আজিফার বাসর রাতের ভয়ঙ্কর গল্প!
স্বামী সংসার আর ভবিষ্যৎ সন্তান নিয়ে সুখের একটি পৃথিবী’ এমনটাই কামনা আর কল্পনা থাকে প্রতিটি বাঙ্গালী নারীর। কিন্তু বাস্তবতার কষাঘাত আর নিষ্ঠুরতা কি গড়তে দেয় সবার স্বপ্ন। অধিকাংশ মেয়েরই এমন কল্পনা আর আকাঙ্ক্ষা হয়ে যায় অংকুরেই বিনষ্ট।
আমাদের চেনাজানা সমাজেই মানুষরূপী একদল হায়েনার নির্মমতার শিকার হয়ে এমনি করে প্রতিদিনই হাজারো ঘটনা ঘটছে। মাথা গেড়ে যন্ত্রনা আর স্বপ্নভঙ্গের কারনে নুয়ে পড়ছে কত ফুল তাঁর খবর কে রাখে কতগুলোই বা প্রকাশ বা পায় গনমাধ্যমে? এমনি একটি যন্ত্রনা আর কষ্টের গল্প পাঠকদের জন্য। উদ্দেশ্য ,শাস্তি পাক সেই হায়েনা, সতর্কতা বাড়ুক নারী নির্যাতন প্রতিরোধে।
দিনমজুরের মেয়ে আজিফা। অভাবের কারণে স্বপ্ন দেখা হয়নি। বয়সের আগেই শিকার হতে হয়েছে শিশু বিয়ের। আজিফার জীবনে ফুল আর লাল শাড়ি ছাড়াই এসেছিল ফুলশয্যার রাত। মনের মধ্যে খানিকটা স্বপ্ন ছিল স্বামী তাকে অনেক আদর করবে। কিন্তু একি! ফুলশয্যার রাতে এ কেমন অভিজ্ঞতা।শোনা যাক নাবালিকা গৃহবধূ আজিফার মুখেই। ‘বাসর রাতেই কেমন আচরণ করেন উনি। অযথা চড় থাপ্পড় মারেন। কাঁদতে শুরু করলে বেড়ে যায় নির্যাতন।
এক সময় জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়। বুক থেকে শরীরের নিচ পর্যন্ত। কাঁদতে কাঁদতেই পার করি রাত।’সেই বাসর রাতে শুরু হওয়া নির্যাতন বন্ধ হয়নি আজও। প্রতিরাতেই চলতো অসহনীয় যন্ত্রণা। কয়েকদিন গেলে দাবি করা যৌতুকের। অভাবী বাবার কাছে কিছু বলতে পারেনি আজিফা।
প্রতি রাতে মেনে নিতে হতো নির্যাতন। বুক থেকে নিম্নাঙ্গ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক সিগারেটের ছ্যাঁকার চিহ্ন জ্বল জ্বল করছে আজিফার। এক পর্যায়ে বলেও ফেলে বাবা মাকে। কিন্তু ততটা অমলে নেয়নি তারা। পরবর্তীতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
গত বুধবার দুপুরে চিকিৎসাধীন আজিফা কাতর কণ্ঠে জানায়, ‘আমার মত আর যেন কাউকে বখাটে ও মাদকাসক্ত স্বামীর স্ত্রী হতে না হয়। আমি এই অমানবিক নির্যাতনের বিচার চাই।’ পরে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তার ওপর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বিচার প্রার্থনা করে।
আজিফা গুরুদাসপুর উপজেলার খাঁকড়াদহ গ্রামের দিনমজুর আফছার আলীর নাবালিকা মেয়ে। তার স্বামী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কচুগাড়ী গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে সবুজ হোসেন (২৯)।আজিফার বাবা মা বলেন, ‘বাসর রাত থেকেই নির্যাতনের শিকার হয় মেয়েটি।
কিন্তু সে আমাদের জানায়নি। সবুজ জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে আমাদের মেয়ের বুক থেকে গোপন জায়গা পর্যন্ত ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। তাতে অন্তত পঞ্চাশটি ছ্যাঁকার চিহ্ন রয়েছে।’অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পান।
গত বুধবার আফিজার বাবা আফছার আলী বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন।বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আসামি পলাতক রয়েছে। তবে শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন