‘ইতিহাসের তৃতীয়’ হওয়া হলো না মুশফিকের!
একটু অন্তর্মুখী স্বভাবের মুশফিকুর রহিম ড্রেসিংরুমে নিশ্চয়ই একটু মনঃকষ্টে পুড়ছেন। ইশ্, দ্বিতীয় নতুন বলে সুরঙ্গা লাকমলের নতুন ওভারের প্রথম বলটা যদি একটু দেখেশুনে খেলতাম!
ওই বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে ভেতরে ঢুকছিল। ড্রাইভ করতে গেলেন। ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বল ঢুকে ছত্রখান করে দিল স্টাম্প। ৫২ রানে বোল্ড ‘বাংলাদেশের লিটল মাস্টার’।
যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে দেখেশুনে খেলতে পারলে একটা সেঞ্চুরি পেতেই পারতেন। যেটি হতো তাঁর ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি। আর এটি বাংলাদেশের অধিনায়ককে নিয়ে তুলত টেস্ট ক্রিকেটের এক অতি সম্ভ্রান্ত ক্লাবে। নিউজিল্যান্ডের বেভান কংডন আর জিম্বাবুয়ের গ্রায়েম ক্রেমারের পর নিজের দেশের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি পাওয়া ইতিহাসের তৃতীয় অধিনায়ক হতেন।
সুযোগ যে একেবারে শেষ হয়ে গেছে তা নয়। এখনো দ্বিতীয় ইনিংস আছে। শঙ্কাটা এখানেই। দ্বিতীয় ইনিংস, মানে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং প্রশ্নবিদ্ধ। তা ছাড়া মাথায় রাখতে হবে পি সারা ওভালকে। শেষ দিকে এখানকার উইকেট স্পিনারদের প্রতি অতি বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে পড়ে। বিশ্বের অন্যতম সেরা ফলনির্ভর মাঠ এটি। এ মাঠ আগের ১৯ টেস্টের ১৫টিই ফল দেখেছে। ৯ বার জিতেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা, সফরকারী দলের কাছে তারা হেরেছে ৬ বার। বাকি ৪টি টেস্ট হয়েছে ড্র। বাংলাদেশ অবশ্য ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে কতটা ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায়, তাও দেখার। মুশফিক প্রথম ইনিংসে তাই ভালো সুযোগ হারালেন ইতিহাসের অতি ছোট্ট এক তালিকায় নাম লেখানোর।
মুশফিকের ক্রিকেট জীবনের পাতায় দারুণ একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে জ্বলজ্বল করবে শ্রীলঙ্কা । এখানেই প্রথম ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি উইকেটকিপারের ভূমিকায় নামতে হয় তাঁকে টেস্টে। আবার এখানেই, স্বেচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক, উইকেটকিপিং ছেড়ে পুরোপুরি ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতে হয়েছে। সেটি মাত্রই আগের টেস্টের ঘটনা। কিন্তু নিয়তি মনে মনে কী সাজিয়ে রাখে তা কি কেউ বলতে পারে?
পি সারা ওভালে শততম টেস্টের একাদশ বেছে নেওয়ার আগেই চোট কেড়ে নিল উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে। উইকেটের পেছনে আবার সেই মুশফিক। আবার তিন ভূমিকায়— অধিনায়কত্ব, ব্যাটিং এবং উইকেটকিপিং!
উইকেটকিপিংটা ছেড়ে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে বেশি অবদান রাখতে পারবেন ভেবে। সে জন্য নিজের প্রিয় ৬ নম্বর জায়গা থেকে উঠে গিয়েছিলেন ৪ নম্বরে। কিন্তু ঘটনাচক্রে এখানে প্রথম ইনিংসে মুশফিককে ব্যাট করতে হলো ৭ নম্বরে। ২০০৫ সালে লর্ডসে অভিষেকে ব্যাট করেছিলেন ৬ নম্বরে। তারপর তাঁকে নেমে দাঁড়াতে হয় সাতে। তো লেট মিডল অর্ডারের এই জায়গাটিতে ব্যাট করে তাঁর সবচেয়ে আনন্দময় স্মৃতি হলো প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি, ২০১০ সালে যেটি করেছিলেন চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে। সেই সেঞ্চুরির সাত বছর পর সাত নম্বরে নেমে পি সারাতে ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটি পেতেই পারতেন। দর্শকেরা বলাবলি করছিলেন, হাতের সেঞ্চুরিটি ফেলেই এসেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক!
শ্রীলঙ্কানদের মুখে মুশফিকুর নামটি উচ্চারিত হয় ‘মুশফিকার’। কভার ড্রাইভ, সুইপ…মুশফিক যখন সকালে চার মারছিলেন একের পর এক— লম্বা শেডের নিচে বসা স্কুলছাত্রদের মুখে শোনা যাচ্ছিল একটাই শব্দ। মুশফিকার! মুশফিকার!!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন