উদয়ের মৃত্যু ও বিশ্ব বিবেকহীনতা
যুদ্ধের মধ্যে জন্ম হয়েছিল উদয়ের। পৃথিবীতে আসার পর বোমার প্রচন্ড শব্দে ঢেকে গিয়েছিল সদ্যজাত উদয়ের কান্নার শব্দ। সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের জন্য একমাত্র খাবার হলো মায়ের বুকের দুধ। কিন্তু ইয়েমেন যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই যে মা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছেন তার শরীরেও সন্তানের জন্য ছিল না পর্যাপ্ত দুধ। বুকের দুধ না পেলেও অনেক সময় ভিন্ন ব্যবস্থা করে সন্তানদের বাঁচানো যায়। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক দুর্যোগের কারণে উদয়ের বাবা-মা সেই ব্যবস্থাটুকুও করতে পারেনি। আর তাইতো জন্মের মাত্র পাঁচ মাস পরেই দুনিয়ার কিছু বুঝে উঠার আগেই মারা যায় উদয় ফয়সাল।
উদয়ের মা ইন্তিজার হেজাম কান্না জর্জরিত কণ্ঠে প্রিয় সন্তানের কথা বলতে গিয়ে জানান, ‘সে একটুও কাঁদতো না এবং তার চোখে কোনো পানিও ছিল না। স্রেফ শূণ্য চোখে তাকিয়ে থাকতো। শেষের দিকে ওর নাক এবং মুখ দিয়ে হলুদ বমি বের হতো শুধু। একটা সময় আর বমি বের হলো না, বন্ধ হয়ে গেল ওর নিঃশ্বাস।’ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের একজন মায়ের পক্ষে তার সন্তানের মৃত্যুদৃশ্য দেখার মতো যন্ত্রনার আর কিছু নেই। অথচ বিশ্বের বিবেকবান মানুষের বিবেকহীনতার কারণে আজ ইন্তিজারের মতো অনেক মাকেই দেখতে হচ্ছে নিজের প্রিয় সন্তানের মৃত্যু। আর সেই মৃত্যুকে অবহেলা করে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরব তাদের ঘৃণ্য স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসের ২২ তারিখ। ইয়েমেনের রাজধানী সারার আল শাবিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় উদয় ফয়সাল নামের এক শিশুকে। অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালের ডাক্তাররা যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও মার্চের ২৪ তারিখ মারা যায় উদয়। মার্কিন মিত্র শক্তির শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সৌদিআরব এবং তার জোট ইয়েমেনের উপর হামলা চালানোর পর থেকে দেশটিতে যে মানবিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে তার চূড়ান্ত রূপ উদয়ের মতো অবুঝ শিশুর অনাহারে অর্ধাহারে মৃত্যু। প্রায় এক বছর ধরে ইয়েমেনের মাটিতে বোমাবর্ষণ করছে সৌদিআরব।
এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, যুদ্ধের আগে ইয়েমেনের ৬ লাখ ৯০ হাজার শিশু যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম, তারা প্রত্যেকেই অপুষ্টিতে ভুগছিল। কিন্তু যুদ্ধের মাঝে সেই সংখ্যা দাড়িয়েছে প্রায় দেড় মিলিয়নে। যুদ্ধের কারণে এই মুহূর্তে ঠিক কত সংখ্যাক শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে এবং কতজনের জীবন সঙ্কটের মুখে তা জানা যাচ্ছে না। অপুষ্টির কারণে ঠিক কত সংখ্যক শিশু ইতোমধ্যে মারা গিয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান এখনও জানা যায়নি। তবে ইউনিসেফের মতে, প্রায় দশ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগে মারা গেছে গত এক বছরে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন