অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনে ৪ বার শারীরিক সম্পর্ক করেছে আমি কখনোই বাঁধা দেইনি
আপু প্লিজ আমার নাম প্রকাশ করবেন না। আমার বয়স ২৭ বছর। আমার আকদ হয়েছে ৩ মাস আগে। ১০ দিন আগে আমাকে উঠিয়ে আনে ছেলে পক্ষ। আমি নিজে বেশ ভাল বেতনের একজন চাকুরিজীবী। আমার স্বামী একজন বিসিএস ক্যাডার। আমাদের দুই পরিবারই অনেক স্বচ্ছল, ফেমাস।
বিয়েটা পারিবারিকভাবে হলেও বিয়ের আগের ৩ মাস ফোনে এসএমএস করতে করতে ওর সাথে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আকদ এর পর, উঠিয়ে নেয়ার আগেই ওর সাথে হানিমুনে যাই। সবাই জানে স্বামী আমার জন্য পাগল, আমাকে ভালোবাসে, আমাকে না দেখে থাকতে পারেনা, সারাক্ষণ কাছে কাছে থাকতে চায়। কিন্তু তারা যে কতোটা ভুল এটা আমি আজ জানলাম।
গতকাল ওকে দেয়া এক মেয়ের লাভ লেটার আমি দেখে ফেলি। ওখানে লেখা ছিল থ্যাংকস ফর অল ইউর কিসেস এন্ড হাগস। ওকে জিজ্ঞেস করার পর ও বলে যে আরও ২/৩ বছর আগে ও যখন ১টা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিত তখন কে বা কারা ওর ডেস্কের উপর এটা রেখে চলে যায়। মেয়েটি নিজের নাম লেখেনি ওখানে। আর আজ সকালে আমি এক মেয়ের সাথে ওর ফেবু চ্যাট হিস্টোরি পড়ে হতবাক হয়ে যাই। আমাকে উঠিয়ে আনার আগেরদিন সে এক মেয়েকে ফেবুতে লিখেছে নিড টু হাগ ইউ। মেয়ে লিখেছে হাগস। সে আবার লিখেছে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরব। সামনে থেকেও জড়িয়ে ধরব তোমাকে। শুনে মেয়ে বলেছে ধর। আমি আস্ক করার পর সে স্বীকার করেছে যে এসব লিখেছে, বাট ঐ মেয়েকে সে লাভ করেনা। সে বলেছে তার ভুল হয়ে গেছে। আমার কাছে হাতজোর করে ক্ষমা চাইছে সকাল থেকেই।
ও যে বিবাহিত এটা ঐ মেয়ে জানে। সে ওর ছোট মামাকে ডেকে এনেছিল মিটমাট করার জন্য। মামা বলেছে ঐ মেয়ের সাথে ওর বিয়ের কথা চলছিল বাট আমার শ্বশুর মেয়েকে পছন্দ না করায় বিয়েটা হয়নি। মামা আমার সামনে ওকে শাসন করেছে। স্বামীও ক্ষমা চেয়েছে। আমার স্বামী যথেষ্ট কেয়ারিং, সারাক্ষণ সাথে থাকতে চায়। এখানে বলে রাখি আমার পোষ্টিং ঢাকায় হলেও তারটা ঢাকা থেকে কিছুটা দূরে। সে আমাকে রেখে কর্মস্থলে যেতে চায়না, ঠেলে আমার পাঠাতে হয়। প্রতি বৃহ:স্পতিবার সে ঢাকায় আসে, রবিবার চলে যায়। জানেন আপু, ওর কাছ থেকে একটু দূরে সরলে এমনকী এক রুম থেকে অন্য রুমে গেলেই সে খুঁজতে খুঁজতে চলে আসে। আমার সাথে যথেষ্ট ভালো আচরণ করে, শ্বশুর বাড়ির সবাই আমাকে খুব আদর করে। আগামী ৬ মাস সন্তান নেবার কোন পরিকল্পনা ছিলনা আমাদের। আমাদের দুই পরিবারই আমাকে অনেক আদর করে। আমার স্বামীর ছোট আরেকটি ভাই আছে।
যাই হোক, সবাই আমার স্বামীকে অনেক নিরীহ, ভদ্র ছেলে হিসেবে জানে। মনে হয়না আমার কথা কেউ বিশ্বাস করবে। তবে আমি ওদের চ্যাট হিস্টোরির সব প্রমাণ রেখে দিয়েছি। তার প্রতি কখনোই কোন অযত্ন আমি করিনি, এমনকী বিছানাতেও না। শুনতে খারাপ লাগলেও আপনাকে বলি আপু দিনে সে ৪ বার শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলেও আমি কখনোই বাঁধা দেইনি। তার সব ধরণের আবদারই আমি রেখে এসেছি। এখন তাকে আমি বলেছি তার সাথে বসবাস করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সে বলছে আমাকে ছাড়া সে থাকতে পারবেনা। সে শুরু থেকেই বলতো আমাদেরটা লাভ ম্যারেজ (যদিও দুই পরিবারের ইচ্ছাতেই আমাদের যোগাযোগ হয়) । আজই রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যেতাম,আমাকে যেতেও দিচ্ছেনা। শুনেছি নতুন বিয়ে হলে বউ এর প্রতি ছেলেদের অনেক টান থাকে, বাচ্চা হলে বা সময় গড়াতে থাকলে আকর্ষণ কমে যায়। এখনই সে এমন করছে, আর তো দিন পড়েই আছে। সে খুবই ভয় পাচ্ছে দুই পরিবারের মুরুব্বীরা যাতে ওর এসব কর্মকান্ড না জানে।
এমনিতেই নিজের বাবা মা কে ছেড়ে এসে অনেক কষ্টে আছি, তার উপর স্বামী এতো দুঃখ দিল..আমি কিছুতেই ওকে ক্ষমা করতে পারছি না আপু। সারাটা দিন সে এক নাগারে ক্ষমা চাইছে, আমার হাতে পায়ে ধরছে। কী করব আপু? ওকে কি আরেকটা সুযোগ দিয়ে দেখব? অনেক কষ্ট পাচ্ছি আপু।”
পরামর্শ:
আপু, আপনি হয়তো ইতিমধ্যেই স্বামীকে আরেকটি সুযোগ দিয়ে ফেলেছেন। কারণ আপনার চিঠি পড়ে বুঝতে পারছি যে আপনি তাঁকে খুবই ভালোবাসেন। তবুও সত্য কথাই বলবো আপু। আমার মনে হয় না যে ধরণের ভালোবাসা আপনি খুঁজছেন, সেই ধরণের ভালোবাসা এই লোকটি কখনো আপনাকে দিতে পারবে। আমরা মেয়েরা কী চাই বলুন? শুধু এটুকুই তো চাই যে একজন পুরুষ আমাদের এতটা বেশি ভালবাসুক যেন অন্য কোন নারীর দিকে সে ফিরেও না তাকায়। যার সংস্পর্শে আপনার নিজেকে মনে হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নারী। যে স্বামী চোখের আড়াল হলেই পরনারীর দিকে আকৃষ্ট হয়, ফেসবুকে বা বাস্তবেও সেক্সুয়াল কথা বলে, সেই স্বামীর সাথে কখনো মানসিক শান্তিতে থাকা সম্ভব না।
যেহেতু বিয়ে হয়েছে মাত্র ১০ দিন, আপনি আর একবার স্বামীকে সুযোগ দিতে পারেন। তবে দ্বিতীয়বার যদি এই ধরণের কিছু ধরা পড়ে, আপনার উচিত হবে অবিলম্বে সম্পর্ক থেকে সরে যাওয়া। আর এই লোকটি আপনাকে খুব ভালোবাসে, এই ভ্রান্ত ধারণা মনে রাখবেন না। বিয়ের পর আসলেই কিছুদিন স্বামীরা বউয়ের জন্য পাগল থাকে। আপনার স্বামী কিন্তু হানিমুনের পর ওই মেয়ের সাথে এসব করেছে। তাই বুঝতেই পারছেন, আপনার জন্য এত পাগলও সে নয়। আরেকটি কথা আপু। সে যে হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইছে, সেটাও কিন্তু পারিবারিক আর সামাজিক কারণে। বৌ চলে গেলে সবাইকে কী জবাব দেবে? তাছাড়া সে তো আলাদাই থাকে। সেখানে বসে কী করলো আপনি তো জানতেও পারবেন না। আর আপু, আপনি আপনার কষ্ট হচ্ছে কি হচ্ছে না, এটা চিন্তা না করেই যে স্বামী দিনে ৪ বার শারীরিক সম্পর্ক করতে চায়, তার ভালোবাসায় আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। দাম্পত্য মানে তো কেবল যৌনতা না। আমার মনে হচ্ছে আপনার স্বামীর কাছে যৌনতাই আসল। এবং সত্যি বলি আপু, ভয়ও হচ্ছে আপনার জন্য।
আপনার জন্য একটাই পরামর্শ। আপাতত ক্ষমা করে দিন। এমন ভাব করুন যে সব ভুলে গিয়েছেন। এই বিষয় নিয়ে আর কথাই বাড়াবেন না। চুপচাপ সবদিকে লক্ষ্য রাখুন। দেখুন স্বামীর গতিবিধি। আমি নিশ্চিত যে কিছুদিনের মাঝে আবারও কিছু একটা আপনার হাতে ধরা পড়বেই। কারণ এই অভ্যাস ত্যাগ করা খুব কঠিন। যদি দুর্ভাগ্যবশত প্রমাণ পেয়েই যান, তখন যে সিদ্ধান্ত আপনার জন্য ভালো হবে মনে করেন, সেটাই নেবেন।সাজঘর
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন