আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদৎবার্ষিকী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৫তম শাহাদৎবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার ধলাই সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তিনি শহীদ হন ।
হামিদুর রহমানের নিজ গ্রাম মহেশপুরের খর্দ্দ খালিশপুর। গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, গ্রামের নামটি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের নামে ‘হামিদ নগর’ রাখা হোক। কিন্তু সে দাবি পূরণ হয়নি আজও।ঝিনাইদহ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মহেশপুর উপজেলা।
উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রামের নাম খর্দ খালিশপুর। এ গ্রামেই বাংলাদেশের সূর্য সন্তান হামিদুরের শৈশব-কৈশোরে বেড়ে ওঠা। দারিদ্র্যতার কারণে পড়াশোনায় বেশি দূর আগাতে পারেননি। তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও সংকল্পে অবিচল।১৯৭১ সালে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও দেশকে মুক্ত করবেন। যে কথা সেই কাজ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। ধ্বংস করেন পাকসেনাদের দুটি মেশিন গান পোস্ট। মৌলভীবাজারের ধলাই সীমান্তে সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে শাহাদৎ বরণ করেন তিনি।
তখন তার সহযোদ্ধারা মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন।দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব দেয়। হামিদুর রহমানের নামে গড়ে উঠেছে ঝিনাইদহের জেলা শহরে স্টেডিয়াম, মহেশপুরে কলেজ, যাদুঘর। ২০০৭ সালে এ বীরের দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়েছে।
১৯৮১ সালে সেনাবাহিনী তার মায়ের জন্য ৩ কামরার একটি বাড়ি তৈরি করে দেয়। যদিও বাড়িটি এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এক প্রকার জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা।বীরশ্রেষ্ঠের মেজ ভাই হামজুর রহমান জানান, বীরশ্রেষ্ঠের গ্রামটি নামেই হামিদ নগর, খাতাকলমে এখনও খোর্দখালিশপুর।
তাদের দাবি, বীরশ্রেষ্ঠের নামে গ্রামটি ‘হামিদ নগর’ নামেই খাতাকলমে যেন ব্যবহার শুরু হয়।বীরশ্রষ্ঠের হামিদুর রহমান স্মৃতি লাইব্রেরি ও জাদুঘরের কেয়ারটেকার মুস্তাফিজুর রহমান জানান, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে তার গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি মহাবিদ্যালয় সরকারি হয়েছে। মহাবিদ্যালয়ের আঙিনায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় বাস্তবায়িত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতি লাইব্রেরি তথা জাদুঘর। যাদুঘরের একমাত্র কেয়ারটেকারের চাকরি আজও সরকারিকরণ হয়নি।
বীরশ্রেষ্ঠের বোন আছিয়া বেগম জানান, শতশত মানুষ আসে বীরশ্রেষ্ঠের বাড়ি, যাদুঘর, বীরশ্রেষ্ঠের মায়ের কবর ও কলেজ দেখার জন্য। কিন্তু গ্রামটির রাস্তাঘাটের অবস্থা এক্কেবারেই জীর্ণদশা। তিনি অভিযোগ করেন, বহু তদবির সত্তে¡ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এদিকে নজর দেয়নি। অথচ বীরশ্রেষ্ঠের গ্রাম হওয়ায় বহু ভিআইপিদের আগমন ঘটে গ্রামটিতে।সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বজলুর রহমান বলেন, শুধু ঝিনাইদহ আর মৌলভীবাজারে নয়, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের শাহাদৎবার্ষিকী বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় পালন করা প্রয়োজন। যেন বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্ম জানতে পারে। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার জানান, গ্রামটির নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আনার হত্যার মাস্টারমাইন্ড শাহীনকে ধরতে ডিবির পরিকল্পনা
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ধারণা, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমবিস্তারিত পড়ুন
তৃতীয়বার আনারকে মনোনয়ন দিয়েছি জনপ্রিয়তা দেখে: কাদের
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম (আনার) স্বর্ণ চোরাচালানকারীবিস্তারিত পড়ুন
মাস্টারমাইন্ড শাহীনের অগাধ রহস্য
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের কলকাতায় হত্যাকাণ্ডেবিস্তারিত পড়ুন