গৃহবধূকে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন..!!
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
গত বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
ওই গৃহবধূ তিন ছেলের মা। তাঁর স্বামী ও বড় ছেলে ঢাকায় রিকশা চালান। ছোট দুই ছেলে কলারোয়ায় হোটেলের কর্মচারী। তিনি (গৃহবধূ) মাঝেমধ্যে অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে খাটেন। বাড়িতে তিনি একাই থাকেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার সকালে ওই গৃহবধূ নিজেদের জমির সীমানা মাপছিলেন। আর এতেই বাদ সাধেন সাবিরুল সর্দার নামের এক প্রতিবেশী। প্রথমে বাকবিতণ্ডা, পরে মারপিট। এরপর ‘দেখাচ্ছি মজা’ বলেই দরিদ্র গৃহবধূকে ধরে রাখলেন সাবিরুল। চিৎকার দিয়ে বললেন, ‘গরুর দড়ি নিয়ে আয়।’
পরে কয়েকজনের সহযোগিতায় গৃহবধূকে বাড়ির নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন সাবিরুল। একই সঙ্গে লাঠি দিয়ে মারধর করে নির্যাতন চালানো হয় তাঁর ওপর।
এক ফালি জমি নিয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলছিল সাবিরুলের। এর জের ধরেই সাবিরুল তাঁকে মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম জানান, জমি মাপা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সৌদ সরদারের ছেলে সাবিরুল ওই গৃহবধূকে মারধর করে। সাবিরুল ও তাঁর লোকজন গৃহবধূর বাড়িঘর ভেঙে ফেলে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, মার খেয়ে ও অপমানিত হয়ে গৃহবধূ বাড়ি থেকে বের হয়ে থানা পুলিশে অভিযোগ করতে চেয়েছিলেন। বাড়ি থেকে বেরও হন তিনি। সাবিরুল বুঝতে পেরে তাঁকে ফের ধরে আনেন। চিৎকার করে বলেন, ‘দড়ি নিয়ে আয়। থানায় যাবার মজা দেখাচ্ছি। ওর জমিও খাওয়াব চিরদিনের মতো।’
চেয়ারম্যান জানান, এরপরই ওই গৃহবধূকে দড়ি দিয়ে নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন সাবিরুল। পরে লাঠি এনে তাঁকে বারবার আঘাত করেন। রোজাদার গৃহবধূ একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন তাঁর পায়ে গরুর দড়ি পরিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এভাবেই তাঁর ওপর চলে নির্যাতন।
চেয়ারম্যান আরো জানান, গ্রামবাসীর কাছে খবর পেয়ে বিষয়টি তিনি কলারোয়া থানায় অবহিত করেন। তিনি নির্যাতনকারী সাবিরুলসহ অন্যদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, তিনি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গৃহবধূকে উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এখনো সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন ওই গৃহবধূ।
কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পিন্টু লাল বলেন, ‘নির্যাতনের ঘটনায় ওই গৃহবধূ সাবিরুলকে প্রধান আসামি করে সাতজনের রিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। আমরা প্রধান আসামি সাবিরুলকে গ্রেপ্তার করে আজ (গতকাল) বৃহস্পতিবার জেলে পাঠিয়েছি। অপর আসামি মোস্তাক মরদার, আলী হোসেন, আলেয়া খাতুন, মারুফ সরদার, মোসলেম সরদার, ঝর্ণা খাতুন ও আনোয়ারা খাতুনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
কলারোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ জানান, তাঁর কোনো দোষ নেই। তিনি শুধু স্বামীর জমিটুকু রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। এ সময় তিনি সাবিরুল ও তাঁর সহযোগীদের শাস্তি দাবি করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহ উদ্বোধন
আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরাবিস্তারিত পড়ুন
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও গ্রামবাসী একত্রে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
কোটি টাকার স্বর্ণসহ ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী সীমান্ত থেকে ৯ পিছ স্বর্ণের বারসহবিস্তারিত পড়ুন