এক কবরে জায়গা হলো না সেই প্রেমিক যুগলের
রাজশাহী : আত্মহত্যার আগে চিরকুট লিখে যাওয়া রাজশাহীর প্রেমিকজুটি শারমিন খাতুন ও আবদুল মমিনের এক কবরে জায়গা হয়নি। তারা এক কবরে মাটি দেয়ার জন্য বাবা-মায়ের কাছে চিরকুট লিখে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের শেষ অনুরোধ রাখা হয়নি।
শনিবার রাতেই নিজ নিজ গ্রামে তাদের লাশ দাফন করা হয়। ওইদিন সকালে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর কদমতলার মোড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তাদের মরদেহের পাশ থেকে দুটি চিরকুট পাওয়া যায়। তাতে দুজনকে এক কবরে মাটি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। চিরকুটে শারমিন লিখেছেন, ‘বাবা-মা আমায় তোমরা মাফ করে দিও। আমি মমিনকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। আমরা দুজনকে সারাজীবন পেতে চাই। আমি জানি তোমরা মেনে নিবে না। এই দুনিয়ায় না পাই, পরের জনমে তো পাব। আমার ছোট বোনদের মানুষের মতো মানুষ করো। আমার জন্য দোয়া করিও। আমাদের কবর যেন একই কবরে হয়। মমিনকে ছেড়ে যেতে পারলাম না। ভালো থেকো মা-বাবা। ইতি তোমাদের বেয়াদব শারমিন।’
আরেকটিতে মমিন লিখেছেন, ‘আমরা দুজন দুজনকে সবচাইতে বেশি ভালোবাসি। কিন্তু ভালোবাসা এতো কষ্টের দুজন বুঝি নাই। একজনকে ছেড়ে অন্য জন্য কখনো থাকতে পারবো না, তাই দুজন চলে গেলাম সবাইকে ছেড়ে। আমাদের সবাই মাফ করে দিও। আমাদের দুজনের শেষ ইচ্ছা, আমাদের যেন একি জায়গায় কবর দেয়া হয়। আর বাবা-মা তোমরা খুব ভালো থেকো। দোয়া করো। এ জনমে আমাদের মিলন হলো না, পর জনমে যেন মিলন হয়। আমাদের একই জায়গায় যেন কবর দেয়া হয়। আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। ইতি শারমিন+মোমিন।’
নগরীর রাজপাড়া থানার এসআই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাক হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর তাদের মরদেহ দুই পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। আলাদাভাবে তারা দুই মরদেহ নিজ নিজ গ্রামে নিয়ে গেছেন। দুজনের কবর একসঙ্গে না আলাদা হবে তা পুলিশের বিষয় নয়।
নিহতদের স্বজনরা জানান, শারমিনের লাশ পবার শিতলায় এলাকায় এবং মমিনের লাশ মান্দা উপজেলার চকরধিনাথ গ্রামে শনিবার রাতেই দাফন হয়েছে। শারমিনের বাবা রাজমিস্ত্রি চাঁন মিয়া। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে মেয়েকে পড়ালাম। এভাবে কষ্ট দিয়ে যাবে তা কখনোই ভাবিনি। মমিনের বড়ভাই জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, মাসে মাসে পড়ার খরচ পাঠাতাম। এভাবে সর্বনাশ করবে তা কখনো টের পাইনি।
জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে নগরীর লক্ষ্মীপুর কদমতলার মোড় এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেন মমিন ও শারমিন। দুজনে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ওই বাড়িতে থাকতেন। শনিবার সকালে দুজনের গলায় ফাঁস দেয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পাশে দুটি চিরকুট পাওয়া যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন