রাতে বিছানায় শুয়ে কি আপনি এ পাশ ও পাশ করেন? টানা ঘুম এখন আপনার স্বপ্নেরও অতীত? শুধু আপনি নন, অনেকেই ভুগছেন ইমসমনিয়া বা অনিদ্রায়। সবটাই নির্ভর করে আমাদের জীবনযাত্রার উপর। অতিরিক্ত স্ট্রেস, কাজের চাপ, সারা দিন স্মার্টফোনে চ্যাট ডেকে আনছে এই সমস্যা। যা পরবর্তীকালে ডেকে আনে আরও গুরুতর সমস্যা। জেনে  নিন অনিদ্রা দূর করতে কী করবেন।

১। ঘুমকে গুরুত্ব দিন- নিজের কাজকে আপনি যতটা গুরুত্ব দেন, ঘুমকেও ঠিক ততটা গুরুত্ব দিন। সারা দিনের সব কাজ শেষ করা যেমন জরুরি তেমনই প্রতি দিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমও অত্যন্ত জরুরি। তাই ঘুমকে আগ্রাধিকার দিন। আমরা কাজের চাপে অনেক সময়ই ঘুমের প্রয়োজন অবহেলা করি। অতিরিক্ত কাজের চাপ কিন্তু ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।

২। বিকেলের পর কফি নয়– অতিরিক্ত ক্যাফেন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই যদি আপনি অনিদ্রায় ভোগেন তবে জীবন থেকে কফি বাদ দিন। ঘুম থেকে উঠে বা ব্রেকফাস্টের সঙ্গে কফি তাও চলতে পারে। কিন্তু বিকেলের পর থেকে কফির কথা ভুলে যান।

৩। বিকেলে জিম নয়- নিয়মিত শরীর চর্চা ভাল ঘুমে সহায়। তবে বাড়িতে শরীরচর্চা করুন, জিমে যান বা সাঁতার কাটুন যাই করুন না কেন তা সকালের দিকে করুন। সারা দিন কাজের মান বাড়বে, রাতে ঘুমও ভাল হবে। কিন্তু সকাল থেকে আলস্যে কাটিয়ে বিকেলে জিম একেবারই নয়। বা ক্লান্ত শরীরে কখনই জিমে যাবেন না। এতে শরীর আরও ছেড়ে দেবে। উত্তেজনা বাড়বে, মেটাবলিজমেরও ক্ষতি হবে। যার প্রভাব পড়বে ঘুমে।

৪। বাড়ি ফিরে আরাম করুন- অফিসের কাজ শেষ করেই বাড়ি ফিরুন। ফিরতে দেরি হলে এসেই খেয়ে, ঘুমিয়ে পড়া ছাড়া উপায় থাকে না। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। হালকা গরম জলে গোসল করন। গরম চা খান। এতে ক্লান্তি দূর হবে। রাতে ঘুমও ভাল হবে। বাড়ি ফিরেই শুয়ে পড়বে না। তবে রিল্যাক্স আরাম করা মানে কিন্তু টিভি দেখা বা ফেসবুক করা একেবারেই না।

৫। বিছানায় ফোন নয়– ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড বিছানায় নিয়ে শুতে যাবেন না। অনিদ্রায় ভুগলে অনেকেই ফোন চালাতে শুরু করে দেন। ভাবেন এতে ঘুম ভাল হবে। ব্যাপারটা কিন্তু ঠিক উল্টো। এতে ঘুম আরও বিগড়ে যায়।

৬। মেডিটেশন- শুনতে কঠিন মনে হলেও নিয়মিত মেডিটেশন অনিদ্রার মোক্ষম ওষুধ। তবে মেডিটেশন কিন্তু অতটাও কঠিন নয়। বিছানায় শুয়ে ডিপ ব্রিদিং করতে থাকুন। সেই সঙ্গে আস্তে আস্তে সারা শরীর রিল্যাক্স করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস ওঠানামার দিকে মনযোগ দিন। মাথা হালকা হবে। ঘুম আসবে।

৭। সুগন্ধী- অ্যারোমাথেরাপি অয়েল ঘুমে সহায়ক। টয়লেট টিস্যুতে কয়েক ফোঁটা রোজ অয়েল বা অরগ্যানিক এসেনশিয়াল অয়েল নিয়ে ১০ থেকে ১৫ বার ডিপ ব্রিদিং করুন। এতেও ঘুম আসবে।

৮। সহজ যোগব্যায়াম- হালকা যোগব্যায়াম মস্তিষ্ক ঘুমের সঙ্কেত পাঠায়। ফরওয়ার্ড বেন্ড, কর্পস পোজ, হ্যাপি বেবি পোজ ঘুমে সাহায্য করে।