‘খাবারের জন্যে পাগল আমি, ওজন সামলাতে কি করবো?’

জীবনের নানা বিষয়ে সমস্যায় জর্জরিত মানুষ। অনেক সময়ই তারা নিজেরা সমাধান করতে ব্যর্থ হন।
তখন প্রয়োজন পড়ে বিশেষজ্ঞের। এখানে এমনই এক সমস্যা নিয়ে লিখেছেন একজন। তার সমাধান দিচ্ছেন ভারতের সেলিব্রিটি ক্লিনিক্যাল সাইকোথেরাপিস্ট এবং স্পিরিচুয়াল লাইফ কোচ ড. তৃপ্তি জৈন।
সমস্যা নিয়ে একজন লিখেছেন, আমার পছন্দের তালিকার শীর্ষ রয়েছে খাবার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে আমার ওজন ছিল ৭৫ কেজি। কিন্তু এ নিয়ে আমার কোনো সমস্যাই ছিল না। সবাই আমাকে দারুণ ভালোবাসতেন। আমি যে কলোনিতে থাকি, সেখানকার কয়েকজন বন্ধু আমাকে প্রায়ই উপহাত করতো মোটা হওয়ার কারণে। এত মোটা একটা মেয়ে সবার উপহাসের উপলক্ষ হবে এটাই স্বাভাবিক। তাদের মধ্যে একটি ছেলেকে আমি মনে মনে পছন্দ করতাম। পরে দুই মাস খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়ামের মাধ্যমে আমি ১৭ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলি। এরপর বহুদিন ধরে আমি নিয়ন্ত্রণেই ছিলাম। ফিটনেস এবং ইয়োগার প্রতি ভালোবাসা গড়ে তুলি। ব্যায়ামেগারে যাওয়া শুরু করি। আমি যখন গর্ভবতী হই তখন আমার ওজন হয় ৮৯ কেজি। কিন্তু তারও প্রায় ১ বছর পর ডায়েট প্ল্যান করি। ওজন কমে আবার ৭৪ কেজি হয়। আবার বেশি বেশি খেতে থাকি এবং ওজন হয় ৮৩ কেজি। এখন অবস্থা এমন যে, আমি যে উদ্দেশ্যে ব্যায়াম, ইয়োগা ইত্যাদি করে গেছি তা আমার খাদ্যাভ্যাসের ওপর কোনো প্রভাই ফেলেনি। প্রোটিনপূর্ণ খাবার নিয়ন্ত্রণ আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখন আমার ওজন ৮৮ কেজি। এই ওজন আমার ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি খাবারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাই। আমার এই আচ্ছন্নতার পেছনে কি কোনো মানসিক সমস্যা কাজ করছে? আমাকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন।
ড. তৃপ্তি জৈন বলছেন, ছোটকালে মুখের তৃপ্তিই বড় হয়ে দেখা দেয়। খাবারের মাধ্যমে তৃপ্তি পাওয়ার বিষয়টি মেলে দুধের মাধ্যমে। এটি খেয়ে শিশুরা ক্ষুধা মেটায় তৃপ্তির সঙ্গে। বেড়ে ওঠার সঙ্গে অন্যান্য খাবারের মাধ্যমে আরো বেশি তৃপ্তিকর অনুভূতি মেলে। বড় হওয়ার পর কেবল যে খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে তাই নয়, নিজের বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া পরিবার ও স্বজ বা বন্ধুদের সঙ্গে চলাফেরা করার কারণেও স্বাদে আসে বৈচিত্র্যতা। আপনি বলেছেন, একটা ছেলেকে পছন্দ করতেন। সে বিষয়টি মাথায় রেখে ওজন কমিয়েছিলেন। কিন্তু আপনি যখনই অন্যের জন্য ওজন কমাবেন, তখন তা বেশিদিন থাকবে না। কাজটি করতে হবে নিজের জন্য। মনে এ বিষয়টি গেঁথে ফেলুন। আপনি নিজের জন্য ওজন কমাবেন এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করবেন। অন্যের কারণে যখন কাজটি করবেন, তখন সেই মানুষটির সঙ্গে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হলে কাজের প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়ে যাবে। তাই নিজের জন্য করতে হবে এ কাজ।
ওজন কমানোর জন্য আপনি যা যা করছেন, তার পেছনে আত্মবিশ্বাস এবং নিজের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। মাথায় রাখবেন, ওজন কয়েক কেজি বেশি মানেই যে আপনি স্মার্ট ও সুন্দর নন, তা নয়। এখানে ওজন কমিয়ে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে কিছু টিপস নিন।
১. ওজন কমানোর ব্যায়াম যারা শুরু করে সফলতা পান, তাদের ৭৫ শতাংশ হারানো ওজন ধরে রাখতে পারেন না। আসলে হারানো ওজন আবার ফিরে আসে। তাই ব্যায়ামের কাজটি নিয়তিম চালিয়ে যেতে হবে।
২. ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার চমৎকার একটি রুটিন আপনাকে অনেক সহায়তা করতে পারে। ঘুম না আসলেই যে ক্ষুধা লেগে যাবে এবং স্ন্যাক্স খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং এ সময় অন্যান্য কাজ করতে পারেন। অন্যান্য স্বাস্থ্যকর শৌখিন কাজ করুন। যেমন সাইক্লিং, অ্যারোবিক্স, ট্র্যাকিং ইত্যাতি।
৩. প্রক্রিয়াজাত খাবার ছেড়ে দিন। চিজ, সব, ব্রেড বা চিপসের মতো খাবার খাবেন না। এদের পরিবর্তে মজাদার স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
৪. ইয়োগা বা অ্যারোবিক্সের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন। আপনি খাবারের প্রতি যতটা আসক্তি, ততটা আসক্তি আনুন ব্যায়ামের প্রতি।
৫. প্রতিনিয়ত ওজন মাপার অভ্যাস ত্যাগ করুন। প্রতিমাসে আপনার যথেষ্ট উন্নতি নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে হতাশা চলে আসতে পারে। তাই লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং এগিয়ে যান।
৬. একবারে স্বাভাবিক পরিমাণ খাবার খাবেন এবং এর পর আর নয়। একে বাধ্যতামূলক করে ফেলুন।
৭. কতটুকু খাবার খাচ্ছেন তার ওপর তৃপ্তি নির্ভর করে না। আপনি দেখবেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবারেই আপনার মাঝে তৃপ্তি চলে আসে। পছন্দের এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণই তৃপ্তি আনবে মনে। এদিকে মন দিন। বেশি খাওয়া মানেই তৃপ্তিকর অনুভূতি নয়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন

এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন

৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন