‘কোনো দৈব ঘটনায় সরকারের পতন ঘটে যেতে পারে’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে রাজপথের আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটানো কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিএনপির নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাই তারা মারমুখী ও বেপরোয়া, জনগণকে গুলি করতেও দ্বিধা করে না। রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় একান্ত সাক্ষাৎকারে শামা ওবায়েদ বলেন, সরকার পতনই বিএনপির চূড়ান্ত লক্ষ্য নয়। আল্লাহর ওপর ভরস রেখেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে তার দল। আলাপচারিতায় ছিলেন মহিউদ্দিন মাহী
বিএনপির মতো বড় একটি দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন। তাও নারী হিসেবে প্রথম আপনিই পেলেন এই পদ…
নারী বলে কথা নয়। যোগ্যতার প্রমাণ রাখতে পারলে যে কেউ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে পারেন। দল আমাকে যোগ্য মনে করেই এই দায়িত্ব দিয়েছে। নেত্রীর প্রত্যাশা পূরণ করার বিষয়ে আশাবাদী আমি।
বৃহত্তর ফরিদপুরকে বলা হয় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। আর এই সাংগঠনিক বিভাগেই দায়িত্ব পেলেন। আপনার জন্য তো বিরাট চ্যালেঞ্জ এটি।
আমার বাবা ছিলেন বিএনপির মহাসচিব। ফরিদপুর থেকে তিনি একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফরিদপুরে বিএনপিকে তিনি নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। সুতরাং ফরিদপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি এমনটি নয়। আমি ছোটবেলা থেকেই বাবার সুবাদে বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম। নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে দেখেছি। এটি আমার জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিএনপিকে আরও শক্তিশালী এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সব নেতাকর্মীকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
বাবার পরিচয়েই কি তাহলে বিএনপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে এসেছেন?
রাজনীতিতে আসার পেছনে বাবার অবদান আছে। কিন্তু বাবার কারণেই বা তার নামের কারণেই বিএনপিতে পদ পেয়েছি এমনটা নয় কোনো মতেই। দীর্ঘ মেয়াদে নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতাই মূল চাবিকাঠি। যোগ্যতা দিয়েই টিকে থাকতে হয়।
রাজনীতিতে আপনি গ্লামার কন্যা হিসেবে পরিচিত। আপনার এতদূর আসার পেছনে কী আপনার সে পরিচিতি কাজ করেছে?
আমি আগেই বলেছি, দক্ষতার বিকল্প নেই। গ্লামার বা অন্য কিছু দিয়ে সাময়িক কিছু পাওয়া গেলেও দীর্ঘস্থায়ী কিছু অর্জন করা যায় না। আমি হুট করে নেতৃত্বে আসিনি। দুইবার দলের হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছি। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলাম। এবার দল পুনর্গঠনে চেয়ারপারসন আমাকে মূল্যায়ন করেছেন। এটা তো পরিশ্রমের ফসল।
এবার আন্দোলন প্রসঙ্গে আসা যাক। বিএনপি তো অনেক চেষ্টা করল, কিন্তু ফল তো শূন্য…
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। সরকারের পতন ঘটানোই বিএনপির উদ্দেশ্য নয়। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছে। সরকারের বিভিন্ন কর্মকা-ের সমালোচনা করছে। এভাবেই আন্দোলন এগিয়ে যাবে।
সরকারের বর্তমান মেয়াদে অনেক ইস্যু ছিল যেগুলো নিয়ে বিএনপি সেভাবে কথা বলেনি…
সব ইস্যু হাতছাড়া হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। বিএনপি সব বিষয়েই সরব। দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। তারা কোনো কিছুই আমলে নিচ্ছে না।
বিএনপি তাহলে এখন কী করবে, এভাবে আর কতকাল চলবে?
বিএনপি দলকে শক্তিশালী করে মাঠে নামবে। তখনই দেখা যাবে কী হয়।
এর আগেও বিএনপি আন্দোলন করেছে। ২০১৩ সালে অনেক ভালো আন্দোলন করেও সরকারের কিছু করতে পারেনি বিএনপি। ভবিষ্যতেও কি সম্ভব?
বিশ্বে কোনো স্বৈরশাসকই স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। আমাদের দেশেও কেউ পারেনি। সুতরাং শেখ হাসিনা সরকারও পারবে না।
কিন্তু বিএনপির এখন যে অবস্থা, তাতে তারা সরকারকে টেনে নামাতে পারবে?
আবার বলছি, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাবে। বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে এটাই মূল লক্ষ্য নয়। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে না। দেশের জন্য, মানুষের জন্য রাজনীতি করে। দেশের জনগণ সরকারের পতন ঘটিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে।
নানা সময় বিএনপির কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তারা নেতাদের পান না। পুলিশের ভয়ে তারা গুটিয়ে থাকেন। এভাবে কর্মীরা বা জনগণ কী মাঠে থাকবে?
জীবনের মায়া কার না আছে? সবাই জীবন বাঁচাতে চায়। পুলিশ যেভাবে গুলি করে তাতে মাঠে কীভাবে দাঁড়াবেন তারা? আমার নির্বাচনি এলাকায় ২০১৩ সালে পুলিশের গুলিতে এক যুবদল কর্মী নিহত হয়েছে। এভাবে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে। এসবের তো বিচার একদিন হবে।
কেউ যদি মাঠে না থাকে আন্দোলন কীভাবে হবে?
সর্বশেষে আল্লাহ তো আছে। যেকোনো দৈব ঘটনায় সরকারের পতন ঘটে যেতে পারে। এটা তো কেউ বলতে পারে না। অতীত ইতিহাস তো তাই বলে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন