‘আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে সে আমার দেহভোগ করতে চায়’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা।
“আপু,
সরাসরি আমার সমস্যায় চলে যাই। আজ থেকে ১০ বছর আগে আমি যখন ক্লাস ৮-এর ছাত্রী আমার সাথে আমার বাবার বন্ধুর ছেলের সম্পর্ক হয়েছিল। ঠিক প্রেমের সম্পর্ক না, কিন্তু আমরা ফোনে অনেক কথা বলতাম। ২ মাসের মাথায় আমাদের পরিবারে এটা জানাজানি হয়ে যায়। ২ পরিবারের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়।
আমি ওকে অনেক ভালবেসে ফেলেছিলাম। ওকে ভোলার জন্য আমি ফোনে প্রচুর ছেলেদের সাথে কথা বলা শুরু করলাম। এভাবেই একটা ছেলের সাথে অনেক ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমার বাসায় এক সময় জানাজানি হয়। খুব শাসনে পড়ে যাই আমি। ৩-৪ মাস সম্পর্ক ছিল ছেলেটার সাথে। একসময় আমি বুঝতে পারি আসলে একজনকে ভোলার জন্য আমি মোহের বশে এই সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। সে অনেক আবেগী টাইপ ছিল। অনেক কষ্টে তার কাছ থেকে আমি পালিয়েছিলাম।
নতুন করে জীবন শুরু করলাম আমি। পরিবার আর বন্ধুদের ছাড়া কারো প্রবেশ ছিল না আমার জীবনে। ভালই চলছিল সব। প্রেম ভালবাসার উপর বিতৃষ্ণা ছিল আমার। এমনকি আমার কোন ছেলে বন্ধু ও ছিল না।
১০ বছর পর কী মনে করে আগের সেই আবেগী প্রেমিকের কেমন আছে জানার জন্য তাকে নক করলাম। এবং আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করলাম। সে আমাকে পেতে চায় কিন্তু আমি তার সাথে নতুন করে আর কোন সম্পর্কে জড়াতে চাই না। আমি যোগাযোগ বন্ধ করার চেষ্টা করলেই সে আমাকে হুমকি দেয় আমার অনেক ক্ষতি করবে। যতটা ক্ষতি করলে একটা মেয়ে আত্মহনন করতে বাধ্য হয়, একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় ততটা। দরকার হলে সে খুন করতেও পিছপা হবে না। সে একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতা এবং আমার আদর্শবান বাবা কোন দিন তার হাতে আমাকে তুলে দিতে রাজী হবে না। সবচেয়ে বড় কথা আমি তাকে ঘৃণা করি। আমি মরে গেলেও তার হব না। একটু কৌতুহল মেটাতে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে আমাকে।
আমি কী করব? আমাকে প্রতি নিয়ত ব্লাকমেইল করে যাচ্ছে ওই পিশাচ। প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার বাসায় যদি জানতে পারে আমি বাসায় মুখ দেখাতে পারব না, মরেই যাব। আমি যদি অন্য কাউকে বিয়েও করি সে আমার স্বামীকে মেরে আমাকে তুলে নিয়ে যাবে। এই দেশের আইনের হাতে সে ছাড়া পেয়ে যাবে।
কী করলে আমি মুক্তি পাব? তাকে বুঝিয়ে লাভ নেই। সে অমানুষ, সিনেমার মত একজন সাইকো।”
পরামর্শ:
মানুষ যে কীভাবে নিজেকে অহেতুক বিপদের মাঝে ঠেলে দিতে পারে, সেটা বুঝলাম আপনার চিঠিটা পড়ে। কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছি না, সেটা হলো… আপনি তার সাথে যোগাযোগ করার পরই সে ক্ষেপলো কেন, এর আগে কেন কিছু করলো না। এমন কিছু কি হয়েছিল যে নতুন করে যোগাযোগ হবার পর আপনি কিছুদিনের জন্য আবার ইমোশোনাল হয়ে গিয়েছিলেন, তারপর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন আর ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে?
আমি জানিনা সে আপনার ক্ষতি কীভাবে করার হুমকি দিচ্ছে। আপনার কোন গোপন তথ্য তাঁর কাছে আছে কিনা, সেটাও জানিনা। তবে আপনার সমস্যাটি এমন যে পরিবারের কাছ থেকে গোপন করা সম্ভব না। কারণ এই ছেলের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে আপনাকে পরিবারের সাহায্য নিতেই হবে। পরিবারকে সবকিছু খুলে বলুন। হ্যাঁ, তাঁরা বকাঝকা করবে অনেক। কিন্তু পাশেও দাঁড়াবে। প্লাস, নিজেদের প্রভাবশালী কোন আত্মীয়স্বজন থাকলে তাঁরাও আপনার উপকারে আসতে পারে। এই সাহায্যটুকু আপনি পরিবারের সহায়তা ছাড়া পাবেন না।
তাছাড়া আমার মনে হচ্ছে, আপনি দেশের বাইরে চলে গেলেই আপনার জন্য সবচাইতে ভালো হবে। ওই ছেলেটি যেহেতু অনেক প্রভাবশালী, আইনের হাত থেকেও বেঁচে যাবে। সেক্ষেত্রে আপনি দেসের বাইরে কোন প্রবাসী পাত্রকে বিয়ে করতে পারেন , তবে অবশ্যই তাঁকে সত্য জানিয়ে। কিংবা পরিবারের সহায়তা নিয়ে নিজেই দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। কিংবা অন্য কোন শহরে চাকরি নিয়ে চলে যেতে পারেন, আত্মীয়স্বজন পাড়া প্রতিবেশী সকলেই জানবে যে দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন। একই সাথে নিজের ফেসবুক আইডি, ফোন নম্বর সবকিছু বদলে ফেলবেন। ছেলেটিও তাহলে বিশ্বাস করতে বাধ্য অবে আপনি আর দেশে নেই। আর বিদেশে গিয়ে আপনার ক্ষতি করা সম্ভব হবে না তাঁর পক্ষে। নতুন স্থানে নতুন করে জীবন শুরু করুন, এটাই ভালো অবে আপনার জন্য। কিছু বছর পেরিয়ে গেলে ছেলে অন্য কাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। আমি জানিনা আপনি কে, কিন্তু দোয়া করছি যেন এই সমস্যা থেকে বের হয়ে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন।
এই চিঠিটির মাধ্যমে মেয়েদেরকে আরেকটি কথা বলতে চাই, না জেনেশুনে ফোনে ফোনে কারো সাথে সম্পর্ক জড়াবেন না। আজকাল অনেক ছেলেমেয়েরই ফোনে কথা বলার বাতিক আছে। একটা ভুল সম্পর্ক সারা জীবনের কান্না হয়ে যেতে পারে। প্লিজ, ব্যাপারটা নিয়ে ভাবুন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থকতা। ছবিটি প্রতীকী
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন