আদালতে খালেদা জিয়ার পাঁচ ঘণ্টা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আজ সোমবার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির জন্য আদালতে গিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে খালেদা জিয়া পৌঁছান বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে। আদালতের কার্যক্রম শেষে বিকেল চারটার তিনি বের হন।
আদালতকক্ষে দেখা যায়, দুপুরে খালেদা জিয়া শুধু চা পান করেছেন। আদালতের এজলাসে বসেই চা পান করেন তিনি। এর আগেও একদিন আদালতকক্ষে চা পান করে কাটে খালেদা জিয়ার দুপুর।
দেখা যায়, বেলা ১টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারক আদালতের এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন। এরপর খালেদা জিয়া এজলাস কক্ষের একটি চেয়ারে চুপচাপ বসেছিলেন। কিছুক্ষণ পর খালেদা জিয়ার কাছে তাঁর এক কর্মী জানতে চান, তিনি চা পান করবেন কি না। হ্যাঁ সূচক উত্তর পেয়ে প্রথমে একটি চায়ের কাপ বের করেন ওই কর্মী। বাসা থেকে আনা ফ্ল্যাস্ক থেকে চা ঢেলে দেন ওই কর্মী। পরে খালেদা চা পান করতে থাকেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ওই কর্মী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বাসা থেকেই ওই চা আনা হয়।’ চা পানের পর খালেদা জিয়া তাঁর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে মামলার বিষয়ে আলাপ করেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকা তাঁর প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, খালেদা জিয়া দুপুরে আদালতকক্ষে বসে শুধুই চা পান করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তখন আদালতের এজলাস কক্ষে বসা ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। এই তিন নেতাও দুপুরের খাবার সারেন বিস্কুট খেয়ে। বিএনপি নেতা আলাল বললেন, ‘দলের চেয়ারপারসনের দুপুর কেটে গেল শুধু চা পান করে। আমরা খেলাম বিস্কুট।’
এর আগে বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। আজ সোমবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাঁর (খালেদা) আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান মামলার পুনঃ তদন্ত চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। এর পক্ষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন।
তবে এর বিরোধিতা করেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি আদালতকে বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিনে এই আবেদন অগ্রহণযোগ্য। ওই আবেদন নামঞ্জুর করে খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি করতে বলেন।
খালেদার আরেক আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতের কাছে আবেদন করেন, ‘আমাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হোক। শুনানির নতুন দিন রাখা হোক। তখন সময় ১টা ৩০ মিনিট। আদালত খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তাঁর (খালেদা) কাছে জানতে চান, তাঁর বয়স কত? ৭২ না ৭৩ বছর। এ সময় খালেদা নিজেই আদালতের কাছে সময় চান। আদালতকে তিনি বলেন, শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করুন। এরপরও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ওই আবেদনটি নিষ্পত্তি করে শুনানির নতুন দিন ধার্যের আবেদন করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগামী বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য করেন। সেদিন খালেদার করা আবেদনের ওপর বিস্তারিত শুনানিও গ্রহণ করবেন বলে আদালত জানান। পরে আদালত চত্বর ত্যাগ করেন খালেদা।