর বিষয়ে জাতীয় সংসদের গণপূর্ত সার্কেল-৩ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ইএম) মো. আবুল হাসেম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি অনুধাবন করে একনেক সভায় তুলেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন মূল নকশায় না থাকলেও কিভাবে এটা এলো। তবে যাই হোক এখন সরকার থেকে সিদ্ধান্ত এলেই আমরা জিয়ার কবরসহ সংসদ ভবন এলাকার বাকী কবরগুলো সরিয়ে ফেলবো।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুমির আতঙ্কে গড়াই নদীর তীরে রাখা হচ্ছে ছাগল-হাঁস
কুষ্টিয়ার গড়াই নদীতে একাধিক কুমিরের “অস্তিত্ব মিলেছে”। ফলে আতঙ্কে নদীতেবিস্তারিত পড়ুন
বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলার ছাড়িয়েছে
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিটকয়েনের দাম ১,০০,০০০ ডলার ছাড়িয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পবিস্তারিত পড়ুন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য তাদের মুখেই চুনকালি পড়বে
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কোনো ধরনের হুমকির মধ্যে নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রবিস্তারিত পড়ুন