আগামী নির্বাচনের জন্য তৈরি হচ্ছে আওয়ামী লীগ
ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শনিবার ও রোববার। কাউন্সিল সভার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হলো কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন। গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর অধিকাংশই পূরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো রকম ক্ষোভ বা হতাশা দেখা যায়নি। এ দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পদ-পদবি নিয়ে হাঙ্গামা-হুজ্জত নতুন কিছু নয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তার আছর পড়েনি। দল সরকারে থাকায় এবং দলের ওপর সভাপতি শেখ হাসিনার পরিপূর্ণ কর্তৃত্ব থাকায় তাঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দটিও উচ্চারিত হয়নি। দলের নেতৃত্বের জন্য এটা শ্লাঘার বিষয়।
কাউন্সিল সভা শুরু হওয়ার আগে থেকেই সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সবার আগ্রহ ছিল, ছিল জল্পনা। একদিকে তরুণ নেতৃত্বকে স্বাগত জানানোর ঘোষণা, অন্যদিকে শেখ পরিবারের কয়েকজন সদস্যের প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর হওয়া, এ নিয়ে স্বভাবতই গুঞ্জন চারদিকে ডালপালা মেলতে শুরু করেছিল। একাত্তর-পরবর্তী আওয়ামী লীগে একনাগাড়ে দুই মেয়াদের বেশি সাধারণ সম্পাদক থাকার রেকর্ড নেই। সুতরাং, এটা প্রায় নিশ্চিত ছিল যে এই পদে পরিবর্তন আসবে। শেষমেশ কোনো ঝঞ্ঝাট ছাড়াই সাধারণ সম্পাদকের ব্যাটনটি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের হাত থেকে ওবায়দুল কাদেরের হাতে সমর্পিত হলো। সৌজন্যের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে সৈয়দ আশরাফ নিজেই তাঁর উত্তরসূরির নাম প্রস্তাব করলেন।
কয়েক দিন ধরেই বলাবলি হচ্ছিল, সবার জন্য ‘চমক’ অপেক্ষা করছে। নতুন প্রজন্মের নেতৃত্বের কথা বেশ জোরেশোরেই উচ্চারিত হচ্ছিল। কাউন্সিলের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে তার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। ওবায়দুল কাদের বেশ পুরোনো নেতা। নতুন কমিটিতে এখন পর্যন্ত তরুণ প্রজন্মের কারও নাম শোনা যায়নি। অবশ্য অনেক পদ এখনো পূরণ করা হয়নি। নতুন কারা আসছেন, সেটা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কাউন্সিল অধিবেশনে কাউন্সিলরদের কণ্ঠভোটে তারা নির্বাচিত হন। এই কমিটিই আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের দায়িত্বে থাকবে। এর আগে শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলের একটা উল্লেখযোগ্য দিক হলো ভবিষ্যতের দিকে তাকানো। রূপকল্প ২০৪১ নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত কোনো কর্মসূচি ও বাস্তবায়নের কৌশল উপস্থাপন করা হয়নি। হয়তো এ নিয়ে আরও কাজ হবে এবং আমরা খুব শিগগির একটা ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ পাব, যা নিয়ে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে যাবে।
সভাপতি পদে শেখ হাসিনা আবারও নির্বাচিত হবেন—এটা জানাই ছিল। আমাদের মতো সমাজে এটা শুধু রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যাপার না, গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারও। দলে তাঁর বিকল্প নেই। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে দল হেরে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন। দলের কর্মীদের চাপে তিনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেন। দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও তৃণমূলে তিনি অদ্বিতীয়।
কাউন্সিল সভার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছে, দল এখন আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। বার্তাটি বেশ পরিষ্কার। নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা ঘর গোছাচ্ছেন। নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য চাই সুসংহত দল। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ অনেকটাই এগিয়ে গেল।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন