কল্যাণপুরে নিহত ‘সাব্বিরুলকে’ নিয়ে ধূম্রজাল!
রাজধানীর কল্যাণপুরে পুলিশের অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন নয় জঙ্গির মধ্যে চট্টগ্রামের সাব্বিরুল হক কণিককে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সাব্বিরুলের বাবা আজিজুল হক চৌধুরী ও পরিবারের অন্য স্বজনরা পুলিশের প্রকাশিত ছবি দেখে সাব্বিরুলকে চিহ্নিত করলেও পুলিশ এখনো তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি। ‘অপারেশন স্টর্ম-২৬’-এ নিহত নয় জঙ্গির ছবি প্রকাশ করার পরই নিখোঁজ সাব্বিরুলকে শনাক্ত করে তাঁর পিতা আজিজুল হক। ঐ দিনই তার বক্তব্যসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশও করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) পরে নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত জাতীয় পরিচয়পত্রের আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে নিহত সাত সন্দেহভাজন জঙ্গির পরিচয় প্রকাশ করে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তাদের ওয়েবসাইটে এই সাত জনের বিস্তারিত পরিচয় ও ঠিকানা প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে সাব্বিরুল নেই।
প্রকাশিত নয় জঙ্গির মধ্যে সাব্বিরুলের পরিবার বাঁথেকে দ্বিতীয় ছবিটির সাথে সাব্বিরুলের মিল খুঁেজ পাওয়ার কথা বললেও মূলত ওই ছবিটি পটুয়াখালীর কুয়াকাটার আবু হাকিম নাঈমের বলে চিহিৃত করে পুুলিশ। ফলে সাব্বিরুলকে নিয়ে সৃষ্টি হয় ধু¤্রজাল।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নিহত ৯ জঙ্গির সাতজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও দুই জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। আর এই দু‘জনের মধ্যে সাব্বিরুল হক কণিক আছেন কি না তা নিশ্চিত করা যায়নি এখনো।’ ছবি দেখে সাব্বিরুলকে চিহ্নিত করার খবরে পুলিশ তাঁর বাবা ও পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান এসপি।
তিনি বলেন, ‘সাব্বিরুল হক কণিকের বাবা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন। তার বড় ভাই মোজাম্মেল হক চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা।’
তিনি বলেন, ‘আজিজুল হক চৌধুরীর সঙ্গে এ নিয়ে আমরা কথা বলেছি। উনি ছবির সঙ্গে তার ছেলের চেহারার কিছু মিল দেখতে পাচ্ছেন বলেছেন। তাকে আমরা লাশের আরও ছবি দেখিয়েছি। কারণ পত্রিকায় ছাপা ছবির প্রিন্ট ছোট, তাই অনেক সময় বোঝা যায় না। কনিকের বাবা বলেছেন, তিনি এখনো নিশ্চিত নন যে এটি তারই ছেলে। চোখ, চুল এবং আরও কিছু বিষয়ে অমিল দেখার কথা বলছেন তিনি।’
পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জানান, লাশ সরাসরি দেখতে ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন আজিজুল হক।’ তবে আজিজুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সবশেষ অবস্থান সম্পর্কে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও আজিজুল হকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সাব্বিরুল হক কণিকের চাচাতো ভাই ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বাপ্পাও সাব্বিরুলের বাবার ঢাকা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আজিজুল হক চৌধুরী বুধবার চট্টগ্রামের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নিহত নয় জঙ্গির ছবির দ্বিতীয় জনের সাথে তাঁর ছেলে সাব্বিরুল হক কণিকের চেহারার মিল রয়েছে। চাচাতো ভাই ওয়াহিদুল হক চৌধুরীও বলেছিলেন একই কথা।
উল্লেখ্য, সাব্বিরুল হক কণিক আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটির ইকনোমিক অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ২০১০ সালে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল থেকে গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে এসএসসি এবং ২০১২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
এইচএসসির পর চট্টগ্রামের চকবাজারে জামায়াত-শিবির পরিচালিত রেটিনায় কোচিং করতে গিয়ে হঠাৎ করে কণিকের কথাবার্তা, চালচলনে পরিবর্তন দেখা দেয় বলে জানান তার পরিবারের স্বজনরা।
স্বজনরা জানান, চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তার পুলে অবস্থিত মাইকবিহীন মসজিদে নিয়মিত নামাজ পড়তেন সাব্বিরুল হক কণিক। এই সময়েই পাল্টে যান কণিক। বলতে থাকেন তিনি ছাড়া আর কারো ধর্মকর্ম শুদ্ধ নয়।
তবলিগের কথা বলে মাঝে মাঝে সপ্তাহ-দশ দিনের জন্য উধাও হয়ে যেতেন। বছর খানেক আগে একবার তিনমাসের জন্য নিরুদ্দেশ থাকার পর বাসায় ফিরে আসেন। সর্বশেষ গত চার মাস আগে রাউজানে এক বিয়েতে যাবার কথা বলে বাবার কাছ থেকে পাঁচশ টাকা নিয়ে বের হন। সেই থেকে নিখোঁজ কণিক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন