কেমন আছেন বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের মা
‘কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পরেছে লতাটা, সজনে ডাঁটায় ভরে গেছে গাছটা, আর আমি ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি। খোকা তুই কবে আসবি ? কবে ছুটি?’ কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর এই কবিতার লাইনের মতো বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের মা মালেকা বেগম (৭৭) এর খোকাও ফিরে আসেনি আর।
ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন মা মালেকা বেগম। একে একে পরিবারের ৮ সদস্যের চলে যাওয়া দেখেছেন। বুকের ভেতর তার সে হারানো বেদনার ডালি। স্মৃতিবয়ে প্রতিদিন সবার অজান্তে তাদের কথা ভেবে চোখের কোনে জমা হয় জল। কখনো অশ্রু ঝরে তার বীরশ্রেষ্ঠ সন্তানের কথা ভেবে।
ছেলে যুদ্ধে যাওয়ার আগে বলে গেছেন- দোয়া করো মা, হয়তো আর ফিরে নাও আসতে পারি। সেই যে গেলো, মা-ছেলের আর দেখা হলো না।
মজার তথ্য হচ্ছে, ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলা দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের জন্ম। আর বাংলাদেশের গৌরবময় মহান বিজয় দিবসও ১৬ ডিসেম্বর ।
১৯৮২ সালে মেঘনার নদীর ভাঙ্গনে দৌলতখানের বাড়িটি বিলীন হওয়ার পর তার পরিবার ভোলা শহরে আলীনগর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামে চলে আসেন। এর পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের পক্ষ থেকে ৯২ শতাংশ জমির ওপর ‘শহীদ স্মরণীকা’ নামে এক তলা পাকা ভবন নির্মাণ করে পরিবারটিকে পুনর্বাসন করা হয়।
স্বামী, সন্তান, নাতীসহ পরিবারের ৮ সদস্যকে হারিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের মা মালেকা বেগম এখন বাকরুদ্ধ প্রায়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে হারান প্রিয়পুত্র মোস্তফা কামালকে। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আখাউরায় পাক সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ হন পুত্র মোস্তফা কামাল। সেই শহীদের রক্তের বিনিময় অর্জিত স্বাধীন দেশে কেমন আছে তার মা, এ খবর আর রাখেনা কেউ।
দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠর মধ্যে মোস্তফা কামাল একজন। এরপরও তার পরিবারটি পায়নি সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোন সহায়তা। মিউজিয়াম কাম লাইব্রেরি নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৯ সালে মোস্তফা কামালের বাড়ির এক পাশে ‘গ্রন্থগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণ হলেও প্রায় সময়ই বন্ধ থাকে এটি।
মোস্তফা কামালের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে জানান, গত জোট সরকারের আমলে তিনি ঢাকায় মোস্তফা কামালের নামে হওয়া স্টেডিয়ামে মাস্টার রোলে চাকরি করতেন। চাকরিটি স্থায়ীকরনের জন্য বার বার সরকারের কাছে আবেদন করলেও কোন লাভ হয়নি। সেখানে যা বেতন দেয়া হতো তা দিয়ে পরিবারের খরচ তো দূরের কথা নিজে চলাও কঠিন হয়ে যেত। এ ছাড়া নিয়মিত বেতন না পাওয়ায় কয়েক বছর আগে অভিমানে চাকরি ছেড়ে ভোলায় এসে চাষাবাদ করে কোন মতে সংসার চলাচ্ছেন মোস্তাফিজু রহমান।
তিনি জানান, শহীদ পরিবারের তার দুই ছেলে অর্নাস শেষ করেও ভাগ্যে জোটেনি কোন সরকারি চাকরি। কবে সংসারের অভাব দূর হবে এ আশায়ই দিন গুনছে এখন তার পরিবার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন