অদ্ভুত যত রীতিনীতির কথা জানলে শিউরে উঠবেন আপনি! (ছবিসহ)

তিব্বতিদের মাঝে প্রচলিত একটি রীতি হল আকাশ সমাধি। এই রীতি অনুযায়ী তিব্বতিরা কারো মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ বিভিন্ন অংশে কেটে পাহাড়ের মাঝে ছড়িয়ে দেয়, যাতে করে মৃতদেহের এসব অংশ পশুপাখিরা খেতে পারে। তিব্বতিরা মনে করে থাকে, জীবদ্দশায় তারা যেমন খাবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বহু পশুপাখি হত্যা করে, তেমনি মৃত্যুর পর তাদের মৃতদেহ পশুপাখিরা খেয়ে খাবারের চাহিদা মেটায়। তাদের ধারণা, এতে করে প্রকৃতিতে মানুষ ও পশুপাখির মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় থাকে।
মৃতদেহের গ্রাম ভ্রমণ: অদ্ভুত এই রীতির দেখা মেলে ইন্দোনেশিয়ায়। ইন্দোনেশিয়ার তোরাজা সম্প্রদায়ের কারো মৃত্যু নিজ গ্রামের বাইরে হলে তাকে নতুন জামাকাপড় পড়ে সাজিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরানো হয়। তারপর আবার কফিনে ঢুকিয়ে মৃতদেহের সৎকার করা হয়।
থাইপাসাম উৎসব: থাইপাসাম হল হিন্দুদের একটি ধর্মীয় উৎসব। দেবী মুরুগানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জন্মোৎসবে এই উৎসবটি পালন করা হয়ে থাকে। দেবী মুরুগানের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা জানিয়ে ভক্তরা মোটা শিক দিয়ে তাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ গেঁথে ফেলে। অনেকে আবার ভক্তি ও শ্রদ্ধায় অন্ধ নিজেকে এতোটাই উৎসর্গ করে বসেন যে নিজের রক্তাক্ত শরীর দিয়ে ওয়াগন পর্যন্ত টানেন। ভারত, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া ও মরিশাসে এই উৎসবের দেখা মেলে।
আঙ্গুল কেটে ভালোবাসা প্রকাশ: পরিবারের কোন সদস্যের মৃত্যুতে আঙ্গুল কেটে তার প্রতি ভালোবাসা জানায় ইন্দোনেশিয়ার দানি সম্প্রদায়ের লোকজনেরা। প্রিয়জনের মৃত্যুর পর আঙ্গুলের এক তৃতীয়াংশ কেটে ফেলে কাটা স্থান তার দিয়ে ভালো করে পেঁচিয়ে ফেলে। এতে ক্ষতটা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আঙ্গুল কাটার মাধ্যমে তারা তাদের প্রিয়জনদের সম্মান জানায় এবং জীবদ্দশায় তাকে কতোটা ভালোবাসতো, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
মৃতদেহের হাড় চূর্ণ করে স্যুপ বানানো: শুনতে খানিকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও পৃথিবীতে এমন কিছু উপজাতি আছে, যারা মৃতদেহের হাঁড় চূর্ণ করে স্যুপ বানিয়ে খায়। ইয়ানোমামি নামের উপজাতিটির দেখা মেলে ভেনেজুয়েলা এবং ব্রাজিলের সীমান্তে আমাজনের গহীন জঙ্গলে।
নিজ গোত্রের কারো মৃত্যু হলে তারা সেই মৃতদেহ পাতা দিয়ে ঢেকে ফেলে। পোকামাকড় মৃতদেহের মাংস খেয়ে ফেললে ৩০ থেকে ৪০ দিন পর পাতা সরিয়ে পড়ে থাকা হাড়গুলো বের করে আনা হয় এবং তা গুঁড়া করে রাখা হয়। মৃত ব্যক্তির মারা যাওয়ার ঠিক এক বছর পর হাড়ের গুঁড়াগুলো কলার স্যুপের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়। তাদের ধারণা, এতে করে মৃতের আত্মা শান্তি লাভ করবে।
দাঁত কেটে ফেলা: হিন্দু বালি সম্প্রদায়ের মতে দাঁত হল ষড়রিপুর প্রতীক। লোভ, কাম লালসা, তাড়না, রাগ, ঈর্ষা- এই ছয়টি কু-রিপুর প্রতীক হিসেবে দাঁতকে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তাই বিবাহের আগে কিংবা বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে বালি সম্প্রদায়ের লোকজন দাঁত কেটে ফেলে। মূলত পুরো দাঁত না কেটে তারা দাঁতের কিছু অংশ কেটে একটি নির্দিষ্ট আকৃতি দান করে।
ভাল্লুক হত্যা করে উপাসনা: জাপান ও রাশিয়ার আইনু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় উপাসনা হল ভাল্লুক হত্যা করা। আইনু সম্প্রদায়ের মতে, ভাল্লুক হল ইশ্বরের একটি রুপ যা মানুষের মাঝে বিদ্যমান। তাই তারা ভাল্লুক জবাই করাকে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর মনে করে থাকে। তবে তারা যে সে ভাল্লুক জবাই করে না। জবাই করার জন্য একটি মা ভাল্লুককে নির্ধারণ করে দুই বছর ধরে লালন-পালন করা হয়। দুই বছর পর ভাল্লুকটি যখন সন্তানের জন্ম দেয়, তখন সন্তানের সাথে মা ভাল্লুককে জবাই করা হয়। অতঃপর ভাল্লুকের রক্ত ও মাংস খাওয়া হিয় এবং ভাল্লুকের চামড়া দিয়ে ধর্মীয় উপাসনা করা হয়।
জ্বলন্ত কয়লার উপর গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটা: সন্তানের জন্ম দেওয়া একজন মায়ের জন্য যেমন অনেক বড় একটি প্রাপ্তি, তেমনি অনেক মধুর একটি আনন্দের উৎস। কিন্তু এই আনন্দের পাশাপাশি একজন মাকে সহ্য করতে হয় অসহনীয় গর্ভযন্ত্রণা। আর তাই স্ত্রীর গর্ভযন্ত্রণা কমাতে চীনের স্বামীরা গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে জ্বলন্ত কয়লায় উপর হেঁটে ঘরে প্রবেশ করে। তাদের ধারণা, এতে করে স্ত্রীর প্রসব বেদনা অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়া এই রীতির মাধ্যমে জ্বলন্ত কয়লার উপর হেঁটে পুরুষরাও স্ত্রীর গর্ভযন্ত্রণা অনুভব করার চেষ্টা করে থাকে।
মৃতের হাড় ঘিরে নৃত্য করা: মাদাগাস্কারের মালাগাসি গ্রোত্রের মানুষরা সাত বছর পরপর একবার তাদের মৃত স্বজনদের হাড় কবর থেকে বের করে। এরপর হাড়গুলো কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিয়ে তার চারপাশে নৃত্য করে। মৃতদেহের হাড় থেকে বাজে গন্ধ ছড়ায় জন্য তারা এর উপর ওয়াইন স্প্রে করে নেয়।
বিভিন্ন আকৃতির কফিনে সমাহিত করা: মৃতদেহ সৎকারের বিভিন্ন রীতির মধ্যে সবচেয়ে মজার একটি রীতি হল মৃত ব্যক্তি জীবদ্দশায় যে পেশার সাথে জড়িত ছিল, তাকে সেই পেশার সাথে সংযুক্ত কোন বস্তুর আকারের কফিনে সমাহিত করা হয়। যেমন- পাইলটকে বিমান আকারের কফিনে, গাড়ি ব্যবসায়ীকে গাড়ি আকৃতির কফিনে, জেলেকে মাছেত আকৃতির কফিনে সমাহিত করা হয়। বিচিত্র ও মজার এই রীতির দেখা পাওয়া যায় ঘানায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন

এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন

৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন