এক যুগে রাবির ৪ শিক্ষক খুন
রাজশাহী: ২০১৪ সালের ১৫ নভেম্বর বাসার কাছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম শফিউল ইসলামকে। এর দেড় বছরের মাথায় শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে বাসার সামনেই গলা কেটে হত্যা করলো দুর্বৃত্তরা।
সময় ও স্থান আলাদা হলেও একই কায়দায় সংস্কৃতিমনা দুই শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় সহকর্মীদের ধারণা হত্যাকারীরা ‘কমন’ হতে পারে।
রাবিতে গত এক যুগে খুন হয়েছেন ৪ জন শিক্ষক। ২০০৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউনুসকে হত্যা করা হয়। ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ। নিখোঁজের দুইদিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি বাসার পেছনের সেফটিক ট্যাংক থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
২০১৪ সালের ১৫ নবেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাসাভবনের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম শফিউল ইসলামকে।
এই তিন শিক্ষকের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন ছাত্রশিবির এবং বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ শনিবার সকালে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। তাই রাবির প্রগতিশীল শিক্ষকদের ধারণা তিন শিক্ষকের পথ ধরেই হত্যা করা হলো অধ্যাপক রেজাউল করিমকে।
নৃশংসভাবে হত্যার শিকার এই চার শিক্ষকই প্রগতিমনা এবং মুক্তবুদ্ধিতে বিশ্বাসী ছিলেন। অধ্যাপক রেজাউল ছাড়া অন্য তিন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। এর মধ্যে অধ্যাপক শফিউল এবং অধ্যাপক রেজাউলকে প্রায় একই স্টাইলে হত্যা করা হয়েছে।
রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, অধ্যাপক শফিউল এবং অধ্যাপক রেজাউলের হত্যাকাণ্ড একই ধরণের। তারা দুজনেই সংস্কৃতিমনা ছিলেন। অধ্যাপক রেজাউল ক্লাসের বাইরে তার চেম্বারে বসে সেতারা বাজাতেন, বাঁশি বাজাতেন। কোমলগান্ধার নামে তার সাংস্কৃতিক একটি সংগঠন রয়েছে। শহীদুল্লাহ কলা ভবনে তার চেম্বারে সাংস্কৃতিক কাজ করতেন। বর্ষবরণের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করতেন তিনি।
এভাবে একের পর এক শিক্ষক হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বাড়ছে। যেকোনো সময় যেকোনো শিক্ষক এ ধরনের হামলার শিকার হতে পারেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আশঙ্কা করছেন।
এ ব্যাপারে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত দেড় বছরের ব্যবধানে দুজন শিক্ষককে একই পন্থায় হত্যা করা হলো। হত্যাকাণ্ডের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে হত্যাকারীরা কমন হতে পারে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে শিক্ষক হত্যায় দায়ীদের খুঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন