আ’লীগের তৃণমূলে তীব্র বিরোধের সম্ভাবনা, বিএনপির একক প্রার্থী
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা নিয়ে দামুড়হুদা উপজেলা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। একেক ইউনিয়নে ৪/৫ জন করে স্থানীয় নেতা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য আটঘাট বেঁধে মাঠে নামায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারাও বেশ বিপাকে পড়েছেন। কাকে বাদ দিয়ে কাকে দলীয় প্রার্থী করবেন সে বিষয়টি নিয়ে তারাও ভাবছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, আগামী মার্চ থেকে মে মাসে নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় দামুড়হুদার ৬টি ইউনিয়নেই প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নেই দলীয় সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন ৪/৫ জন করে। সে হিসাবে দামুড়হুদার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের অন্তত ৩০জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। অথচ দলীয় সমর্থন পাবেন ৬ জন।
বাকিরা মনোনয়ন না পেয়ে কী করবেন এ বিষয়টি নিয়ে চিস্তায় রয়েছেন নেতারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দামুড়হুদা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নেয়ার জন্য চেষ্টা করছেন স্থানীয় ৮ নেতা। তারা হলেন দামুড়হুদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম , সাধারণ সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা যুবলীগের আহ্বায়ক সফিউল কবির ইউসুফ, যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহাসিন, আওয়ামী লীগ নেতা ও মেম্বার হাসান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম উদ্দীন বগা, বুলু মাষ্টার ও দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজু আহম্মদ রিংকু। ৮ জনই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে শেষ পর্যন্ত কে দলীয় সমর্থন পেতে পারেন তা দেখার বিষয়। দলীয় সমর্থন যাকেই দেওয়া হোক না কেন বিদ্রোহী প্রার্থী একাধিক থাকতে পারে।
সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের সময় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও বিভক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে শেষ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে মনে করছেন সচেতন মহল। একই অবস্থা এ উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নেও। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন , কৃষকলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম । ৩ জনই এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত দল কাকে সমর্থন দেবে তা নিয়ে ৩ জনের কর্মী সমর্থকরাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এ জন্য তিন প্রার্থীই উচ্চ পর্যায়ে লবিং গ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মীদের মতে, এ ইউনিয়নেও দলীয় সমর্থন বঞ্চিতদের মধ্যে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে যেতে পারেন।
এ নিয়ে এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষও হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। অন্যদিকে উপজেলার হাউলি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা করছেন স্থানীয় ২ নেতা। তারা হলেনÑ হাউলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম এবং ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইদ খোকন। একই অবস্থা উপজেলার মদনা-পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নেও। এ ইউনিয়নেও আওয়ামী লীগের পাঁচজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ালী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক এস এম জাকারিয়া আলম, আ,লীগ নেতা স্বপন, ও আসাদুল হক , আক্তার ও সিরাজ উদ্দীন। কুড়–লগাছি ইউনিয়নে দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বাহার, আওয়ামী লীগ নেতা সরোয়ার হোসেন, শাহ এনামুল করিম ইনু ও শিক্ষক -হাসমত আলী। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান ভুট্ট, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সহিদুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা শওকত আলী, যুবলীগ নেতা সাজেদুল ইসলাম মিঠু। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ কাকে বাদ দিয়ে কাকে দলীয় সমর্থন দেবে তা নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, দামুড়হুদার ৬টি ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান পদে ৪/৫ জন করে নেতাকর্মী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তারা দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় বেশ ঝামেলায় রয়েছেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। মনোনয়ন বঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ কিভাবে দেখাতে পারে- সে বিষয়টি নিয়েই তারা বেশি ভাবছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন গ্রামাঞ্চলের ঈদ উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করে। তাই এ উৎসব যেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়ে মাটি করে না দেয় সেটা নিয়ে তারা বেশি ভাবছেন। তারা আরোও জানান, আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস তৃণমূল। আবার ইউপি নির্বাচনও স্থানীয় সরকারের সর্বনি¤œ স্তর। তাই তাদের লক্ষ্য এ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে দলকে আরো সংগঠিত করা। কিন্ত মনোনয়ন বঞ্চিতরা যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তাহলে দলে কোন্দল বেড়ে যেতে পারে। আর তাহলে শক্তিশালী হওয়ার পরিবর্তে তৃণমূলে দল আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া যায় সেটাই ভাবছেন দলের নীতি নির্ধারকরা। আর যদি তৃণমূলের মতামত না দেওয়া হয় ,তাহলে নির্বাচনের সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগও বিভক্ত হয়ে যাবে বলে মনে করেন।
এদিকে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের বিএনপি’র প্রার্থী হিসাবে তিন জনের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান রফিুকুল ইসলাম তনু ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রব। জুড়ানপুর, হাউলি ও কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচত থাকায় তারাই বহাল থাকছেন এবং মদনা-পারকৃষœপুর ও কুড়ালগাছি ইউনিয়নে বিএনপির কোন প্রার্থীর নাম শোনা না গেলেও একক প্রার্থী থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এদিকে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কুড়ালগাছি ও দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের দলীয় প্রাথী চেয়াম্যান নির্বাচিত থাকায় তারাই বহাল থাকছেন। বাকি ৪ ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীদের নাম যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে দলীয়সূত্রে জানা গেছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন