ঘটা করে বিয়ে হল গাছের, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়
বেলা হতেই হাজির বরযাত্রী। সঙ্গে তাসাপার্টির বাজনা। মেয়ের বাড়িতে তখন সানাইয়ের সুর। বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই জমে উঠল বিয়ে বাড়ির আসর। খানিক বাদে রীতি মেনেই মালা বদল। বিয়ে শেষে খাওয়াও হল পেট পুরে। বর ও কনে ছাড়া আর পাঁচটা বিয়ে বাড়ির সঙ্গে তেমন কোনও পার্থক্যই খুঁজে পাবেন না এই বিয়ে বাড়ির। সবুজ রক্ষা করতেই এভাবেই ঘটা করে গাছের পুজো দিলেন বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বারা গ্রামের বাসিন্দারা।
কেন এই অভিনব বিয়ে? গ্রামবাসীদের দাবি, সবুজ রক্ষা করতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। জানা গিয়েছে, গ্রামের ভিতর একটি পুরনো পাকুড় গাছ ছিল। গ্রামবাসীরা দেড়শো বছর পুরনো সেই গাছের নীচে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে গ্রাম্যদেবতা হিসেবে পুজো শুরু করেন। কিন্তু কয়েকমাস আগে সেই গাছটি মারা যায়। এরপরেই গ্রামবাসীরা ওই গাছের পাশেই একটি বটগাছ রোপণ করেন। এদিন সেই বটগাছের সঙ্গে শিবের পুজো দিলেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামের বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল ‘মেয়ে’ সম্প্রদান করেন। বরের বাবা হিসাবে হাজির ছিলেন অশোক মাল। দুই পরিবারের দুই পুরোহিত হিসাবে দিলীপ ঘোষাল এবং মলয় চক্রবর্তী। সকাল থেকেই বটগাছকে ঘিরে বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানেই তৈরি হয় ছাদনাতলা। তবে মূল অনুষ্ঠান হয় গ্রামের দুর্গা মন্দিরে। মা অন্নপূর্ণাকে সাক্ষী রেখে কন্যা সম্প্রদান করেন বাসুদেব মণ্ডল। সকাল থেকেই চলছিল হরিনাম সংকীর্তন। ছেলে পক্ষের তত্ত্ব আসার পরেই মেয়ের (বটগাছের) গায়ে হলুদ হয়। মেয়ে পক্ষের বড়কর্তা হিসাবে হাজির ছিলেন গোরাচাঁদ দত্ত। ছেলের বাড়ির বড়কর্তা গ্রামেরই প্রাক্তন শিক্ষক মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন। বিয়ের পর হল ভুরিভোজ।
কী না ছিল সেই মেনুতে! ভাত, ডাল, শাক, আলু ভাজা থেকে শুরু করে পাঁচ রকমের তরকারি, আলু পোস্ত, চাটনি এবং শেষপাতে দই মিষ্টি। গ্রামের বাসিন্দা অনুপ দাস বলেন, “যত দিন যাচ্ছে, সবুজ ধ্বংস করে গড়ে উঠছে নগর। কিন্তু মানুষের বেঁচে থাকতে সবুজ প্রয়োজন। সেটা বোঝাতেই আমরা গাছের বিয়ের ব্যবস্থা করেছি। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এর আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার মানুষ এই বিয়েতে ভুরিভোজ করেছেন”।
মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন জানিয়েছেন, “এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে অভিনব। এর ফলে মানুষ গাছ কাটার আগে দশ বার ভাববে”। গোরাচাঁদ দত্ত প্রশংসা করেছেন গ্রামবাসীদের উদ্যোগকে। তাঁর মতে, ‘‘খুব ভাল ভাবনা। এই বিয়ে মানুষকে সচেতন করবেই। এমন অভিনব বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পেরে ভাল লাগছে। আমার কাছে এই বিয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে”।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন