‘আপু এটার কি খুব দরকার ছিল?’
মেয়েটির নাম তাসমিয়া শান্তা। গতকাল রাত মারা গেছেন। মেয়েটি চমৎকার কবিতা লিখতেন, ফেসবুকে স্টেটাস আপডেট এর বিষয়ে আর দশজন সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর মতো শান্তাও সক্রিয় ছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ করেই তার মৃত্যু যেন সবকিছু অন্ধকার করে দিয়ে গেল। এই প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েটির মৃত্যু যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা?
তাসমিয়ার লেখার মধ্যে রয়েছে গভীর বিষণ্ণতা। ‘প্রিয় অন্ধকার’ শিরোনামে গতকাল তিনি একটি লেখা প্রকাশ করেছেন, যেটা ১৪ মার্চ ২০১৬ সালে লিখেছিলেন। একই দিন তিনি চলে গেলেন তার প্রিয় অন্ধকারে।
‘প্রিয় অন্ধকার,
প্রথমবার যখন তোমার প্রেমে পড়েছিলাম তখন তোমাকে ঠিক অতটা বুঝিনি। তোমার যে কী মায়া!
তোমার তখনকার মায়াজালের কোথাও একটু ফুটো ছিলো মনে হয়। আর সেই ফুটোর আয়তনের তুলনায় আমি নিতান্তই নগন্য। তাই তো অনায়াসেই বেরিয়ে পড়ছি। তা না হলে কি এও সম্ভব বলো? আমি তখন শুধু শুধুই তোমার প্রেমে পড়ছিলাম।
সে প্রেমে কোন মুগ্ধতা ছিলনা। ছিলনা মগ্নতাও। সেখানে একরাশ হাহাকার, দীর্ঘশ্বাস, বিষণ্নতা আর শংঙ্কা’রা গাদাগাদি করে বাসা বেধেছিল। আর তাইতো আমি অমন আকুলি বিকুলি করে এদিক সেদিক দিবালোকের খোঁজে ছুটতাম। জানো? আমি আবারো প্রতারিত হয়েছি। ব্যস্ত শহরের সোডিয়াম আলোরা নিজেদের ‘দিবালোক’ বলে আমায় কাছে ডেকেছিল। আমিও বোকার মত ‘মেকি দিবালোক’র প্রেমে পড়েছিলাম। প্রতারিত হয়েছি। তাতে কি?আমার বরং ভালই হইছে। তা না হলে তো তোমাকে চিনতে পারতাম না। তোমার আমাকে মুগ্ধ করার ‘অসহ্য ক্ষমতা’ মুখোশের আড়ালেই ঢাকা পড়তো। আমি এমন মায়াময় একটা প্রেমিক পেতাম না। মুগ্ধতাকে ‘একঘেয়েমি’র চাদরে জরিয়েই আমার একজীবন কেটে যেত মুগ্ধতা হীনতায়।
আমি আরো শত-সহস্র কোটিবার প্রতারিত হতে চাই, শুধু তোমার একটুখানি মুগ্ধতার লোভে।
ভালবাসি প্রিয় অন্ধকার
আমি জানি ,তুমি আমায় কখনো ছেড়ে যাবে না। ‘
তবে তাসমিয়ার সর্বশেষ ফেসবুক স্টেটাসের প্রতিটি লাইনে ছড়িয়ে রয়েছে বিষণ্ণতা। যা একটি কলকাতার গানের লাইন।
যা হলো,
‘আমার রাত জাগা তারা
তোমার আকাশ ছোঁয়া বাড়ি
আমি পাইনা ছুঁতে তোমার
আমার একলা লাগে ভারি’
তাসমিয়া শান্তার মৃত্যুর খবর শুনে তার ফেসবুক বন্ধু ‘Afrin Sultana’ নিম্ন কথা গুলো লেখে একটা স্টেটাস দিয়েছেন।
আপু এটার কি খুব দরকার ছিল…এ ছাড়া কি আর কোন রাস্তা ছিল না?????
তাসমিয়া কি আসলেই আত্মহত্যা করেছেন?
তাসমিয়ার মৃত্যুর নিশ্চিত কারণ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তাসমিয়া রাত ৩টার দিকে ঘুমাতে যান। সকালে ঘুম থেকে আর ওঠেননি। চাটমোহরের একটি মেসে থাকতেন তাসমিয়া। সেখানেরই এক কলেজে পড়াশোনা করতেন।
সোশাল মিডিয়া কাছের মানুষদের নিকট হতে এখন পর্যন্ত যা জানা যায় তা হলো- তাসমিয়া হতাশায় ভুগতেন। প্রচণ্ড হতাশা নিয়েই ফেসবুকে স্টেটাস দিতেন। মাঝে মাঝে কবিতায় উঠে আসত হতাশা। কারো নিকট শেয়ার করতে চাইতেন না।
এমনটিই জানা যায় ঘনিষ্ঠজনদের নিকট থেকে। হতাশার অন্যতম কারণ ছিল প্রেম ও পারিবারিক- বলেই জানাচ্ছেন ঘনিষ্ঠজন। এই হতাশা থেকেও আত্মহত্যা করতে পারেন তাসমিয়া।
তাই বলে রাত দেড়টা কিংবা ২টায় বন্ধুদের সাথে আলাপ করলেন সেই বন্ধুরাও জানতে পারলেন না মেয়েটি কিছুক্ষণ পরই আত্মহত্যা করবে? আবার অনেকের ধারণা ঘুমেই স্ট্রোক করতে পারেন তাসমিয়া। সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে কি?
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন