অভাবের তাড়নায় ৫’শ টাকায় সন্তান বিক্রি করলেন মা!
অভাবের তাড়নায় নিজের দেড় বছর বয়সী শিশুসন্তানকে বিক্রি করলেন দারিদ্র্যের কাছে পরাজিত এক গর্ভধারিনী মা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
শিশুসন্তান আশামনির মা বিলকিছ বেগম (২৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের দূর্গাপুর গ্রামের ওমর ফারুকের স্ত্রী এবং সরাইল উপজেলার পানিশ্বর গ্রামের দিল্লুর আলীর মেয়ে।
এ ঘটনায় আখাউড়াজুড়ে তোলপাড় চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাত্র ৫০০টাকার বিনিময়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি তার নিঃসন্তান আত্মীয়ের জন্য কিনে নেন শিশু আশামনিকে।
তবে সন্তান বিক্রি করে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জন্মদাত্রী মা বিলকিছ।
গত ২০জানুয়ারি রাতে সাদা কাগজে সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার আনুষ্ঠিকতা সারলেও সন্তান হস্তান্তরের পর থেকেই সন্তানের খোঁজে এবং সন্তানের মুখটি একনজর দেখার জন্য ক্রেতা রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে আর্তনাদ করে যাচ্ছেন বিলকিছ বেগম।
কিন্তু রুহুল আমিন কিছুতেই তার আত্মীয়ের ঠিকানা দিচ্ছেন না তাকে।
রোববার দুপুরে বিলকিছ বেগম এ প্রতিবেদক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সন্তান জন্মের পর আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। মাদকাসক্ত স্বামীর মাথাগুঁজার ঠাঁইটুকু নেই।
তিনি বলেন, আমি সহায়-সম্বলহীন মানুষ। এজন্য সন্তানকে নিয়ে আখাউড়ায় চলে আসি কাজের সন্ধানে। কোনো কাজ না পেয়ে অভাবের কারণে অসহায় হয়ে এবং সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সন্তানহীন এক দম্পতির জন্য নারায়নপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তির কাছে আমার সন্তানকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে তুলে দেই।’
বিলকিছ বেগম আরো বলেন, ‘সন্তানকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার পর আমি এক রাতও ঘুমাতে পারিনি, কোনো কাজেও মন বসছে না। এ জন্য ৯দিন যাবৎ আখাউড়ায় যে বাড়িতে (রুহুল আমিন) সন্তানকে দিয়েছিলাম, ওখানে গিয়ে বসে কাঁদতে থাকি। সন্তান তুলে দেয়ার সময় ওদের সঙ্গে যদিও আমার শর্ত ছিল- মন চাইলেই সন্তানের মুখ আমি দেখতে পারবো। কিন্তু ওরা এখন আমাকে সন্তানের দেখা না দিয়ে উল্টো এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হুমকি দেয়।’
সন্তানের জন্য দিশেহারা বিলকিছ বেগম বিলাপ করে বলেন, ‘আমার সন্তানকে একনজর না দেখলে আমি আত্মহত্যা করবো। আমি মরে যাবো। আমি সন্তানকে নিতে চাই না- একটি বার আমার যাদুর মুখটি দেখতে চাই।’
এ বিষয়ে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. মন্তাজ মিয়া বলেন, ওই নারী স্বেচ্ছায় তার শিশুসন্তান রুহুল আমিনের কাছে তুলে দেয়। এখন সন্তানের জন্য তিনি বিলাপ করলেও ওরা বাচ্চাটি দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, অভাবের তাড়নায় নাকি পারিবারিক সমস্যার কারণে সন্তান বিক্রি করেছে বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। যুগান্তর
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
প্রায় সাড়ে চার বছর পর আগামী ২৯ জুলাই থেকে চালুবিস্তারিত পড়ুন
ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু। ঈদুল আযহা উপলক্ষে চার দিনবিস্তারিত পড়ুন
সরাইলে ভূমিহীন পরিবারের মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ৪২ টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ভূমির দাবীতে মানববন্ধনবিস্তারিত পড়ুন