গাজীপুরে মেয়ের সামনে স্বামীকে গলা কেটে হত্যা
পারিবারিক কলহের জের ধরে মেয়ের সামনেই ঘুমন্ত স্বামীকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন স্ত্রী। স্বামীকে হত্যার পর থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন স্ত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর এলাকায়। স্ত্রী পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। নিহত ব্যক্তি হলেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকার মৃত মোতালেব মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৫৫)। গ্রেপ্তার হওয়া স্ত্রী মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার বিক্রমপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাবিবা আক্তার ওরফে রিনা (৩৫)।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জের জাকির হোসেন ২০০৪ সালে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার বিক্রমপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে হাবিবা আক্তার ওরফে রিনাকে বিয়ে করেন। সিনথিয়া আক্তার (১০), সামিরা আক্তার (৫) ও মারিয়া আক্তার (৩) নামে তাঁদের তিন মেয়ে রয়েছে। জাকির হোসেন সফিপুর এলাকায় যমুনা স্পিনিং কারখানায় স্টোরকিপার হিসেবে কাজ করতেন।
চাকরির সুবাদে তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়ে নিয়ে কারখানার সামনে একটি বাড়ির নিচতলায় একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে স্ত্রী রিনা তাঁর স্বামী জাকির হোসেনকে শরবতের সঙ্গে অনেকগুলো ঘুমের বড়ি খাওয়ান। এতে সে অচেতন হয়ে গেলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রিনা একটি ছুরি দিয়ে ঘুমন্ত ও অচেতন স্বামীকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
সকাল ১০টার দিকে বাড়ির অন্য ভাড়াটেরা তাঁদের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে উঁকি দিয়ে রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। এদিকে স্বামীকে হত্যা করে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্ত্রী রিনা কালিয়াকৈর থানায় যান অভিযোগ দিতে। তাঁর আচরণ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে কালিয়াকৈর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে গলা কাটার কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ। থানার কয়েকজন পুলিশ নিহত ব্যক্তির স্ত্রীকে কৌশলে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী ও তাঁর বড় মেয়ে জাকির হোসেনকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তার বর্ণনা দেন। হত্যার দায় স্বীকার করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
রিনা জানান, তাঁর স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায় ঝগড়া হতো। তাঁকে দুদিন মারধর করেছেন। মারধরের সময় তাঁর স্বামী তাঁকে বলেছেন, প্রয়োজনে তোকে মেরে ফেলব। যদি তাকে সত্যি সত্যি মেরে ফেলে সে কারণেই গত বুধবার রাতে স্বামী কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে এলে রাত ১২টার দিকে তাঁকে দুই পাতা ঘুমের বড়ি পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। একপর্যায়ে জাকির অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল হয়ে গেলেও তিনি অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন। গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বড় মেয়ে সিনথিয়ার সামনেই একটি ছুরি দিয়ে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করেন। পুলিশ জিজ্ঞাসা করলে কী বলতে হবে, তা-ও তাঁর মেয়েদের শিখিয়ে দিয়েছেন।এ ব্যাপারে নিহতের ভাই বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, জাকিরকে হত্যার বিষয়টি তাঁর স্ত্রী স্বীকার করেছেন। আদালতে জবানবন্দি নেওয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন