চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকের দরজা বন্ধ!
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি এবং এই বছর কুমিল্লা বোর্ড থেকে এইচএসসি পাস করা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পারেননি। তাঁর ‘অযোগ্যতা’ তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। কেবল তিনি নন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর জন্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের দরজা বন্ধ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, যেকোনো শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা এবং ২০১৫ বা ২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করতে পারবেন।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক বা সমমান এবং ২০১৬ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড উল্লেখ না করলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তা করেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন বাউবির শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিবছর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষেত্রেও তা–ই হয়েছে। কৃষক পিতা আবদুর রউফের ছেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. জাহাঙ্গীর আলম ‘সমন্বিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম’ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) থেকে ৪.৩০ পেয়ে এসএসসি পাস করেছেন। এরপর কুমিল্লা বোর্ডের অধীন ফেনী ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ২০১৬ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। উচ্চমাধ্যমিকে তিনি জিপিএ পান ৩.৮৩।
১৫ অক্টোবর সকালে তিনি তাঁর এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ফেনীর আঞ্চলিক কার্যালয়ে উপস্থিত হন। জাহাঙ্গীর বলেন, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তির পরীক্ষায় আবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সুযোগ পাননি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দরখাস্ত করার অনুমতি পেয়েছি। কিন্তু বারবার যোগাযোগ করেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য দরখাস্ত করারও অনুমতি পাইনি। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরম উত্তোলন করার অনুমতি দিয়ে আমাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথ অবারিত করলে ভালো হতো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ কামরুল হুদা বলেন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনিয়মিত হওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরম উত্তোলন করতে পারেন না। তা ছাড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো বোর্ডও নেই। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বয়সও থাকে অনেক বেশি।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রাম আঞ্চলিকের পরিচালক বদরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েও আমাদের বেশ কিছু শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়েছে। দেশের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা ফরম উত্তোলন করতে পারে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত। তবু আমরা আশাবাদী, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেবে।’
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা বলেন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন না কেন, সে প্রশ্নের জবাব সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই দিতে পারবে। এ বিষয়ে মঞ্জুরি কমিশনের কিছুই করার নেই। তবে ঢাকা বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তাঁরা ভর্তির যোগ্য হন, তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন অযোগ্য হবেন, সেটাও একটা প্রশ্ন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন