ইন্স্যুরেন্সের নামে গ্রামবাসীর কাছ থেকে নেওয়া প্রায় ২০ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে চট্টগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দীপক চন্দ্র দে (৬০) নামে হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের এক নেতা।

পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পাক্কা মসজিদ এলাকার একটি ভাড়াঘর থেকে দীপকের লাশ উদ্ধার করেছে। দীপক উপজেলা মহাদেবপুর এলাকার (৪নং ওয়ার্ড) রামকুমার মহাজনের ছেলে।

এর আগে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা দীপক চন্দ্রকে পেয়ে এলাকাবাসী সোমবার পাওনা আদায়ের জন্য একটি ঘরে আটক করে রাখে। তিনি ঘরেই দীপক নিজের পরিধেয় প্যান্টের বেল্ট গলায় লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানায়।

ঘটনাস্থল থেকে সীতাকুণ্ড থানার এস আই আশরাফুল আলম বলেন, এলাকার লোকজনের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে দুপুরে ঘোড়ামারা পাক্কা মসজিদ এলাকার আবু তাহেরের ভাড়াঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দীপকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাহেরা বেগম নামে এক নারীকে থানায় নেওয়া হয়েছে। তার মাধ্যমেই দীপক স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করত।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এস আই আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, দীপক সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানে মাঠপর্যায়ে কাজ করতেন। তিনি ঘোড়ামারা এলাকার অসংখ্য নারী-পুরুষের কাছ থেকে ইন্স্যুরেন্স করে দেওয়ার কথা বলে প্রায় ২০/২৫ লাখ টাকা নিয়ে যান। কিন্তু এসব টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা দেননি। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে বেশ কিছু দিন ধরে পালাতক ছিলেন দীপক। সোমবার তাকে পেয়ে এলাকার লোকজন ঘরে আটক করে রাখে এবং রাতের কোনো এক সময় তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেন।

তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত করছি। দীপকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হামসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাওনাদার মহিলা জানান, ইন্স্যুরেন্স করার কথা বলে দ্বিগুণ তিনগুণ লাভের লোভ দেখিয়ে তাহেরা বেগমের কথায় আমরা দীপক বাবুকে টাকা জমা দিই। আমরা কাছ থেকে নিয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এভাবে প্রায় ৫০/৬০ ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে গেলেও আমরা সীতাকুণ্ডের অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাদের নামে কোনো টাকা জমা হয়নি। সোমবার তাকে লোকজন আটক করে তার অভিভাবকদের খবর পাঠালেও তারা জিম্মায় নিতে আসেনি। তার স্ত্রী এবং ছেলেকে ফোন করলেও তারা জানায় তারা এসব ঝামেলায় নেই।

পুলিশ জানিয়েছে, দীপক হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠনের সীতাকুণ্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া উদীচী নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের এক সময় সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।