গুলশানে খোকার বাজেয়াপ্ত সেই বাড়ি এখন…
বাড়িটি ব্যস্ত রাস্তার পাশে। গুলশান-২ নম্বর সেক্টরের ৭২ নম্বর সড়ক। কালো সদর ফটকে তালা ঝুলছে। ছয়তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় ঝুঁলছে সাইনবোর্ড। সাদার মধ্যে কালো অক্ষরে লেখা ‘সরকারি সম্পত্তি’।
৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি ছিল না। ঢাকার সাবেক মেয়র, মন্ত্রী ও বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা সাদেক হোসেন খোকা এই বাড়ির মালিক ছিলেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের কারণে দুদকের করা এক মামলার রায়ে তার ১০ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়। তার মধ্যে গুলশানের এই বাড়িটিও ছিল। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ঢাকা জেলা প্রশাসন বাড়িটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সেই থেকে খালি পড়ে আছে সেটি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে গেলে কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পাশের ১১ নম্বর বাড়ি মহুয়ার নিরাপত্তাকর্মী কালু গাজী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘কেউ একজন এখানে থাকে।’ কে থাকে তা বলতে পারেননি তিনি।
বাইরে থেকে তো তালা ঝুলছে। কী করে বুঝলেন কেউ থাকেন এখানে? কালু গাজী জবাব দেন, ‘প্রায়ই তিনতলায় বাতি জ¦লতে দেখি। দুইদিন আগে মোটর পাম্পে পানি তোলা হচ্ছিল। পানি ট্যাঙ্কি ভরে বিল্ডিং বেয়ে রাস্তার পড়ছিল। বাইরে থেকে কাউকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। পরে চিৎকার করে পানি পড়ার কথা বলার পর মোটর বন্ধ হয়েছে।’
ওই পথে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা সব সময় বাড়ির সদর ফটকে তালা ঝুলতে দেখেন। কখনো কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে দেখেননি।
বাড়িটির ঠিক সামনেই ইউনাইটেড হসপিটাল থেকে বেরোবার ফটক। ওখানকার একজন নিরাপত্তাকর্মী ঢাকাটাইমসকে জানান, বাড়িটির দেখাশোনার জন্য সম্ভবত একজন লোক থাকে। মাঝেমধ্যে রাতে তাতে ঢুকতে বেরোতে দেখা যায়।
সর্বশেষ ওই বাড়িটি একটি বায়িং হাউসের কাছে ভাড়া দেয়া ছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের বিদেশি অতিথিরা সেখানে থাকতেন।
আদালতের বাজেয়াপ্তের পরোয়ানার পর ২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাড়িটিতে বাজেয়াপ্তের নোটিশ ঝোলানো হয়। ভাড়াটেরা এক মাস সময় নিয়ে বাড়িটি খালি করে দেন। পরে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে ম্যাজিস্ট্রেট হোসনে আরা বাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নেন। আদালত বাড়িটির দাম ঠিক করেছিল ২ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর গোপন ও অবৈধ স¤পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেনকে ১৩ বছরের কারাদ- দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় খোকা নিউইয়র্কে অবস্থান করছিলেন। তাঁকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার চলে।
রায়ে বলা হয়, আসামি অবৈধ স¤পদের মালিক হওয়ার পাশাপাশি নয় কোটি ৬৫ লাখ তিন হাজার টাকার স¤পদের ওপর প্রযোজ্য কর ফাঁকি দিয়েছেন। রায়ে দুদক আইনের ২৬-এর ২ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় কারণে’ সাদেক হোসেনকে তিন বছর বিনাশ্রম কারাদ- এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করে আদালত। ওই টাকা দিতে না পারলে তাঁকে আরও এক মাস জেল খাটতে হবে। আর অবৈধ স¤পদের মালিক হওয়ায় ২৭-এর ১ ধারা অনুযায়ী ১০ বছর সশ্রম কারাদ-ের রায় হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। জরিমানার টাকা দিতে না পারলে ভোগ করতে হবে আরও ছয় মাসের সাজা।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ২ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রমনা থানায় এ মামলা করে। তাঁর স্ত্রী ইসমত আরা এবং ছেলে ইসরাক হোসেন ও মেয়ে সারিকা সাদেককেও মামলায় আসামি করা হয়। ওই বছরের ১ জুলাই দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর ছেলে-মেয়ের নাম বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন