গরমের কষ্ট বৃষ্টিতে দূর
মৌসুমি বায়ুর কারণে ঢাকাসহ সারাদেশেই বৃষ্টিপাত হয়েছে। কয়েকদিনের একটানা দাবদাহের পর বৃষ্টিতে স্বস্তি নেমে আসে রাজধানীবাসীর মধ্যে। বৃষ্টিতে রাজধানীজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানি জমে নগরীর অলিগলিসহ প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীর দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ব্যাহত হয় যান চলাচল। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
রাজধানীতে বৃষ্টি একই সঙ্গে স্বস্তি এবং অস্বস্তির উপলক্ষ হয়ে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শুরু হওয়া বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন কর্মস্থলে যাওয়া লোকজনসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজধানীতে ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভন্ন স্থানে সকাল থেকেই বৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় মৌসুমি বায়ু সারা দেশে বিস্তৃত হবে। ফলে এ সময়টায় আবহাওয়ার খুব একটা পরিবর্তন হবে না।
আবহাওয়া অধিদফতরের ডিউটি অফিসার আশরাফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেটে সর্বোচ্চ একশ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া শ্রীমঙ্গলে ৩০, ফেনীতে ২৫, রংপুরে ২০, ময়মনসিংহে ২৪, মাদারিপুরে ১৫, ফরিদপুরে ৭, সৈয়দপুরে ৫ ও বগুড়ায় ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েন কর্মজীবী লোকজন। প্রবল বৃষ্টিতে রাজধানীর মালিবাগ, মৌচাক, তেজগাঁওয়ের বিভিন্ন রাস্তায় হাঁটু পানি জমে যায়। এসব স্থানসহ রাজধানীর অন্যান্য রাস্তায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
সময়মতো পানি নেমে না যাওয়ায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মৌচাক, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি-২৭ ও আজিমপুর এলাকায়। গেণ্ডারিয়ার মেথর পট্টিও তলিয়ে যায়। ধানমণ্ডির জিকাতলা থেকে হাজারিবাগ সড়কে রিকশাসহ সব যান চলাচল বন্ধ ছিল। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডেও পানি জমে।
এছাড়া মিরপুরের সনি সিনেমা হল থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানা সড়কেও জমে বৃষ্টির পানি। মাজার রোড ও গাবতলীর বিভিন্ন স্থানেও পানি জমে। রায়েরবাজারের অলিগলিতে হাঁটুপানি জমে। এছাড়াও খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচ থেকে রাজারবাগ হয়ে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত রাস্তা চলে যায় পানির নিচে।
জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় শান্তিনগর, কাঁঠাল বাগান, কাকরাইল, ফকিরাপুল, কমলাপুরসহ আশপাশের এলাকায়। একই অবস্থা হয় বাড্ডা ও নতুন বাজার এলাকায়। এছাড়াও যাত্রাবাড়ী, রায়সাহেব বাজার, মুগদা, মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, সায়েন্স ল্যাব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সড়কে সিএনজি চালিত যানবাহনগুলো বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সকালে অফিসগামী মানুষ ছাতা মাথায় এবং অনেকে বৃষ্টিতে ভিজে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন।
এসব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষা শুরু হলেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু করে দেয় ঢাকা ওয়াসা। এ সময় বৃষ্টি হলে পানি জমে জলাবদ্ধতাসহ সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে রাজধানীর সড়কগুলো জলাশয়ে পরিণত হয়। পানি ঢুকে পড়ে ঘরের ভেতরেও। কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে রাস্তা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার না করার কারণেই পানি সরতে পারছে না। সৃষ্টি হচ্ছে স্থায়ী জলাবদ্ধতার। এমনটাই অভিযোগ এসব এলাকার বাসিন্দাদের।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, রাজধানীতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। শিগগিরই রাজউক ও ওয়াসার সঙ্গে আলোচনা করে জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পনা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, রাজউকের চেয়ারম্যান দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলেই নগরীর এ সব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। ড্রেনেজ ব্যবস্থা মোটেও ভাল নয়। তাই বর্ষার পানি সরছে না। আর এ কারণে নগরীতে ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে। আশা করি শিগগিরই এ সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন