শিক্ষকরা অধ্যক্ষ পদ হারাচ্ছেন
শিক্ষকরা আর সরকারি অনার্স-মাস্টার্স এবং ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হতে পারবেন না। অষ্টম পে-স্কেলে নির্দেশিত গ্রেড বিন্যাসের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা বসতে যাচ্ছেন। খবর যুগান্তরের।
এছাড়া শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় পদগুলোও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হাত থেকে চলে যাচ্ছে। মূলত এসব বন্ধে সরকারি কলেজের শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করেছেন। তারা বৈষ্যম্য নিরসনে পাঁচ স্তরের পদ এবং নয় স্তরের বেতন কাঠামো দাবি করছেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার বলেন, অষ্টম পে-স্কেলে শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ ধাপ ‘অধ্যাপক’ পদ ৪র্থ গ্রেডে নামিয়ে আনা হয়েছে। অথচ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের পদ তৃতীয় গ্রেডের। গ্রেড পার্থক্যের কারণে একজন অধ্যাপক, অধ্যক্ষ পদে যেতে পারবেন না। শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলো প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত। এসব পদেও শিক্ষকদের যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকার সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করায় চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকের পক্ষে তৃতীয় বা তদূর্ধ্ব পদে যাওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষা প্রশাসনে সর্বোচ্চ উপ-পরিচালক হতে পারবেন শিক্ষকরা।
তিনি আরও বলেন, এসব সমস্যা সমাধানেই আমরা সরকারকে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছি। সেই সঙ্গে তিন দফা দাবিও জানিয়েছি। প্রস্তাবের মধ্যে আছে, পাঁচ স্তরের পদবিন্যাস করতে হবে। সর্বোচ্চ ধাপ হবে সিনিয়র অধ্যাপক। আর বেতন কাঠামো করতে হবে নয় স্তরের। অনুমোদিত অষ্টম পে-স্কেলে সৃষ্ট বৈষম্য ও ক্ষতি নিরসনে এই ‘রিমেডির’ (সমাধান) বিকল্প নেই।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগামীতে কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ পদগুলোতে শিক্ষকরা থাকতে পারছেন না’ এ ধরনের সমস্যার কথা তারা আমাকে জানিয়েছেন। আমি শিক্ষকদের কাছ থেকে সমস্যাগুলো ভালোভাবে বুঝে নিয়েছি। এগুলো নিয়ে কমিটির সদস্যরা বসব। আসলে শিক্ষা পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি এসব সমস্যা নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবেও কথা বলতাম। এখন কমিটিতে থাকার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে বলার সুযোগ পাব। সেখানে এসব তুলে ধরব। আশা করছি, সমস্যা থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে কারও সঙ্গে তুলনা করে নয়, মর্যাদা-ইজ্জত-সম্মান আর বেতনভাতার দিক থেকে আমরা শিক্ষকদের উচ্চকিত করতে চাই। সরকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও এ বিষয়ে সহানুভূতি রয়েছে।’
জানা গেছে, বর্তমানে কলেজ শিক্ষকদের চার স্তরের পদবিন্যাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে, প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক। সপ্তম পে-স্কেলে তারা আট স্তরে বেতন পেতেন। সম্প্রতি শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক এক নম্বর গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। সেই হিসাবে ৯টি গ্রেডেই যাওয়ার সুযোগ ছিল শিক্ষকদের। তবে অষ্টম পে-স্কেলে বেতন কাঠামো ৬টি স্তরে নামিয়ে আনা হয়েছে। অধ্যাপক পদ চতুর্থ গ্রেডে স্থির করায় তাদের মহাপরিচালক তো দূরের কথা, মাউশির পরিচালক, বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এমনকি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যাওয়ার পথও রুদ্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
এ প্রসঙ্গে আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার বলেন, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বাতিল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তম পে-স্কেলে অধ্যাপকদের প্রারম্ভিক গ্রেড ছিল ৪র্থ। ৫০ ভাগ সিলেকশন গ্রেড পেয়ে ৩য় গ্রেডে উন্নীত হতেন। সিলেকশন গ্রেড অধ্যাপকরাই বিভিন্ন অনার্স-মাস্টার্স ও ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ হতেন। এরাই ২য় গ্রেডের বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেয়েছেন। দুটি মহাপরিচালকের পদ সম্প্রতি এক নম্বর গ্রেড করা হয়েছে। সেখানেও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বসার সুযোগ ছিল। কিন্তু অষ্টম পে-স্কেলে শিক্ষকদের চতুর্থের পর অন্য কোনো গ্রেডে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি।
শিক্ষা ক্যাডারে বর্তমানে মোট সদস্য ১৫ হাজারের বেশি। এদের দাবি সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল করা হোক। অন্যথায় পদোন্নতি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তারা যে ক্ষতির শিকার হবেন তা কখনও পূরণ হবে না। ক্ষতির শিকার বিভিন্ন ব্যাচের মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে ২৪তম বিসিএসের শিক্ষক। যুগান্তর
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীবিস্তারিত পড়ুন
হাইকোর্টে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত
হাইকোর্ট বিভাগে ১২ জন বিচারপতিকে আপাতত প্রাথমিকভাবে কোনো বেঞ্চ দেওয়াবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁকা গ্রাফিতি হেঁটে দেখলেন ড. ইউনূস
জুলাই ও আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়বিস্তারিত পড়ুন