মুখোশের আড়ালে থাকা মুখ দেখতে ভালোবাসেন গ্রিগরি মামুরিন ওরফে গ্রিশা। কিন্তু তাঁর বিবিধ দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রাশিয়ার মানুষ।

কোটিপতি প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর নাতি গ্রিশার নিত্যনতুন বেয়াড়া খেয়ালে ব্যতিব্যস্ত মস্কোবাসী। কখনও প্রকাশ্যে মেয়েদের নগ্ন করে, কখনও বা অন্যের প্রেমিকাকে যৌন প্রস্তাব দিয়ে বা পথচলতি মানুষকে নিজের মূত্র পান করিয়ে রীতিমতো ত্রাস সঞ্চার করছেন এই ধনকুবের তরুণ। ছবি পরিচালনার শখ গ্রিশার। নিজের কিম্ভূত অভিযানের ভিডিও তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে আলোড়ন তৈরি করেছেন।

প্রতিটি মানুষ আসলে মুখোশধারী। পরিস্থিতি ও প্রয়োজন অনুযায়ী সে অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে। এমনই বিশ্বাস গ্রিশার। নিজের ধারণা হাতেকলমে প্রমাণ করতে রুবলের বান্ডিল হাতে শহরের পথে পথে ঘুরছেন। অর্থের বিনিময়ে এর মধ্যে বেশ কিছু অসাধ্য সাধন করেও ফেলেছেন খামখেয়ালি তরুণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিতে কখনও তাঁকে দেখা যাচ্ছে নগ্নিকার শরীরে শ্যাম্পেনের বোতল উপুড় করে দিতে। কোথাও বা চলন্ত গাড়ির ব্যাকসিটে বসে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন সুন্দরীর বস্ত্রমোচন। আবার নিরীহ সারমেয় ছানাকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে উড়িয়ে দেওয়ার জন্যও রুবল দেখিয়ে বশ করে ফেলছেন ‘সহনশীল’ নাগরিককে।

নিজেকে হলিউডের বিশ্বখ্যাত পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের সঙ্গে তুলনা করেন গ্রিশা। কিন্তু দেশে তাঁর দুর্নামে কান পাতা দায়। রাশিয়ানদের মতে, ধনীর বখাটে সন্তান ছাড়া গ্রিশার কোনও পরিচয় নেই। ধনকুবের তরুণের অবশ্য তাতে বিশেষ হেলদোল নেই। তাঁর সাফ কথা, ‘আমি বিচারকের আসনে বসিনি। আমি বিশ্বাস করি, বিশেষ পরিস্থিতি ও চাহিদার দরুণ মানুষ বিভিন্ন রকমের কাজ করতে বাধ্য হয়। হয়তো ওদের জায়গায় আমি থাকলে একই আচরণ করতাম।।।সাম্প্রতিক ভিডিওতে দেখা গেছে, রাতের শহরে এক যুগলের সঙ্গে অভাবনীয় দর কষাকষিতে মেতেছেন গ্রিশা। যুবতীকে তিনি সরাসরি যৌন মিলনের প্রস্তাব দেন। তাঁর সঙ্গীকে রাজি করাতে প্রথমে ১,৫০,০০০ রুবল দাম দেন। উত্তরে ওই যুবক তাঁকে ঘুষি মারতে যান। তাঁকে শান্ত করে রুবলের পরিমাণ বাড়াতে শুরু করেন গ্রিশা। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, ২,৩০,০০০ রুবলের বিনিময়ে প্রেমিকাকে সওদা করতে সম্মত হয়েছেন যুবক। শুধু গ্রিশাকে অনুরোধ করেন, কোনও সেক্স টয় যেন প্রয়োগ করা না হয়এবং সঙ্গমের সময় যেন অবশ্যই কনডম ব্যবহার করা হয়। তবে লেনদেন নগদেই সারতে চান যুবতীর প্রেমিক। জানান, ব্যাঙ্ক ট্রান্সফারে তাঁর আস্থা নেই। প্রসঙ্গত, এই আজব সওদার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১৬ লক্ষ জন দেখেছেন।

এ ভাবেই অর্থের টোপ গিলে রাস্তার এক কুকুরছানাকে গুলি করে হত্যার প্রস্তাবে রাজি হন মধ্যবয়সী মস্কোবাসী। গ্রিশার কথায় রাজি হয়ে উল্টে পরামর্শ দেন, বন্দুক নয় গাছের আড়ালে গিয়ে অবলা জীবটিকে গলা টিপেই তিনি খুন করতে পারেন। গ্রিশার পকেটে রুবলের তাড়া দেখে প্রকাশ্যে জামা পোশাক খুলে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করেননি একাধিক যুবতী। এমনকি তাঁদের উন্মোচিত স্তনের ওপর মহার্ঘ্য শ্যাম্পেন ঢেলে রাস্তার ওপরই গোসল করিয়েছেন গ্রিশা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে হোটেলের ঘরে একদল স্বল্পবসনা সুন্দরীর সঙ্গে শরীরী খেলায় মাততেও দেখা গিয়েছিল রাশিয়ার এই অর্থবান তরুণকে। ঠোঁটে দামি সিগার গুঁজে একের পর এক রূপসীর অন্তর্বাস হেলায় খুলে ফেলেছিলেন তিনি। আর এ সবই মোটা অর্থের বিনিময়ে।

খেপাটে গ্রিশার কাণ্ডকারখানায় ইতি টানতে অনেক চেষ্টা করেছেন কোটিপতি ব্যবসায়ী দাদু। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমের আক্রমণ থেকে গ্রিশাকে আড়াল করতে সদা সচেষ্ট তাঁর মা। অনলাইনে যৌনতার বন্যা বইয়ে দিলেও সাংবাদিকদের সামনে ছেলে যেন কিছুতেই না পড়ে, সে বিষয়ে তিনি সতর্ক। অতএব যতই সমালোচনার ঝড় বয়ে যাক, মায়ের চোখে এখনও নিষ্পাপ, নির্মল ও সততার প্রতীক গ্রিশা।