একরাতে মরেছিল ৭ কন্যা, আজও শোনা যায় চিৎকার
কেল্লার দরজায় সাতটি কন্যার ছবি৷ তাদের চোখ দেখলে ভয় পান এলাকাবাসী৷ গভীর রাতে শোনা যায় অত্যাচারের তীব্র চিৎকার৷ গোটা দেশ যখন অক্ষয় তৃতীয়ার উৎসবে সামিল৷ তখন কেল্লার লাগোয়া গ্রামে অশুভ দিন পালিত হয়৷ সবমিলে রোমাঞ্চ আর ইতিহাসে ঠাসা এক অদ্ভুত কেল্লা৷ যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গা ছমছমে গল্প৷
ভারতের উত্তরপ্রদেশের ললিতপুর জেলা৷ এখানকার তালবেহট গ্রামের কেল্লার গল্প অন্তত ১৫০ বছরের পুরনো৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিনের আলোতেই কেল্লায় যেতে ভয় পান সবাই৷ চট করে কেউ সেখানে যায়না৷
১৫০ বছর আগে একটা ভয়ানক কাণ্ড ঘটেছিল ললিতপুর কেল্লায়৷ তারপর থেকে এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে ভয়৷ কেল্লার মূল ফটকে আঁকা সাত কন্যার ছবি এই ভয়ের কারণ৷ কেনও এমন ভয়?
১৮৫০ সালের ঘটনা৷ ললিতপুর সংলগ্ন বাতপুরের জমিদার ছিলেন মর্দন সিং৷ জমিদারির কাজে আসা যাওয়ার সময় স্থানীয় তালবেহট গ্রামের কাছে একটি কেল্লা বানিয়েছিলেন৷ ১৮৫৭ সালে দেশজুড়ে ‘সিপাহি বিদ্রোহ’(ঐতিহাসিকদের একাংশের মতে মতে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম) ছড়িয়ে পড়ে৷ সেই বিদ্রোহে অংশ নেন জমিদার মর্দন সিং৷ তিনি সরাসরি ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাইয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই শুরু করেন৷ কুশলী যোদ্ধা ছিলেন মর্দন সিং৷ এলাকায় এখনও তাঁর নাম সম্মানের সঙ্গেই নেওয়া হয়৷ মর্দন সিং সম্মান পেলেও তাঁর পিতা প্রহ্লাদ সিংয়ের নাম শুনলে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেন এলাকাবাসী৷
শোনা যায়, বিদ্রোহের মাঝে এক অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ললিতপুরের মহিলারা রীতি মেনে জমিদার বাড়িতে দাণ গ্রহণ করতে গিয়েছিলেন৷ সেই দলে ছিল তালবেহট গ্রামের সাত কন্যা৷ তাদের রূপ দেখে কেল্লায় একলা থাকা প্রহ্লাদ সিংয়ের মাথা ঘুরে যায়৷ সেপাই পাঠিয়ে সাত কন্যাকে বন্দি করে৷ তারপর তাদের ধর্ষণ করে বৃদ্ধ প্রহ্লাদ সিং৷ লজ্জায় ওই সাত কন্যা কেল্লার ছাদ থেকে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেছিল৷ তালবেহট গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে হাহাকার৷
পরে সব জানতে পারেন জমিদার মর্দন সিং৷ পিতার কুকর্মে রীতিমতো মুষড়ে পড়েন রানি লক্ষ্মীবাইয়ের সহযোগী৷ মর্দন সিংয়ের নির্দেশে এক চিত্রকর কেল্লার মূল ফটকের উপর ধর্ষিতা সাত কন্যার ছবি এঁকে দিয়েছিলেন৷ সেই ছবি এখনও রয়েছে৷ তবে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি আর পালন করেন না ললিতপুরের তালবেহট গ্রামের বাসিন্দারা৷ এই দিনটি তাঁদের কাছে অশুভ৷
ধর্ষণের শিকার ওই সাত কন্যার অতৃপ্ত আত্মার চিৎকার এখনও কেল্লার ভিতরে প্রায়ই শোনা যায়৷ জানিয়েছেন এলাকাবাসী৷ এমনি করেই দেড়শ বছর পার হয়ে গিয়েছে৷ যোদ্ধা জমিদার মর্দন সিংয়ের কেল্লা ক্রমে ভৌতিক বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে৷ দিনে হোক বা রাতে চট করে কেউ সেখানে যেতে চাননা৷ কেল্লার মূল ফটকে আঁকা সেই সাত কন্যার চোখ যেন সর্বক্ষণ প্রতিশোধের জন্য মুখিয়ে রয়েছে৷কলকাতা২৪
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন