কান ধরে এ কেমন প্রতিবাদ?
শাবিপ্রবি : নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে কান ধরে উঠবস করিয়ে এক শিক্ষককে ‘সাজা’ দেয়ায় নিজেদের কান ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সাড়ে ১১টায় শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আধা ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা সারাদেশে শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানির প্রতিবাদে কানে ধরে মৌনবন্ধনে আবদ্ধ হন।
গত ১৩ মে বিকেলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি এবং শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে গণপিটুনি দিয়ে সবার সামনে কান ধরে উঠবস করিয়ে ক্ষমা চাওয়ানো হয়।
তবে ওই শিক্ষক বলছেন, তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এর আগেও কয়েকবার বিভিন্ন ইস্যুতে ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়ে সবশেষ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ তাকে অপদস্ত করা হয়।
মৌনবন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এভাবে হয়রানির শিকার হলে শিক্ষকদের মর্যাদা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, সেটা আজ ভাববার বিষয়। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করবে।
তারা বলেন, মানবিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শ্যামল কান্তি ভক্ত স্যারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতেই এ কর্মসূচি। সংশ্লিষ্ট সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কর্মসূচির আহ্বায়ক ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাগরিকা চৌধুরী, সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম নোমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, মুশতাক আহমদ, শাহরিয়ার সোহান, খইরুম কামেশ্বর, স্বপন আহমেদ প্রমুখ।
ওই শিক্ষককে অপদস্ত করার তিনদিন পর বন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকম নুরুল আমিনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হচ্ছেন উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
সোমবার (১৬ মে) তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে প্রধান শিক্ষককে অপদস্ত করার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তথ্য পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি হলো, মসজিদের মাইকে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে পরিস্থিতিকে উসকে দেয়া।
বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হাবিবও জানিয়েছেন, আহত স্কুল ছাত্রের অভিযোগে ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি উল্লেখ ছিল না। এ ছাড়া ম্যানেজিং কমিটির বিরোধের বিষয়ে তারা তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করবেন।
শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত এখন নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে ভর্তি চিকিৎসাধীন। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালে কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হচ্ছেন না।
এদিকে, একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় বাংলাদেশকেই কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে, এমন মন্তব্য করে শাহবাগে জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে ‘লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংস্কৃতিক কর্মীবৃন্দ’। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় তারা প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিচার চাইছেন ব্যবহারকারীরা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন