শনিবার, অক্টোবর ৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

কক্সবাজারে কলাগাছ আন্দোলন তুঙ্গে

কক্সবাজার জেলার ১৯ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেয়ায় ওই সব এলাকায় চলছে কলাগাছ আন্দোলন। জেলার তিন উপজেলা টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ১৯ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ২২ মার্চ। এর দুই দিন আগে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে চকরিয়া ও মহেশখালী পৌরসভার নির্বাচন।

দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম দলীয় মনোনয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। ফলে প্রার্থিতার জন্য দলের মনোনয়ন বাধ্যতামূলক। তাই এ নির্বাচনে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে, তেমনি আছে হতাশা ও বিক্ষোভ। বিশেষ করে মনোনয়ন নিয়ে।

এমনই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কক্সবাজার জেলাজুড়ে। তবে সেটি ব্যতিক্রমী আন্দোলন। কলাগাছ আন্দোলন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় বিএনপি নেতা, ইয়াবা ব্যবসায়ী, জঙ্গি নেতা ও রাজাকার পরিবারের সন্তানসহ বিতর্কিত অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এর প্রতিবাদে ও তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে এসব এলাকার সড়কের দুই পাশে কলাগাছ লাগিয়ে বিক্ষোভ করছেন নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে অর্ধেকের বেশি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা এসেছে তৃণমূল থেকে।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, মহেশখালী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মকছুদ মিয়া। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হলো তিনি মহেশখালীর যুদ্ধাপরাধ মামলার ২২ নম্বর আসামি বড় মোহাম্মদের ছেলে। তার পরিবারের ভূমিকার জন্য একাত্তরে নির্যাতিত সংখ্যালঘু পরিবারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে ইতিমধ্যে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তা উপেক্ষা করে মকসুদ মিয়াকে মনোনয়ন দেওয়ায় মহেশখালীর প্রথম মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার আজম নাগরিক কমিটির ব্যানারে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের রেজুলেশনের ভিত্তিতে দলের পৌর সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু ও সাধারণ স¤পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীর নাম জেলা কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু জেলা থেকে কেন্দ্রে পাঠানো তালিকায় এই দুজনের নাম বাদ দিয়ে অন্য পাঁচজনের নাম পাঠানো হয়। এ নিয়েও চকরিয়াজুড়ে জ্বলছে ক্ষোভের আগুন। কেন্দ্র থেকে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আলমগীর চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও দলের গতবারের প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা সহসভাপতি ও কক্সবাজার ট্রাক মিনিট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন। দলীয় মনোয়ন নিতে অনেক চেষ্টা-তদবির করেও ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ১৭ ফেব্রুয়ারী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে নিজের প্রার্থীতা ঘোষনা দেন সাঈদী।

মহেশখালী কালারমারছড়া ইউনিয়নে তৃণমূলের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন শহীদ পরিবারের সন্তান তারেক বিন ওসমান শরীফ। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তারেকের বাবা ওসমান চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি সেলিম চৌধুরীকে। মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারেক বিন ওসমান শরীফ।

মাতারবাড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা রেজুলেশনের মাধ্যমে জানিয়েছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান এনামুল হক রুহুল ছাড়া অন্য যে কাউকে প্রার্থী করা হলে তাকে মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু সেই এনামুল হক রুহুলকে প্রার্থী ঘোষণা করায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক মাস্টার মাহমুদুলাহ প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ধলঘাটা ইউনিয়নে মনোনয়ন দেওয়া হয় দুর্নীতিসহ বহু মামলার আসামি বিতর্কিত ব্যক্তি বর্তমান চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চুকে। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে প্রার্থী ঘোষণা করা হয় ওই ইউনিয়নের একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলামের ছেলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কামরুল হাসানকে।

প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, “অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। সে কারণে একক প্রার্থী মনোনয়ন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় একাধিক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কেন্দ্র সব দিক বিবেচনা করে যাকে যোগ্য মনে করেছে তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছইু ছিল না।”

একইভাবে কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পরে তীব্র সমালোচনার মুখে আরিফ মোশারফকে প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হয়।

সাবরাং ইউনিয়নে প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী নুর হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা সোনা আলীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নুর হোসেনের কর্মী-সমর্থকরা কলাগাছ রোপন করে প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে সোনা আলীকে বাদ দিয়ে নুর হোসেনকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। অন্যতায় নুর হোসেনকে নাগরিক কমিটির প্রার্থী করা হবে বলেও প্রতিবাদী নেতাকর্মীরা জানান।

হ্নীলা ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান এইচ কে আনোয়ারকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে অপর প্রার্থী মাহবুব মোর্শেদের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান।

এভাবে প্রথম পর্যায়ের দলীয় প্রতীক নিয়ে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর যেমন ছড়াছড়ি দেখা যাচ্ছে, তেমনি বিতর্কিত ব্যক্তিরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর নাম ঘোষিত না হওয়ায় সড়কে কলাগাছ রোপণ ও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই এই বিক্ষোভের দানা চরম আকার ধারণ করেছে। অভিযোগ উঠেছে, মাঠের কর্মীদের অবমূল্যায়ন করে টাকার মূল্যায়নে প্রার্থী মনোনয়ন করা হয়েছে। উপেক্ষা করা হয়েছে তৃণমূলের মতামতকে।

বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগে বিক্ষোভের মাত্রা বেশি। দলের ভেতরের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে বাইরে ছড়িয়ে গেছে। বিক্ষোভ দমনে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মহেশখালীর কালারমারছড়ায় সেলিম চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা বরাদ্দ দেয়ায় বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার তারা ইউনিয়নে মিজ্জির পাড়া থেকে চালিয়াতলি পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার কলাগাছ রোপণ করে ক্ষোভ ঝেড়েছে। তারা জানান, ঘাতকদের হাতে নিহত ওচমান গণি চেয়ারম্যানের ছেলে ও মহেশখালী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হোছাইন ইব্রাহীমের ভাইপো তারেক শরীফই নৌকার উপযুক্ত প্রার্থী। তাকে নৌকা প্রতীক না দিয়ে শহীদ পরিবারকে অবমাননা করা হয়েছে। সেলিম চৌধুরী প্রার্থিতা বাতিল না করলে এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের ভরাডুবি হবে বলে জানান বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নের খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে কলাগাছ রোপণ করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কলাগাছ ফেলে প্রায় তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে হ্নীলা পুরান বাজার এলাকা থেকে কলাগাছ নিয়ে মিছিল বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এরপর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। তারা এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী

কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায়  ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।  মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন

চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট

প্রায় সাড়ে চার বছর পর আগামী ২৯ জুলাই থেকে চালুবিস্তারিত পড়ুন

রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান

‘আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে, ঘরের ছেলে ঘরেবিস্তারিত পড়ুন

  • ছুটি শেষে কর্মচঞ্চল আখাউড়া স্থলবন্দর
  • নোয়াখালীতে অস্ত্র ঠেকিয়ে কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ
  • মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষুধ পাওয়ায় চার ফার্মেসিকে জরিমানা
  • সরাইলে ভূমিহীন পরিবারের মানববন্ধন
  • অবৈধ কোরবানির হাটে আদায় লাখ-লাখ টাকা! মোল্লার হাট
  • কক্সবাজার স্পেশাল’ ট্রেন চালু হবে আগামী ১২ জুন
  • এমপির বোন জামাই ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ছেলের জয়
  • সংসদ সদস্য নয়নের বিরুদ্ধে বক্তব্য ছিল কুরুচিপূর্ণ: বাক্কি বিল্লাহ
  • সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
  • চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ৫
  • লক্ষ্মীপুর জেলায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু
  • সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়ের আশঙ্কা